কানাইলাল বিদ্যামন্দির |
স্থাপিত ১৮৬২। ছাত্র ২০০০।
শিক্ষক ৬২ জন। পার্শ্বশিক্ষক ৩ জন। অশিক্ষক কর্মচারী ৫ জন।
গ্রন্থাগারিক ১ জন। কম্পিউটার শিক্ষক ৩ জন। |
|
|
অনন্তকুমার মুখোপাধ্যায়
(প্রধান শিক্ষক) |
|
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে ভূমিকা অবিসংবাদিত |
কানাইলাল বিদ্যামন্দির যার আগে নাম ছিল দ্যুপ্লে কলেজ যার প্রথম নাম ছিল সেন্ট মেরিজ ইনস্টিটিউশন প্রতিষ্ঠা করেন ফাদার ম্যাগলয়ার বার্থেট ১৮৬২ সালে এবং ১৮৭৫ সালে স্থাপন করেন চার্চ অব দ্য সেক্রেড হার্ট লটারি ও চাঁদার টাকায়। সেন্ট মেরিজে প্রথমে শুধু ফরাসি পড়ানো হত। পরে ফাদার ফ্রিচ এখানে ইংরেজি শিক্ষা প্রবর্তনে আগ্রহী হন। পুদুচেরি কর্তৃপক্ষ ১৮৭২ সালে সেন্ট মেরিজে ইংরেজি শিক্ষার প্রবর্তন করেন। পরে এটি পরিণত হয়েছে দ্যুপ্লে কলেজে। ইংরেজি শিক্ষার পাশ-সার্টিফিকেট প্রদান বিষয়ে ফরাসি কর্তৃপক্ষ ইংরেজ সরকারের সঙ্গে লিখিত ব্যবস্থা করেন। ১৮৭৮ মতান্তরে ১৮৮৩ সালে মাত্র দু’টি ছাত্র এন্ট্রাস পরীক্ষা দেন এবং দু’জনেই দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ইংরেজি শিক্ষার প্রসার যাতে না ঘটে তার জন্য মঁসিয়ে ভালমারি ফরাসি উপনিবেশে ইংরেজি শিক্ষা তুলে দেন। চন্দননগর ও মাহে ছাড়া। মিশনারি আমলের অবসান হয়। শুরু হয় ফরাসি সরকারের আমল। এই আমলের প্রথম অধ্যক্ষ মঁসিয়ে ওয়াই ফেতেনি (১৮৮৭) প্রতিষ্ঠানটিকে এফ এ (ফ্রেস আর্টস) স্তরে উন্নীত করেন ও বিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তন করে ১৯০১ সালে হয় সেন্ট মেরিজ থেকে কলেজ দ্যুপ্লে। ১৮৯১ থেকে ১৯৩৮ পর্যন্ত এই কলেজটি পরিচালনা করেন প্রবাদপুরুষ চারুচন্দ্র রায়। যাঁর সান্নিধ্যে এসে আমাদের প্রাক্তন ছাত্র মৃত্যুঞ্জয়ী কানাইলাল দত্ত যাঁর নামে স্কুলের বর্তমান নামকরণ ফাঁসির মঞ্চে প্রাণ দেন দেশদ্রোহী নরেন গোঁসাইকে হত্যা করেন। চারুচন্দ্র গ্রেফতার হন আলিপুর বোমা মামলায়। পুদুচেরির কর্তৃপক্ষ চন্দননগরের কলেজ দ্যুপ্লে-র কলেজ বিভাগটি তুলে দেন। ১৯০৮ সালে ছাত্রাভাব, আর্থিক অনটন ও সরকারি কারণ দেখিয়ে পরে চারুচন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে শিক্ষকবন্ধু হরিহর শেঠ ও প্রাক্তন মনীষী নারায়ণ চন্দ্র দে-র ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় স্বতন্ত্র স্থানে দ্যুপ্লে-র ইংরেজি বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট আর্টস ও সায়েন্সের ক্লাস পুনঃপ্রবর্তন হয় ১৯৩১ সালে। তাই পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা অধিকারের পরিচালনায় চন্দননগর কলেজ (ফার্স্ট গ্রেড কলেজ), কলেজ দ্যুপ্লে নামে যা সুবিদিত, তাই আজকের এই ১৫০ বছরের কানাইলাল বিদ্যামন্দির ইংরেজি ও ফরাসি বিভাগ। স্বাধীন চন্দনগরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন পুরুষসিংহ চারুচন্দ্র রায়যিনি তৈরি করেছিলেন কানাইলাল দত্ত, শ্রীশচন্দ্র ঘোষ, রাসবিহারী বসু এবং অসংখ্য বিপ্লবীকে। তাই চন্দননগরের ইতিহাস একদিকে কৃতী ছাত্রদের শিক্ষার ইতিহাসজ্ঞানশরণ চক্রবর্তী প্রথম পিআরএস অব চন্দননগর, জিতেন্দ্রনাথ ভড়, হৃষীকেশ রক্ষিত, তারাপ্রসাদ দাস, শশাঙ্কশেখর বড়াল প্রমুখ।
সবশেষে বলি, কানাইলাল বিদ্যামন্দির ভারতের ইতিহাসে এক জীবন্ত দলিল। আজ কানাইলাল বিদ্যামন্দিরের যে অডিটোরিয়াম আছে তা ভগ্নপ্রায়। ফরাসি সাম্রাজ্যবাদের বনিয়াদ, যা আজ দেড় শত বৎসরের জীবন্ত স্বাক্ষর, তা আজ নষ্ট হতে চলেছে। আমরা দাবি করছি ‘হেরিটেজ বিল্ডিং’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে এর সংস্কার সাধন করা হোক। |
আমার চোখে
তমোজিৎ সাধুখাঁ
(ক্লাস টেন-এর ফার্স্ট বয়) |
|
|
আমি পঞ্চম শ্রেণি থেকে কানাইলাল বিদ্যামন্দিরের ছাত্র। এই বিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা পঠন-পাঠনে পঞ্চম শ্রেণি থেকেই আমাকে সমস্ত রকম সাহায্য করেছেন। বিদ্যালয়ের আমার সহপাঠীরাও আমায় যথেষ্ট সাহায্য করে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা শ্রেণিকক্ষে প্রতিটি বিষয়ে যথেষ্ট মনোযোগ ও গুরুত্ব সহকারে পড়ান। প্রতিটি ছাত্রের প্রতিই তাঁরা সমান গুরুত্ব দেন। বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য তাঁরা বিশেষ শিক্ষাদান করেন এবং পরীক্ষগুলিতে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য উৎসাহ দেন। এই বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারও পঠন-পাঠনের সহায়ক। বিদ্যালয়ের পরিবেশ যথেষ্ট ভাবে পড়াশোনার অনুকূল। বিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি, অডিটোরিয়াম, হলঘর, খেলার মাঠ ইত্যাদি সবই পর্যাপ্ত। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী এবং অন্যান্য কর্মচারী সকলের সমন্বয়ে এই বিদ্যালয় উন্নতির শিখরে গমন করছে। বিদ্যালয়ের সকলের আশীর্বাদ নিয়ে আমি মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করে বিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করতে চাই। |