নিরাপত্তার বেড়াজালকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে চিড়ায়াখানায় ঢুকে বাঘ মেরে গেল চোরাশিকারিরা। গত কাল রাতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেই চোরাশিকারিরা চিড়িয়াখানার মধ্যে ঢুকে আসে। একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে খুব কাছ থেকে পর পর তিনটি গুলি করে হত্যা করে। এবং তারপরে যেমন নির্বিঘ্নে তারা চিড়িয়াখানায় ঢুকেছিল, তেমনই বেরিয়েও যায়। ঘটনার গতিপ্রকৃতি দেখে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এর সঙ্গে চিড়িয়াখানার ভিতরের লোক জড়িয়ে আছে।
রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল তথা বন ও পরিবেশ দফতরের প্রধান সচিব বি এস সাজওয়ান জানান, গত কাল রাত ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটে। গুলির শব্দ পেয়ে রক্ষীরা তল্লাশিতে নামে। দেখা যায়, অনি নামে এক বাঘিনী রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অবশ্য তার চামড়া ও দেহাংশ অক্ষত ছিল। উপ-বন সংরক্ষক পি রিংগু জানান, ২০০৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর এই চিড়িয়াখানাতেই অনির জন্ম। আজ ময়না তদন্তে দেখা গিয়েছে, তার মাথায় তিনটি বুলেটের ক্ষত রয়েছে। পুলিশ ও ডাক্তারদের অনুমান, ছোট বোরের রাইফেল ব্যবহার করে, বাঘিনীটিকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে। বাঘের তলপেটের নীচে ধারাল অস্ত্রের আঘাত থাকলেও, দেহাংশ কেটে নিয়ে যাওয়া হয়নি। বনকর্তাদের মতে, হয়তো পুরুষ বাঘ মারতে গিয়ে ভুলবশত বাঘিনী মেরে ফেলেছিল শিকারিরা। পুরুষ বাঘ মেরে তার পুরুষাঙ্গ চড়া দামে বিকোয় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারে। এর আগে, ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, এই চিড়িয়াখানায় তিনটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ও একটি চিতাবাঘকে বিষ দিয়ে মারা হয়েছিল। তদন্তে জানা গিয়েছিল, রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ রক্ষীদের পোস্ট বদলের সময় জিঙ্ক-সালফেট মেশানো মাংস বাঘের খাঁচায় দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনায় দোষীদের এখনও চিহ্নিত করা বা ধরা যায়নি।
গত রাতে একই জায়গায়, বাঘিনীকে গুলি করে মারা হল। কী ভাবে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চিড়িয়াখানায় ঢুকল শিকারিরা, কেনই বা বাঘ মারল, পালালোই বা কোন পথে-তা জানতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ ও বনবিভাগ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাত পাহারার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের আটক করা হয়েছে। সাজওয়ান জানান, অপরাধ বা গাফিলতি প্রমাণ হলে রেহাই দেওয়া হবে না। যেহেতু বাঘটির অঙ্গহানি হয়নি, তাই হত্যার কারণ সম্পর্কেও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। |