পাচারকারী সন্দেহে এক ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে বিএসএফের বিরুদ্ধে। সোমবার ভোরে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া থানার হাফতিয়াগছ এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম বুধু মহম্মদ (৩০)। বাড়ি চোপড়া থানার বাংলাদেশ সীমান্তের বড়বিল্লা এলাকায়। মৃতের পরিবারের লোকজনদের অভিযোগ, এ দিন রাতে বাড়ির বাইরে শৌচাগারে গেলে বিএসএফের এক টহলদারি জওয়ান তাঁকে ডাকেন। তিনি ঘরে ঢুকে পড়লে ওই জওয়ান বাড়িতে ঢুকে তাঁকে জবরদস্তি নিয়ে যান বলে অভিযোগ। বাড়ির লোকজন লিখিত ভাবে চোপড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করে জানিয়েছেন, ওই সীমান্ত চৌকিতে নিয়ে মারধরের পরে বুধু অসুস্থ হলে তাঁকে ইসলামপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু, সেখানে পৌঁছনোর পরে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। বিএসএফের তরফে অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিএসএফের দাবি, “ওই ব্যক্তি চোরাচালানে যুক্ত বলে বহু দিন ধরে অভিযোগ রয়েছে। সোমবার ভোরে গরু পাচারের চেষ্টা করলে অশোক কুমার নামে এক জওয়ান তাঁকে ধরতে যান। কিন্তু, বুধু অশোক কুমারকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করলে তাঁর মাথায় চোট লাগে। এর পরে বুধু ছুটে পালাতে থাকেন। কিছুক্ষণ পরে ধরা পড়লে ধস্তাধস্তি করতে থাকেন। তার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ইসলামপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।” ইসলামপুরের হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক শান্তনু দত্ত জানান, ওই ব্যক্তির মৃত্যু হওয়ায় তাঁকে পরীক্ষা করা হয়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই সব স্পষ্ট হবে বলে শান্তনুবাবু জানান। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, বিএসএফ এর ক্যাম্প থেকে বুধু মহম্মদের বাড়ি ৫০ মিটার দূরে। হাফতিয়াগছের পঞ্চায়েত প্রধান নীরেন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “এলাকায় বিএসএফ বিনা কারণে কাউকে ধরে না। অন্তত আমি কখনও শুনিনি। বুধু মহম্মদকে চিনতাম না। বিশদে খোঁজখবর নিচ্ছি।” তবে চোপড়ার প্রাক্তন বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী আনোয়ারুল হক বলেন, “ওই পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আগেও শুনেছি। তবে ওই দিন ভোরে কী হয়েছিল জানি না।” বুধুর খুড়তুতো ভাই মনসুর আলম জানান, তাঁর ভাই ছোট চা বাগানে পাতা তোলার কাজ করতেন। কখনও দিনমজুরিও করতেন বুধু। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী ও দুই বছরের ছেলে ও ৫ বছর বয়সী মেয়ে রয়েছে। |