পুরসভার টাকা নয়ছয় এবং আত্মসাতের অভিযোগ উঠলেও পার্কিং ফি সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা ওই ঠিকাদারদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে এখনও কেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না এই প্রশ্ন উঠল মেয়র পারিষদের বৈঠকে। সোমবার শিলিগুড়ি পুরসভায় ওই বৈঠকে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মেয়র পারিষদদের একাংশ। ২০১১-২০১২ সালে পার্কিংয়ের ফি সংগ্রহের বরাত পাওয়া ঠিকাদারদের একাংশ পুরসভার প্রাপ্য প্রায় ২২ লক্ষ টাকা মেটাননি বলে অভিযোগ ওঠে। নানা টালবাহানার পর গত ১০ সেপ্টেম্বর ১ জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানো হলেও বাকিদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেননি পুর কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত ওই ঠিকাদারদের একাংশ কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠ বলেই তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করার অভিযোগ ওঠে। এ দিন তা নিয়েই মেয়ের পারিষদের বৈঠকে হইচই হয়। পুরসভার ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখতে মেয়র পারিষদদের অধিকাংশই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে পুলিশে অভিযোগ জানাতে মত দেন। মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত অবশ্য মেয়র পারিষদের বৈঠকের ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি। তবে তিনি জানান, পার্কিং ফি সংগ্রহের বরাত পাওয়া ঠিকাদারদের যারা পুরসভার প্রাপ্য টাকা মেটাননি তাদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেবেন। শিলিগুড়ি জংশন স্টেশন লাগোয়া হিলকার্ট রোডে পার্কিং ফি সংগ্রহের ঠিকাদার বাস দাঁড়ানোর জন্যও ফি সংগ্রহ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নিয়ম না থাকলেও জাতীয় সড়কের উপর ২টি জায়গায় পার্কিং ফি সংগ্রহের বরাত দেওয়া নিয়েও পুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রশ্ন ওঠে। এ দিনের বৈঠকে ওই দুটি জায়গায় পার্কিং ফি সংগ্রহের বিষয়টি বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্যান্য সমস্যা নিয়ে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর পুলিশ প্রশাসনকে নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের ৬ টি জায়গায় পার্কিংয়ের বরাত পাওয়া ওই ঠিকাদাররা পুরসভার প্রাপ্য টাকা মেটাননি। অথচ ১ বছরের বেশি সময় ধরে তারা পার্কিং ফি সংগ্রহ করেছেন। তাদের এক জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানো হলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। রাকেশ পাল নামে ওই ব্যক্তি ২ টি জায়গার পার্কিং ফি সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন। তার কাছেই প্রায় ১২ লক্ষ টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। বাকিদের মধ্যে ১জন পুরসভায় যোগযোগ করে জানান তাঁর যে টাকা বকেয়া রয়েছে বলা হচ্ছে তা আরও কম হবে। তিনি তা মিটিয়ে দিতে চান। তবে এর পর ২সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ওই ব্যক্তি আর কিছু জানাননি। অথচ পুর কর্তৃপক্ষ কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না তা নিয়ে বিরোধীরা তো বটেই সহযোগী তৃণমূলের কাউন্সিলর, মেয়র পারিষদরাও প্রশ্ন তোলেন।
অন্য দিকে এ দিন মেয়র পারিষদের বৈঠকে ঠিক হয়েছে পানীয় জলের সংযোগ পেতে বিপিএল তালিকাভুক্ত পুর এলাকার বাসিন্দাদের নির্ধারিত খরচের অর্ধেক দিলেই হবে। পুজোর আগে রাস্তাঘাট সংস্কারের বিষয়টির উপর গুরুত্ব দিতে চান কর্তৃপক্ষ। খানাখন্দে ভরে যাওয়া শহরের অধিকাংশ রাস্তার হাল না ফেরায় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সে কারণে পুজোর আগেই রাস্তা মেরামতের বিষয়টি প্রাধান্য দিতে চান কর্তৃপক্ষ। |