দুর্নীতি এবং নানা রকম অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে ডাকঘরে তালা দিলেন কর্মীরাই। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়ার কেন্দা সাব পোস্টঅফিসে। সরকারি নথিতে এটি বালকডি ডাকঘর বলে উল্লেখ রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পোস্টমাস্টার হরেকৃষ্ণ রাজোয়াড় টাকা তছরুপের দায়ে সাসপেন্ড রয়েছেন। গত ৫ অগস্ট তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর পোস্টমাস্টারের দায়িত্বে আসেন ওই অফিসেরই পোস্টাল অ্যাসিস্ট্যান্ট অচিন্ত্য চক্রবর্তী।
কর্মীদের অভিযোগ, এই অফিসে নথিপত্রে প্রচুর কারচুপি ও টাকা তছরুপের মতো ঘটনা ঘটেছে। তাঁরা গ্রাহকদের দাবি মেটাতে পারছেন না। প্রতিদিন গ্রাহকেরা তাঁদের নানা ভাবে হেনস্থা করছেন। কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে গুরুত্ব না দেওয়ায় জটিলতা বেড়েছে. বাধ্য হয়ে সোমবার তাঁরা তালা দিয়েছেন। ভরতডি গ্রামের পরমানন্দ মাহাতো বলেন, “আমার কিষান বিকাশ পত্র অনেকদিন আগে ম্যাচুরিটি হয়ে গিয়েছে। অথচ টাকা পাচ্ছি না। গত কয়েকদিন ধরে এরা আমাকে ঘোরাচ্ছেন।” একই অভিযোগ করেছেন, হরিহরপুরের বালিকা প্রামাণিক। মাকড়কা গ্রামের সাত্তার আনসারি বলেন, “পাস বইয়ের ‘নমিনির’ নাম বদল করাব বলে মাকে নিয়ে কদিন ধরে কেবল আসা যাওয়া করছি। কোনও কাজ হচ্ছে না।” |
অচিন্ত্যবাবুর যুক্তি, “গত ৬ আগস্ট থেকে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমি দায়িত্বে রয়েছি। কিন্ত অফিসে নথির গোলমালের জেরে গ্রাহকদের দাবি মেটাতে পারছি না। তা ছাড়া, আমাকে বলা হয়েছিল এক সপ্তাহের মতো দায়িত্ব নিতে। কিন্তু প্রায় দেড়মাস কেটে যাওয়া সত্বেও আমাকেই কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে।”
অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বালকডি সাব পোস্ট অফিসের অধীনে ২৩টি শাখা ডাকঘর রয়েছে। ওই সব ডাকঘরের পোস্ট মাস্টাররা বলেন, “দেড়মাস ধরে কার্যত কোন কাজ হচ্ছে না। সব বিষয়ে জোড়াতালি দিয়ে কাজ হচ্ছে।” তাঁদের অভিযোগ, “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দেননি। হরেকৃষ্ণ রাজোয়াড়কে সাসপেন্ড করার সময়ে বলা হয়েছিল, মূল ডাকঘর থেকে আপাতত টাকা পাঠিয়ে সমস্যাটিকে সামাল দেওয়া হবে। কিন্তু তা হয়নি।”
জেলা পোস্টাল সুপারিন্টেডেন্ট বিধান আচার্য বলেন, “তদন্তে হরেকৃষ্ণবাবুর বিরুদ্ধে টাকা তছরুপ প্রমাণিত হয়েছে। একটি নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে ওই টাকা ফেরৎ দিতে বলা হয়েছে। বালকডি পোস্ট অফিসকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি এই অভিযোগ ঠিক নয়। ওখানে গ্রাহকদের জন্য কর্মীরা হয়রানি হচ্ছেন।” গ্রাহকেরা যাতে টাকা পান সে জন্য মূল ডাকঘর থেকে কিছু টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে বিধানবাবু আশ্বাস দিয়েছেন। |