পুরুলিয়া জগন্নাথ কিশোর কলেজের তৃণমূল পরিচালিত ছাত্র সংসদের বিরুদ্ধে একযোগে আন্দোলনে নামল এসএফআই এবং ছাত্র পরিষদ। ছাত্র সংসদের দু’টি আসনে উপ-নিবার্চনের দাবিতে ওই দুই ছাত্র সংগঠন সোমবার একসঙ্গে কলেজের গেটে বিক্ষোভ দেখায়। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে পরে অবশ্য কেবল এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
এ দিন কলেজের গেটের কাছে মাইক লাগিয়ে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এসএফআই সদস্য-সমর্থকেরা। এসএফআইয়ের ব্যানারের ঠিক পাশেই নিজেদের ব্যানার লাগিয়ে একই দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ছাত্র পরিষদের সদস্যেরাও। গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি গৌরব সিংহ বলেন, “এই কলেজের ছাত্র সংসদে মোট ৩৬টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে গত নিবার্চনে টিএমসিপি ১৯টি, ছাত্র পরিষদ ১১টি আর আমরা ৬টি আসন পাই। তখন এই কলেজ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালযের অধীনে ছিল। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুসারে ছাত্র সংসদ চালাতে গেলে অর্ধেকের বেশি সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন।”
তাঁর দাবি, এত দিন ঠিক থাকলেও এক মাস আগে টিএমসিপি-র এক নির্বাচিত সদস্য কলেজ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আর ছাত্র সংসদের যিনি সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, তিনিও তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় পাশ করে গিয়েছেন। ফলে এই মূহূর্তে ওই দু’টি আসনে তাঁরা উপ-নিবার্চন দাবি করছেন। কারণ টিএমসিপি এখন আর সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়। এই দাবিতে ছাত্র পরিষদও এ দিন তাঁদের বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে বলে দাবি গৌরবের। জে কে কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এবং ছাত্র পরিষদের নির্বাচিত সদস্য অরিন্দম চক্রবর্তী বলেন, “টিএমসিপি যখন আর সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়, তখন উপ-নিবার্চন হওয়া উচিত। আমরাও এই দাবিতে ইতিমধ্যেই অধ্যক্ষকে স্মারকলিপি দিয়েছি। তিনি কোন সিদ্ধান্ত এখনও আমাদের জানাননি। তাই এ দিন বিক্ষোভ দেখিয়েছি।”
ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি হরেরাম সিংহের কথায়, “আমরা ওদের (এসএফআই) সঙ্গে একযোগে আন্দেলনে নেমেছি, এমন নয়। তবে আমাদের দু’জন ওদের জমায়েত থেকে বক্তব্য রেখেছে। আমিও বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করেছি। কিন্তু, এমতাবস্থায় কী হবে, তা নিয়ে কোনও সদুত্তর পাইনি।” গৌরব বলেন, “আমরাও দু’বার স্মারকলিপি দিয়েছি। কলেজ কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ না করলে আইনি লড়াইয়ের দিকে যাওয়ার পাশাপাশি বৃহত্তর আন্দোলনের পথেও হাঁটব।”
টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সহ সাধারণ সম্পাদক তানজিব মাজাহারের অবশ্য দাবি, “আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিছু বহিরাগত কলেজের পরিবেশ বিঘ্নিত করছে। আমাদের একজন গেলেও সাধারণ সম্পাদক এখনও রয়েছেন। তিনি তো অন্যত্র চলে যাননি।”
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কানাইলাল দত্ত জানান, গোটা বিষয়টি সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে বাখ্যা চাওয়া হয়েছে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নচিকেতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “যে সময় নিবার্চন হয়েছিল, তখন কলেজ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল। ফলে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবার্চন কমিশনের কাছে বাখ্যা চাওয়া হবে। তার পরে কমিশন যা বলবে তাই কলেজকে জানিয়ে দেওয়া হবে।” |