|
|
|
|
প্রতি ব্লকে মিনি ইন্ডোর স্টেডিয়াম, মাল্টিজিমও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
এ বার ব্লক স্তরে ক্রীড়ার উন্নয়নে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রতিটি ব্লকে মিনি ইন্ডোর স্টেডিয়াম, মাল্টিজিম তৈরি করা হবে। ইতিমধ্যে রাজ্যের তরফে এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা পৌঁছেছে জেলায়। জেলা থেকে নির্দেশ গিয়েছে ব্লকে ব্লকে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থ দেবে যুব কল্যাণ দফতর। পরিকল্পনা রূপায়িত হলে গ্রামের ছেলেমেয়েদের খেলাধুলোর প্রতি আরও ঝোঁক বাড়বে বলে মনে করছে ক্রীড়ামহল।
সম্প্রতি জেলার সব বিডিওকে একটি নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) রজতকুমার সাইনি। সেখানেই সরকারের এই পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে। সঙ্গে বলা হয়েছে, যুব কল্যাণ দফতরের ব্লক আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে এবং সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওই প্রস্তাব লিখিত ভাবে যুব কল্যাণ দফতরের জেলা আধিকারিকের কাছে পাঠিয়ে দিতে। সব ব্লকের প্রস্তাব একত্র করে রাজ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রতিটি ব্লকে একটি করে মিনি ইন্ডোর স্টেডিয়াম বা রিক্রিয়েশন কমপ্লেক্স তৈরি হবে। ২-৩টি মাল্টিজিম তৈরি হবে। ২টি করে খেলার মাঠের উন্নতিকরণ করা হবে। মিনি ইন্ডোর স্টেডিয়াম তৈরির ক্ষেত্রে ব্যয় হতে পারে ২০ লক্ষ টাকা। মাল্টিজিমের ক্ষেত্রে ২ লক্ষ টাকা। ইতিমধ্যেই অধিকাংশ বিডিও ব্লক যুব আধিকারিকের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। জঙ্গলমহল এলাকার এক বিডিও বলেন, “এখন অনেকেই শরীরচর্চা করেন। মাল্টিজিম হলে উৎসাহ আরও বাড়বে। আর মিনি ইন্ডোর স্টেডিয়াম তৈরি হলে টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টনের মতো খেলার ক্ষেত্রে ছেলেমেয়েদের উৎসাহ বাড়বে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রতিটি ব্লকে স্টেডিয়াম নেই। অধিকাংশ এলাকায় স্কুল-কলেজের মাঠেই খেলাধুলো করেন স্থানীয় যুবকেরা। মেদিনীপুরের মতো শহরে বড় স্টেডিয়ামও নেই। এক সময় সদর শহরের আশপাশে বড় স্টেডিয়াম তৈরির প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়েছিল। সিএবি’ও উৎসাহ দেখিয়েছিল। তবে, তাতে ছেদ পড়েছে। জেলা জুড়েই প্রতিভাবান খেলোয়াড় রয়েছে। গত বছর পুলিশের উদ্যোগে ‘জঙ্গলমহল কাপ’ হয়েছিল। এই ফুটবল টুর্নামেন্টে নজর কেড়েছিলেন স্থানীয় যুবকেরা। জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, “প্রতিভা রয়েছে। তবে সঠিক প্রশিক্ষণ দরকার। তা হলে হয়তো এঁদের মধ্যে থেকেই ভবিষ্যতের বাইচুং-সুনীল ছেত্রীরা উঠে আসবে।”
শুধু ফুটবল নয়, জেলার নানা প্রান্তে ‘লুকিয়ে’ রয়েছে ক্রিকেট প্রতিভা। ক্রিকেট প্রতিভা অন্বেষণে মেদিনীপুরে শিবির করেছিল সিএবি। যে শিবিরে এসেছিলেন কোচ ডাভ হোয়াটমোর। সেখানেও পশ্চিম মেদিনীপুরের ছেলেরা নজর কেড়েছিল। রয়েছে অ্যাথলিট প্রতিভাও। মেদিনীপুরের মেয়ে সুস্মিতা সিংহ রায় তো এখন দেশের গর্ব। তাঁর বড় হওয়া মেদিনীপুর শহরে। ২০০৮ সালের বেজিং অলিম্পিকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। দু’বার এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে যোগ দিয়েছেন। দু’বারই সফল হয়েছেন। মেদিনীপুরে এক বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে স্পোর্টস কমপ্লেক্স গড়ে উঠেছে। সেখানে বিভিন্ন খেলার প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত রয়েছে। এ বার ব্লকে ব্লকে মিনি ইন্ডোর স্টেডিয়াম, মাল্টিজিম গড়ে উঠলে আরও প্রতিভাবান খেলোয়াড় সামনে আসার সুযোগ পাবেন বলেই মনে করছে ক্রীড়ামহল।
চলতি মাসের মধ্যেই ব্লকের প্রস্তাব জেলায় এসে পৌঁছবে। পরে সেই প্রস্তাব রাজ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সরকারের পরিকল্পনা মতো কাজ কবে শুরু হয়, সেটাই এখন দেখার। ক্রীড়ামহল অবশ্য আশায় বুক বাঁধছে। |
|
|
|
|
|