|
|
|
|
ফেড কাপে আগুনে মেজাজে টিম সুভাষ |
‘পরিবর্তন’ নেই বাগানে |
রতন চক্রবর্তী • শিলিগুড়ি |
মোহনবাগান ২ (সাবিথ, মণীশ)
মহমেডান ১ (সানডে) |
সন্তোষ কাশ্যপের নাম ফেড কাপের পর হতে পারে— পোস্ট-কাশ্যপ।
কলকাতায় সোমবার সন্ধেয় ক্লাব কর্তাদের ঘোষণার পরে ‘অক্সিজেন’ পেলেও মোহন-কোচের টিমের অবশ্য কোনও ‘পরিবর্তন’ নেই। গ্রুপের প্রথম দু’টো ম্যাচে ওডাফা-জুয়েল-নবিদের ছয় ছ’টি বল পোস্টে লেগেছিল। সোমবার মহমেডানের বিরুদ্ধে পেনাল্টি পেয়েও তা পোস্টে মারলেন জুয়েল রাজা। জুয়েলকেই নিজেদের বক্সে ফাউল করেছিলেন মহমেডানের আজিম। মহমেডান ফুটবলাররা রেফারিকে ঘিরে ধরে প্রতিবাদ করলেও কোনও কাজ হয়নি।
পোস্টে লেগে ফেরাটা ‘দুর্ভাগ্য’ এটা মানতে হবেই। কিন্তু তা বলে মহমেডানের বিরুদ্ধেও মোহন-রক্ষণের হাল কেন এমন হবে? ম্যাচের কোনও গুরুত্ব নেই বলে ওডাফা-টোলগে-নবির মতো চোট পাওয়া তারকাদের বিশ্রাম দিয়েছিলেন মোহন-কোচ। তা সত্ত্বেও জুয়েল তাঁর পেনাল্টি নষ্টের অভাব পুষিয়ে দিলেন গোলের একটা ভাল পাস বাড়িয়ে। সাবিথ যা থেকে গোল করলেন। গোল করলেন মণীশ মাথানিও। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে তিন মিনিটের মধ্যে জোড়া গোল হল। অলোক মুখোপাধ্যায়ের মহমেডান কোনও শক্তিশালী প্রতিপক্ষ নয়। তা সত্ত্বেও ২-০ এগিয়ে যাওয়ার পরও মোহনবাগান রক্ষণ কেঁপে গেল। সানডে একটা গোল শোধ করলেন। দু’টো নষ্ট করলেন। না হলে সবুজ-মেরুন জার্সির তিন পয়েন্টের ‘সান্ত্বনা পুরষ্কার’ নিয়েও কলকাতায় ফেরা হত না। আই লিগ ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে। ফেড কাপ যদি আই লিগের দিক নির্দেশ করে তা হলে লিখতেই হচ্ছে, টোলগে-ওডাফা জুটি গোলের পর গোল করে গেলেও তা ধরে রাখার ব্যবস্থা এখনও করে উঠতে পারেননি কাশ্যপ। গত বার যে রোগ ভুগিয়েছিল, সেই রোগে এখনও আক্রান্ত বাগান।
মোহন-কোচ ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, রক্ষণের ফাঁক ঢাকতে আই লিগে ৫-৩-২ ফর্মেশনে যেতে চান। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে না আবার ডিফেন্সিভ ব্লকারের জায়গায় সমস্যা হয়। ডেঙ্গি সারিয়ে ওঠা রাকেশ মাসির হাল কিন্তু খুব খারাপ। ম্যাচের পর হাসতে হাসতে সন্তোষ বললেন, “আমার ব্যাড লাক কেটে গেল। এ বার সবাইকে সুস্থ করে আই লিগে নামব।” |
|
ওডাফা-টোলগে। বাগানের দুই ভরসাই যখন দর্শক। সোমবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস |
গ্রুপের শেষ ম্যাচে রাতে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে মোহনবাগান এবং মহমেডান যখন খেলতে নেমেছিল, তার আগেই অবশ্য ঠিক হয়ে গিয়েছিল কে শেষ চারে যাবে! মোহনবাগান দু’গোল হজম করেছিল এয়ার ইন্ডিয়ার কাছে। মুম্বইয়ের সেই বিমানবাহিনীকেই ধ্বংস করল সুভাষ ভৌমিকের দল। চার-চারটি ‘বোমা’-য়। গডফ্রে পেরিরার দল কোনও প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি বেটোদের সামনে। হেনরি শুরু করেছিলেন। বেটোর দুর্দান্ত ফ্রি কিক শুষে নেয় জুনিয়রদের সব ইচ্ছে। গোয়ার পারিবারিক ক্লাবটির হয়ে গোলসংখ্যা বাড়িয়ে দেন আক্রম ও বিক্রমজিৎ সিংহ। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো ম্যাচের ৬৬ মিনিটে লাল কার্ড দেখে বেরিয়ে যেতে হয় এয়ার ইন্ডিয়া অধিনায়ক মিকি ফার্নান্ডেজকে। বেটোকে ফাউল করেন তিনি। গডফ্রে পেরিরার দল দশ জন হয়ে যাওয়ার পরই শেষ দু’টো গোল হয়।
কিন্তু চার্চিল ব্রাদার্স যা খেলল তা এক কথায় দুর্দান্ত। এখানে যে আটটি দল খেলছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক ফর্মে সুভাষের টিম। বেটো, হেনরির সঙ্গে আসা লেবাননের নতুন দুই ফুটবলার— স্টপার বিলাল আর স্ট্রাইকার আক্রমও দারুণ ভাবে মানিয়ে নিয়েছেন টিমের সঙ্গে। আই লিগে যদি শেষ পর্যন্ত চার বিদেশি খেলার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয় তবে সবচেয়ে বেশি লাভ হয়তো চার্চিলেরই। শেষ চারে চার্চিলকে কাদের সঙ্গে খেলতে হবে তা ঠিক হবে আজ, মঙ্গলবার। ইস্টবেঙ্গল বা স্পোর্টিং ক্লুব যে-ই শেষ চারে যাক, তাদের কিন্তু বড় বাধার সামনে পড়তে হচ্ছেই।
এ দিকে, এ দিন আর্মান্দো কোলাসোর ডেম্পো সেমিফাইনাল খেলতে চলে এল শিলিগুড়িতে। এবং এসেই সমস্যায় পড়ল। বিমানবন্দরে তাঁদের জন্য যে বাস পাঠানো হয়েছিল, তার হাল দেখে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত ডেম্পো কোচ। তাঁর সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয়ে যায় লোকাল ম্যানেজারের। যার জেরে সংগঠকেরা শেষ পর্যন্ত ওই লোকাল ম্যানেজারকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হলেন।
|
মোহনবাগান: শিল্টন, আইবর, নির্মল, ইচে (খেলেম্বা), বিশ্বজিৎ, মণীশ, রাকেশ, ডেনসন (ফানাই), স্নেহাশিস, জুয়েল, সাবিথ (অনিল)। মহমেডান: সোমনাথ, ফুলচাঁদ, ড্যানিয়েল (কিংশুক), আজিম, ধনরাজ, গৌরাঙ্গ, গৌতম, মোক্তার, অসীম, সানডে, আলফ্রেড (শিন)। |
মঙ্গলবার ফেড কাপে
ওএনজিসি : স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়া
(শিলিগুড়ি, দুপুর ৩-০০)
ইস্টবেঙ্গল : কালীঘাট এমএস
(শিলিগুড়ি, দুপুর ৩-০০) |
|
|
|
|
|