|
|
|
|
রাজ্যের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের |
নিজস্ব সংবাদাতা • কলকাতা ও খড়্গপুর |
অনাস্থা সংক্রান্ত বৈঠক নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় খড়্গপুর পুরসভায় পুরপ্রধানকে (তৃণমূলের) কাজ চালাতে বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল রাজ্য পুর দফতর। সেই বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য এই স্থগিতাদেশ দেন। রাজ্য সরকারকে ১৫ দিনের মধ্যে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য জানাতে বলা হয়। সেই সঙ্গে বিচারপতি জানান, পুর-আইন অনুযায়ী পরবর্তী পুরপ্রধান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত পুরসভার কাজ চালিয়ে যাবেন উপ-পুরপ্রধান।
৩৫ আসনের খড়্গপুর পুরসভায় তৃণমূলের ১৫, কংগ্রেসের ১৪, বামফ্রন্টের ৪, বিজেপি-র ১ এবং ১ জন নির্দল কাউন্সিলর রয়েছেন। ২০১০-এর জুনে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়েই বোর্ড গড়ে তৃণমূল। এ বছর জানুয়ারিতে কংগ্রেস সমর্থন প্রত্যাহার করে। তৃণমূল পরিচালিত পুর-বোর্ডের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত ১৪ অগস্ট অনাস্থা প্রস্তাব আনে কংগ্রেস। সেই প্রস্তাব নিয়ে বৈঠক ছিল গত ২৭ অগস্ট।
কংগ্রেস কাউন্সিলরদের তরফে আইনজীবী অনন্ত সাউয়ের দাবি, “অনাস্থা নিয়ে ভোটাভুটিতে বাম-সদস্যেরা গরহাজির ছিলেন। উপস্থিত ৩১ জনের মধ্যে কংগ্রেসের পক্ষে যায় ১৬টি ভোট। ফলে, তৃণমূলের পুরপ্রধান হেরে যান।” কারণ ব্যাখ্যা না করলেও তৃণমূলের তরফে ওই বৈঠক ‘অবৈধ’ বলে দাবি করা হয়। এই পরিস্থিতিতে প্রায় এক সপ্তাহ পরে, ৫ সেপ্টেম্বর রাজ্য পুর-দফতর একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, অনাস্থা সংক্রান্ত বৈঠকের বিষয়টি ‘লিগাল সেল’-এর বিবেচনাধীন। তারা যতক্ষণ না মতামত দিচ্ছে, ততক্ষণ তৃণমূলের চেয়ারম্যান জহরলাল পাল-ই কাজকর্ম চালাবেন। এই বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতেই হাইকোর্টে মামলা করে কংগ্রেস। আদালতে কংগ্রেসের পক্ষে আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ বলেন, “খড়গপুর পুরসভায় ক্ষমতা হারানোর পরেই রাজ্য এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, যে বৈঠকে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে, তা সরকার খারিজ করে দিচ্ছে। অথচ পুর-আইনে বলা রয়েছে, পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে ভোটাভুটির মাধ্যমে অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পরে তা সরকার খারিজ কতে পারে না। সেখানে বোর্ডই শেষ কথা বলবে। ভোটাভুটিতে পরাজয়ের পরে আগের পুরপ্রধান আর কোনও ভাবেই কাজ করতে পারেন না।” বিচারপতি বলেন, “পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে যা হয়েছে, তা সরকারি নির্দেশে খারিজ করা যায় না।” হাইকোর্টের এই রায় প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি খড়্গপুরের পুরপ্রধান তৃণমূলের জহরলাল পাল। যদিও মেদিনীপুরে দলীয় কর্মসূচিতে গিয়ে তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “ঠিক কী হয়েছে, জানি না। খোঁজ নিচ্ছি। তবে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করাই যায়।” প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা বর্তমান কংগ্রেস কাউন্সিলর রবিশঙ্কর পাণ্ডের মন্তব্য, “রাজ্য সরকারেরই মুখ পুড়ল।” |
|
|
|
|
|