নিজস্ব সংবাদদাতা • রামপুরহাট |
জুয়া খেলায় বাধা দিয়েছিলেন স্ত্রী। তার জেরে স্ত্রীকে খুন করে বেপাত্তা হয়েছিলেন স্বামী। এক বছর পর পুলিশের জালে ধরা পড়েছিলেন সেই ঘাতক স্বামী। সোমবার রামপুরহাট ফাস্ট ট্র্যাক দ্বিতীয় আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক স্ত্রীকে খুনের দায়ে অভিযুক্ত স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিলেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী উৎপল মুখোপাধ্যায় বলেন, “পেশায় টিনের টোকা, ড্রাম তৈরির মিস্ত্রি রমজান শেখকে স্ত্রী হত্যার দায়ে বিচারক কুমকুম সিংহ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।”
জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানার বলাখালি গ্রামের রমজান শেখের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল নলহাটির নামোপাড়ার মেহেবানু বিবির। কর্মসূত্রে রমজান ঘরজামাই রূপে নলহাটি নামোপাড়াতেই থাকতেন। তাঁদের ছেলেমেয়েরা থাকত নলহাটির ডিহা গ্রামে দিদার কাছে। রমজানের মদ ও জুয়া খেলার নেশা ছিল। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীতে প্রায়ই ঝগড়া লাগত বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
২০১০ সালের ২৫ অগস্ট সকালে এক প্রতিবেশী গন্ধ পেয়ে রমজানের বাড়ি থেকে মেহেবানুর পচাগলা মৃতদেহ শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়। পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, ২২ অগস্ট সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ এলাকার একটি জায়গায় রমজান জুয়া খেলতে বসেছিল। মেহেবানু খবর পেয়ে তাকে বাধা দিতে যান। তখন রমজান ক্রুদ্ধ হয়ে স্ত্রীকে মারতে মারতে বাড়ি নিয়ে যায় বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি ছিল, ওই দিনের পর থেকে রমজানকে আর এলাকায় দেখা যায়নি। স্ত্রীর মত্যুর পর বেপাত্তা হয়ে যাওয়ায় রমজানের উপর পুলিশের সন্দেহ আরও বাড়ে। মামলার তদন্তকারী অফিসার সমীর দত্ত রাজ্যের বিভিন্ন থানায় রমজানের খোঁজে হুলিয়া জারি করেন। ঠিক এক বছর পর বর্ধমান জিআরপির হাতে ধরা পড়ে রমজান। পুলিশ গ্রেফতার করে রমজানকে। তার আগে অবশ্য পলাতক দেখিয়ে রমজানের বিরুদ্ধে মেহেবানু-খুনে চার্জশিট দাখিল করেছিল পুলিশ। |