তিন দশকের আবেদনে মিলল দু’টি জলপ্রকল্প
মস্যাটা প্রায় তিন দশকের। শুধু গরম নয়, শীতকালেও হাহাকার লেগে থাকে। ভোট এলেই প্রচারে বিরোধীরা এ নিয়ে সরব হয়। ক্ষমতাসীন দল আশ্বাস দেয়, এ বার জিতলেই সমস্যা মেটানো হবে। এত দিন ধরে অবশ্য কাজের কাজ কিছুই হয়নি। দীর্ঘ দিন ধরে পানীয় জলের এই সমস্যা নিয়ে প্রশাসনের নানা স্তরে দরবার করেছেন অন্ডাল ও রানিগঞ্জের বাসিন্দারা।
এলাকাবাসীর তদ্বিরে অবশেষে ঘুম ভেঙেছে প্রশাসনের। উখড়া ও রতিবাটি এলাকায় দু’টি জল প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য সরকার। সরকারের পাশাপাশি প্রকল্প রূপায়ণের ব্যাপারে প্রয়োজনে এডিডিএ অর্থ সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন সংস্থার চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দুই প্রকল্পের জন্য প্রাথমিক কাজকর্মও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর।
প্রায় ত্রিশ বছর ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা তীব্র জল সঙ্কটে ভুগছেন। তাঁদের অভিযোগ, কল থাকলেও জল মেলে না অধিকাংশ সময়েই। উখড়া বণিকসভার সভাপতি মহাদেব দত্ত অভিযোগ করেন, পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে এলাকার মানুষজন গভীর নলকূপ তৈরি করছেন। কিন্তু ভূগর্ভস্থ জলের স্তরও ক্রমশ নীচে নেমে যাচ্ছে। সেই জলও আর মিলছে না। কুয়োর জলস্তরও অনেক নীচে নেমে গিয়েছে। এই অবস্থায় এলাকার বাসিন্দাদের কয়েক কিলোমিটার পথ হেঁটে জল বয়ে আনতে হয়। এ নিয়ে অনেক বার প্রশাসনের কাছে আবেদন-নিবেদন, ক্ষোভ-বিক্ষোভ হয়েছে। কিন্তু বিশেষ ফল মেলেনি। গত বিধানসভা ভোটের আগে প্রচারে এই দুই এলাকায় জলের সমস্যাই রাজনৈতিক দলগুলির কাছে মূল বিষয় ছিল। কয়েক মাস আগে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা এই সমস্যা মেটাতে এডিডিএ-র কাছে তদ্বির করেন।
এডিডিএ সূত্রে জানা যায়, সংস্থার চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করেন। তাপসবাবু বলেন, “প্রকল্প দু’টি রূপায়ণের জন্য অর্থমন্ত্রী প্রয়োজনীয় অর্থ অনুমোদন দিয়েছেন। প্রয়োজনে এডিডিএ-র তরফেও সাহায্য করা হবে।” তাপসবাবু জানান, উখড়ার জল প্রকল্পটির জন্য প্রায় ১৭ কোটি এবং রতিবাটির প্রকল্পটির জন্য প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয় হবে। চলতি বছরের শেষ দিকে প্রকল্প দু’টির দরপত্র ডাকা হবে।
নতুন এই দু’টি জল প্রকল্পের অনুমোদন আসার কথা জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আসানসোল ডিভিশনের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার সুনীলবরণ মণ্ডল। সুনীলবাবু বলেন, “রাজ্য সরকারের তরফে প্রকল্প দু’টি গড়ার নির্দেশ পেয়েছি। প্রাথমিক কাজকর্ম শুরু হয়েছে।” জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা যায়, এখন দুই এলাকায় হিরাপুরের কালাঝরিয়া প্রকল্প থেকে জল সরবরাহ করা হয়। নতুন প্রকল্প তৈরি হলে কালাঝড়িয়ার বদলে অজয় এবং দমোদর থেকে পাম্পের সাহায্যে জল তুলে সরবরাহ করা হবে। উখড়ার জল প্রকল্পটির জন্য পাণ্ডবেশ্বর সংলগ্ন রিভারসাইড এলাকায় সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে জল তোলা হবে। নতুন কয়েকটি জলাধার গড়া হবে। এখন যেহেতু কালাঝড়িয়া প্রকল্পের জল সরবরাহের জন্য পাইপলাইন আছে তাই নতুন করে পাইপলাইন তৈরি করতে বিশেষ দেরি হবে না। রানিগঞ্জের রতিবাটি এলাকায় দামোদরের পাড়ে সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হবে। সেখানে জায়গা বাছাইয়ের কাজ চলছে। দু’বছরের মধ্যে প্রকল্পগুলি রূপায়ণ হয়ে যাবে বলে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। দীর্ঘদিনের সমস্যা মেটার ব্যাপারে আশার আলো তৈরি হওয়ায় খুশি উখড়া ও রতিবাটি এলাকার বাসিন্দারা। প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে জল না মেলার আগে অবশ্য স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে তাঁরা নারাজ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.