কৃষি সমবায় সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-সিপিএম গোলমালের জেরে সিপিএমের জেলা কমিটির এক সদস্য জখমের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার নারই এলাকায়। জখম সিপিএম নেতার নাম অচিন্ত্য চক্রবর্তী। লাঠির আঘাতে তাঁর মাথা ফেটে যায়। গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে তাঁকে মালদহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তৃণমুলের বিরুদ্ধে নেতার উপরে হামলার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে নারই এলাকায় রাজ্য সড়ক অবরোধে নামে সিপিএম। পুলিশ গেলে বিক্ষোভকারীরা ইট ও পাথরের টুকরো ছুড়তে থাকে। ইটের আঘাতে এক পুলিশ কর্মী এবং সংবাদমাধ্যমের এক কর্মী জখম হন। পুলিশের গাড়ির কাচ ভাঙে। এরপর পুলিশ লাঠি চালিয়ে অবরোধকারীদের হটিয়ে দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৫ সিপিএম সমর্থককে গ্রেফতার করেছে। বিক্ষোভকারী সিপিএমের কর্মী সমর্থকদের ছোড়া ইটের আঘাতে জখম হন এক পুলিশ কর্মী। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। গঙ্গারামপুরের দমদমা কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতির ৪৭টি আসনের জন্য এ দিন সকাল ৯টা থেকে এলাকার ৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার একঘণ্টা আগে দুপুর ২টা নাগাদ নারই এলাকার একটি কেন্দ্রে পরস্পরের বিরুদ্ধে দলীয় সমর্থকদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিবাদে জড়ায় সিপিএম ও তৃণমূল। সেখান থেকেই গণ্ডগোলের সূত্রপাত। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মানবেশ চৌধুরী অভিযোগ করেন, নারই কেন্দ্রে তৃণমূল দলীয় সমর্থকদের ভোটদানে বাধা দেয়। জেলা কমিটির সদস্য অচিন্ত্যবাবু সেখানে গিয়ে আপত্তি জানালে তৃণমূলের কর্মীরা লাঠি নিয়ে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেয়। এর আগে মনোনয়নপত্র পেশ করার সময়ও তৃণমূল হামলা চালিয়েছিল। ওই ঘটনাতেও পুলিশের ভূমিকা ঠিক ছিল না। ঘটনার প্রতিবাদ জানালে পুলিশ লাঠি চালিয়েছে। লাঠির ঘায়ে ২০ জন দলীয় কর্মী সমর্থক আহত হন বলে মানবেশবাবুর দাবি। তৃণমুলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, “কলকাতায় আছি। তবে হামলার ঘটনায় তৃণমূলের কেউ জড়িত নন। ভোট দেওয়া নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে সিপিএম গোলমালে জড়িয়ে পড়লে ঘটনাটি ঘটে।” জেলা যুব তৃণমুলের সাধারণ সম্পাদক রতন ঘোষের দাবি, ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের যোগ নেই। স্থানীয় লোকেরা ওই সিপিএম নেতাকে মারধর করেন। পরে পুলিশের উপর হামলা চালায় সিপিএম। তৃণমুলের বিরুদ্ধে নেতার উপরে হামলার প্রতিবাদে নারই এলাকায় রাজ্য সড়ক অবরোধে নামে সিপিএম। সিপিএমের প্রাক্তন মন্ত্রী নারায়ণ বিশ্বাস ও জেলা সম্পাদক মানবেশ চৌধুরীর নেতৃত্বে শতাধিক কর্মী সমর্থক রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বালুরঘাট-গঙ্গারামপুর রাজ্য সড়ক যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এসডিপিওর নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে অবরোধকারী সিপিএম নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে বিক্ষোভকারীরা ইট-পাথরের টুকরো ছুড়তে থাকে। ইটের আঘাতে এক পুলিশ কর্মী এবং সংবাদমাধ্যমের এক কর্মী জখম হন। পুলিশের গাড়ির কাচ ভাঙে। এসডিপিও নারায়ণ মজুমদার বলেন, “ভোট দেওয়া নিয়ে দু’দলের মতানৈক্যে উত্তেজনা ছড়ায়। এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সিপিএমের নেতৃত্বে শতাধিক লোক রাজ্য সড়ক অবরোধ করেছেন। নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলার সময় আমাদের লক্ষ করে ইটবৃষ্টি হতে থাকে। হালকা লাঠি চালিয়ে অবরোধ তুলে দেওয়া হয়।’’ |