গঙ্গাজলের তোড়ে রবিবার দুপুরে মানিকচকের ভুতনির হীরানন্দপুরের কালুটোলার কাছে রিং বাঁধের ৫০ মিটার এলাকা ভেঙে গিয়েছে। পাশাপাশি গঙ্গার জলস্তর বাড়তে থাকায় ওই ভেঙে যাওয়া বাঁধের অংশ দিয়ে গঙ্গার জল ভুতনির বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় হীরানন্দপুর ও আশেপাশে এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গঙ্গার জলস্তর চরম বিপদসীমার নীচে থাকায় এখনও গঙ্গার জল ভূতনির কোনও এলাকায় ঢুকতে পারেনি। নিবার্চনী এলাকায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর শুনে উদ্ধিগ্ন রাজ্যের নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র ফরাক্কা ব্যারেজ প্রজেক্টের জেনারেল ম্যানেজারকে দ্রুত ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ মেরামত করার নির্দেশ দিয়েছেন। মানিকচকের বিধায়ক তথা রাজ্যের নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “বাঁধ ভাঙার খবর পাওয়ার পর ফরাক্কা ব্যারেজ প্রজেক্টের জেনারেল ম্যানেজারকে দ্রুত বাঁধ মেরামত করাতে বলেছি। ঠিকমতো কাজ হলে এভাবে বাঁধ ভাঙত না। যে ভাবেই হোক গঙ্গার জলস্ফীতি থেকে ভুতনির চরের মানুষদের রক্ষা করতে হবে।” রবিবার গঙ্গার জলস্তর বিপদ সীমার (২৫ মিটার) ১৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। সেচ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, গঙ্গার জলস্তর চরম বিপদসীমা ২৫.৩০ মিটারে পৌঁছলেই ভুতনির বিস্তীর্ণ এলাকা গঙ্গার জলে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেচ দফতরের নিবার্হী বাস্তুকার অমরেশ নাথ সিংহ বলেন, “ভুতনির বাঁধ মেরামতের দায়িত্বে ফরাক্কা ব্যারেজ প্রজেক্ট কর্তৃপক্ষ। জেলা প্রশাসন ও ফরাক্কা ব্যারেজ প্রজেক্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। গঙ্গার জল কয়েক দিন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই কারণে অসংরক্ষিত এলাকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে চলে যেতে সতর্ক করা হয়েছে।” ফরাক্কা ব্যারেজ প্রজেক্টের জেনারেল ম্যানেজার অয়নকুমার সিংহ বলেন, “বাঁধ ভাঙার খবর পেয়ে ইঞ্জিনিয়ারদের পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরই বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হবে। এ বছর ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ হীরানন্দপুরের কালুটোলার কাছে পুরাতন বাঁধ থেকে প্রায় তিন কিমি নতুন বাঁধের কাজ করেছিল। গত তিন দিন ধরে গঙ্গার জলস্তর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনের জেরে পুরাতন ও নতুন বাঁধের সংযোগস্থল জিরো পয়েন্টে ৫০ মিটারেরও বেশি বাঁধের অংশ বসে গিয়ে গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে। বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পুরাতন ও নতুন দুইটি বাঁধেরই ক্ষতি হয়েছে। এ দিকে গঙ্গার জলস্তর বিপদ সীমার ১৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইতে শুরু করায় অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সতকর্তা জারি হয়েছে। উত্তর চন্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শীতল সাহা বলেন, “কালুটোলার কাছে পুরাতন বাঁধের সম্পূর্ণ অংশ গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে। নতুন বাঁধ ও ভাঙনের কবলে। জল যে ভাবে বাড়ছে তাতে ভেঙে যাওয়া বাঁধের ওই অংশ দিয়ে জল ঢুকে পড়ে হীরানন্দপুর এলাকার ১০-১২ হাজার মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়বে। বাঁধ ভাঙার পর থেকেই অবশ্য লাগোয়া এলাকার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে শুরু করেছে। |