এইম্স নিয়ে জটিলতা কাটার আগেই নিমহান্স। বেঙ্গালুরুর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেল্থ অ্যান্ড নিউরো-সায়েন্সেস (নিমহান্স)-এর একটি পূর্বাঞ্চলীয় শাখা কলকাতায় করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন রাজ্যের সাংসদ, ফরওয়ার্ড ব্লকের বরুণ মুখোপাধ্যায়। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ ফ ব সাংসদকে যে চিঠি পাঠিয়েছেন, তাতে কলকাতায় নিমহান্সের কেন্দ্র গড়ার ব্যাপারে কোনও আশ্বাস নেই। কেন্দ্রীয় সূত্রের খবর, নিমহান্সের পূর্বাঞ্চলীয় শাখা অসমের জোরহাটে করতে আগ্রহী মনমোহন সিংহের সরকার।
সংসদের বিগত অধিবেশনে নিমহান্স নিয়ে একটি বিল নিয়ে রাজ্যসভায় বিতর্কের সময় পশ্চিমবঙ্গের হয়ে সওয়াল করেছিলেন বরুণবাবু। তাঁর যুক্তি ছিল, এই ধরনের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান কলকাতায় হলে পূর্বাঞ্চলের রোগীদের সুবিধা হয়। তা ছাড়া, মস্তিষ্ক ও স্নায়ু রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কোনও অভাব কলকাতায় নেই। তাঁরা ওই প্রতিষ্ঠান চালাতে সহায়ক হতে পারেন। কিন্তু তার পরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংসদকে লেখা চিঠিতে ওই দাবির প্রসঙ্গ তুললেও তাঁর নিষ্পত্তির বিষয়টি সরাসরি এড়িয়ে গিয়েছেন। বদলে চিঠিতে গুলাম নবি জানিয়েছেন, কলকাতার ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রি-কে ‘উৎকর্ষ কেন্দ্র’ হিসাবে উন্নীত করার জন্য ৩০ কোটি টাকা ব্যয় ধার্য করা হয়েছে এবং তার মধ্যে ৫ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যেই মঞ্জুর করা হয়েছে। বরুণবাবুর আক্ষেপ, “কলকাতায় এই রকম একটা প্রতিষ্ঠান হলে ভাল হত। এখানে মানবসম্পদের কোনও অভাব ছিল না।”
জমি-জটে পশ্চিমবঙ্গে এইম্স নির্মাণের কাজ এখনও আটকে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রায়গঞ্জে এইম্স করার দাবিতে আন্দোলন করছেন কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সি। রাজ্য সরকার চাইছে কল্যাণীতে হোক এইম্স।
এরই মধ্যে নিমহান্স সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে বাম ও তৃণমূল শিবিরের মধ্যে ঈষৎ মন কষাকষি দেখা দিয়েছে। দু’দিন আগেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সময়েও রাজ্যের কিছু প্রকল্পের ব্যাপারে দরবার করে এসেছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। নিমহান্সের বিষয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “গুলাম নবির কাছে যাওয়ার আগে ফ ব সাংসদ আমার কাছে এলে ভাল হত। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও তৃণমূল সংসদীয় দলের প্রধান হিসাবে আমার একটা পরিচয় আছে!” বরুণবাবুদের যুক্তি, কেন্দ্রে প্রতিমন্ত্রীদের বিশেষ ক্ষমতা নেই বুঝেই তাঁরা সরাসরি মন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলেন। আবার সুদীপবাবুর বক্তব্য, “প্রতিমন্ত্রীদের বিশেষ কিছু করার থাকে না। তবু চেষ্টা করতে পারতাম!” উদাহরণ দিয়ে সুদীপবাবু জানাচ্ছেন, মন্ত্রিত্ব ছাড়ার আগে চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের সম্প্রসারণ প্রকল্প ৩১ অক্টোবরের মধ্যে শুরু করার জন্য দিল্লিতে তাগাদা দিয়ে এসেছেন। কিছু প্রকল্পের প্রক্রিয়া চলছে। নিমহান্সও তাঁদের নজরে আনা হলে উদ্যোগী হওয়া যেত। |