বিপর্যয়ের ময়নাতদন্তে মোহনবাগান, প্রয়াগ ইউনাইটেড
দলের কিছু ফুটবলারের সন্তোষে অসন্তোষ
ক্লাব কর্তারা যদি তাঁকে সরিয়ে দেন, তা হলে ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে সরে যাবেন সন্তোষ কাশ্যপ। “সারা বিশ্বেই টিম ব্যর্থ হলে কোচকেই তার দায়িত্ব নিতে হয়। আমিও নেব। সরে যেতে বললে সরে যাব,” রবিবার টিম হোটেলে বসে বলে দিলেন মোহনবাগান কোচ।
ফেড কাপের গ্রুপ থেকেই বিদায় নেওয়ার পরে কোনও কর্তাই কোচের সঙ্গে এখনও কথা বলেননি। তবে কাশ্যপের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রাথমিক চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে সেটা মোহন -সচিবের কথায় ইঙ্গিত মিলছে। অঞ্জন মিত্র ফোনে বললেন, “টিম কলকাতায় ফিরলে ফুটবলার আর কোচের সঙ্গে কথা বলে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেব। তবে আমাদের টিমে যে - কোচ হবে তাকে ফুটবলার ফ্রেন্ডলি হতে হবে।” তবে আগে যেমন কোচ নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যারেটোর মত প্রাধান্য পেত বাগানে, তেমনই বার ওডাফার মত প্রাধান্য পাবে। এখানে সবুজ -মেরুন শিবিরের যা খবর, সন্তোষ কাশ্যপের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেননি ওডাফা। বরং বলেছেন, “কোচ কী করবে। আমরাই তো গোল করতে পারিনি।”
হোটেলে বিষণ্ণ ওডাফা। রবিবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
এবং ওডাফারা পাশে আছেন জেনে সন্তোষ আই লিগের কথা ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন। ফেড কাপ থেকে ‘শিক্ষা’ নিয়ে তিনি ভাবছেন, ৪ - - ফর্মেশন থেকে সরে - - - যাবেন। “ওডাফা -টোলগে পুরো ফিট হয়ে উঠলে আমরা গোল পাবই। কিন্তু গোল খাওয়াটা আমাকে দুশ্চিন্তায় ফেলেছে। ডিফেন্স নিয়ে ভাবতেই হবে,” বলছিলেন মোহন -কোচ। ফেড কাপে চূড়ান্ত ব্যর্থতার জন্য চোট -অসুস্থতাকেই ঢাল করছেন কাশ্যপ। “দুর্গাপুরে প্রি -সিজন কন্ডিশনিং খুব ভাল হয়েছিল। কিন্তু কয়েক জন প্লেয়ারের জ্বর, ডেঙ্গি, চোটের জন্যই ফেড কাপে মোটেই ভাল করতে পারলাম না। এই সমস্যাগুলো তো আমার হাতে নেই। প্রচুর গোলের সুযোগও নষ্ট করেছি। তা ছাড়া ভাগ্যও সঙ্গে ছিল না। দু’টো ম্যাচেই ছ’টা বল বিপক্ষের পোস্টে বা বারে লেগেছে। তবে ফুটবলের সৌন্দর্য তো জন্যই। রকম হতেই পারে।” কিন্তু গত কাল এয়ার ইন্ডিয়া তো ৭৯ মিনিট ১০ জনে খেলেও দু’গোল করল ! কাশ্যপের প্রতিক্রিয়া, “সেগুলো নিয়ে আমরা আজ সকালে ঘণ্টাখানেক সবিস্তার আলোচনা করেছি। সবাই খোলাখুলি নিজের -নিজের মত প্রকাশ করেছে।”
মোহন -কোচের অজুহাত
১) কয়েকজন ফুটবলারের চোট, ডেঙ্গি।
২) প্রচুর গোলের সুযোগ নষ্ট।
৩) ভাগ্যের সাহায্য না পাওয়া (দু’টো ম্যাচে ছ’টা বল বিপক্ষের পোস্ট বা বারে লেগেছে)।
৪) দুশ্চিন্তার ডিফেন্স।
যদিও টিম সূত্রের খবর, নতুন কোচকে একটা টুর্নামেন্টের ব্যর্থতার জেরেই সরানোর প্রশ্নে মোহনবাগান ফুটবলাররা দ্বিধাবিভক্ত। ওডাফা যেমন বলছেন, “আমরাই তো খেলতে পারিনি, কোচ কী করবে?” তেমনই টিমের এক সিনিয়র ফুটবলার আবার বললেন, “মোহনবাগানের মতো টিমের কোচের আর একটু ব্যক্তিত্ববান হওয়া দরকার, না হলে অনেক তারকা কোচের ঘাড়ে উঠে পড়বে। তা ছাড়া স্ট্র্যাটেজি তৈরিতেও কোচ ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। দল নির্বাচনেও গলদ ছিল।” আবার গত কাল হারের পরে ওডাফা যখন মাথা ঠুকে হাউহাউ করে কাঁদছেন, তখন তাঁর কয়েক জন সতীর্থকে খোশমেজাজে টিমবাসে উঠতে দেখে এখানে অনেকেই ক্ষুব্ধ। টোলগে ম্যাচের পরে কিছু ইস্টবেঙ্গল সমর্থকের বিদ্রুপের মুখে পড়েন। যা নিয়ে ঝামেলা হতে পারত। কোচই কিন্তু টোলগেকে আড়াল করে গাড়িতে তুলে দেন। দিন টোলগে বললেন, “এ সব ঘটনাকে গুরুত্ব দিতে চাই না। আশা করছি, দিন দশেকের মধ্যেই মাঠে ফিরতে পারব।”
সোমবার গ্রুপ লিগে ওডাফাদের নিয়মরক্ষার শেষ ম্যাচ মহমেডানের সঙ্গে। তবে অলোক মুখোপাধ্যায়ের দলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মোহনবাগান বাদে গ্রুপের অন্য তিন দলই নাটকীয় অবস্থায় রয়েছে। মোহনবাগানকে হারালে সানডে -অসীমরা শেষ চারে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে অবশ্য এয়ার ইন্ডিয়ার সঙ্গে চার্চিলকে ড্র করতে হবে। সুভাষ ভৌমিকের দল জিতে গেলে অবশ্য সরাসরি সেমিফাইনালে উঠে যাবে। জিততে মরিয়া বেটোরা দিন সকালে হোটেলের সুইমিং পুলে এবং পাশের মাঠে দু’দফায় অনুশীলন করলেন। জোরের সঙ্গে বেটো বলছিলেন, “আমরাই সেমিফাইনালে যাব। কেউ আটকাতে পারবে না। সকালে ফোন করে ব্যারেটোও ‘বেস্ট অব লাক’ দিয়েছে।” ও দিকে মহমেডানের বিরুদ্ধে সম্মানের ম্যাচেও ওডাফা -নবি তো বটেই, সামান্য চোটও যে ফুটবলারের আছে, তাঁদের কাউকেই খেলাবেন না ঠিক করে ফেলেছেন সন্তোষ। “যাদের চোট আছে খেলাব না। কোনও ঝুঁকি নিতে চাই না,” বললেন সন্তোষ।
সন্তোষ বোঝাতে চাইছেন, তিনি আই লিগের লক্ষ্য নিয়ে এগোতে চাইছেন। কিন্তু কর্তারা কি তাঁকে সেই সুযোগ দেবেন?




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.