টানা বৃষ্টিতে অসম ও অরুণাচলের বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। ধেমাজি, তিনসুকিয়া, লখিমপুর, বাক্সা, বরপেটা, যোরহাট, ডিবু্রগড়, কামরূপ-সহ অসমের মোট ১৬ টি জেলা বন্যার কবলে। বন্যার্তের সংখ্যা প্রায় আট লক্ষ ছুঁয়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী অসমের মোট ১৩৬৬ টি গ্রাম জলমগ্ন। অনেকেই ভিটে মাটি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে, বন্যাদুর্গতদের জন্য ৯টি জেলায়, ১২৪ টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। ত্রাণশিবিরগুলিতে রয়েছেন প্রায় ১লক্ষ দুর্দশাগ্রস্থ মানুষ। এখনও পর্যন্ত বন্যার ফলে মৃতের সংখ্যা ৫। |
চিন জল ছাড়ায় উজানি অসমে ও অরুণাচলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ।
আজ ডুমডুমার বারেকুরি এলাকায় রাধাষ্টমী পালন করতে গিয়ে জলে নেমে, তিনও পাঁচ বছরের দুই শিশু ও ১৩ বছরের এক বালক ভেসে গিয়েছে। শুধু মানুষই নয়, জীবজন্তুদের অবস্থাও করুণ। কাজিরাঙা ও ডিব্রু-শইখোয়া জাতীয় উদ্যান বন্যা কবলিত। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও জীবের প্রাণহানির খবর মেলেনি। এ দিকে ব্রহ্মপুত্র, ধানসিরি, মানস-সহ বেশ কয়েকটি নদীর জল বিপদ সীমার উপরে বইছে। ব্রহ্মপুত্রের জল এতটাই বেড়ে গিয়েছে, যে, গুয়াহাটি শহরের মালিগাঁও এবং পাণ্ডু অঞ্চলেরও অনেকাংশ জলমগ্ন। অসম রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার অতুল চতুর্বেদী জানান, তিনসুকিয়ার শদিয়ার অবস্থা সব থেকে শোচনীয়। |
কাজিরাঙা অভয়ারণ্যের ৭০ শতাংশই এখন জলের নীচে। ছবি: পিটিআই |
শদিয়া, মাজুলিতে বন্যা এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, বহির্জগতের সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ফলে এই অঞ্চল দুটিতে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে। খারাপ আবহাওয়ার জন্য বিঘ্ন ঘটছে ত্রাণকার্যে। উজানি অসমে, বন্যার্তদের উদ্ধারকার্যে এনডিআরএফ-এর ৮টি ও সেনাবাহিনীর ১৩টি দল পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, অরুণাচলের হাইলুং সীমান্ত থেকে খবর এসেছে, হাইলুং, কিবিথ থেকে চিন জল ছেড়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আজ রাত বা কালকের মধ্যে চিনের জল অরুণাচল ও উজানি অসমে আঘাত হানতে পারে। অরুণচালের তেজু, চৌখাম, সুনপুরায় সতর্কতা জারি হয়েছে। তবে, চতুর্বেদী জানান, তেমন কোন সতকবার্তা অসম সরকারের কাছে আসেনি। অরুণাচলের দিবাং, সিয়াং, লোহিত, চাংলাং, তেজু, নামসাইতে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। সেনাবাহিনী আটকে থাকা মানুষকে উদ্ধার করার কাজ চালাচ্ছে। বন্যা কবলিত জেলায় পানীয় জল, বিদ্যুৎ, সড়ক, জ্বালানি পরিষেবা ভেঙে পড়েছে। সড়ক বন্ধ থাকায় গ্যাস বা তেলও পৌঁছচ্ছে না। |