হড়পা বানের পরে ঘনঘন ধস আর লাগাতার বৃষ্টি। বিপর্যস্ত উত্তর সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকা। রবিবার সকালে ধস নেমে উত্তর সিকিমের জেলা সদর মঙ্গনও পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধারকার্যও। এ দিন চুংথাঙে আরও ১০টি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। শুক্রবার রাতের ওই বানে সরকারি ভাবে ১৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। তবে স্থানীয় সূত্রের দাবি, মৃত অন্তত ২০ জন। তাঁদের মধ্যে ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের চার কর্মী, তাঁদের পরিবারের দু’জন এবং বর্ডার রোড্স অর্গানাইজেশনের কয়েকজন অফিসার রয়েছেন।
এই দুর্যোগের মধ্যে কলকাতার একটি অভিযাত্রী দল উত্তর সিকিমের পাহাড় শিখরে নিরাপদ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তাদের সঙ্গে যাওয়া আর একটি ট্রেকিং-দল চুংথাঙে আটকে পড়লেও নিরাপদে রয়েছে বলে খবর।
হড়পা বানের পরে বৃষ্টি চলছিল। শুক্রবার রাত থেকেই উত্তর সিকিমের পাহাড়ি রাস্তায় একের পর এক ধস নামতে শুরু করে। শনিবার সকালে ধস নেমে উত্তর সিকিম থেকে চুংথাং বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। চুংথাং এবং লাগোয়া পেগং শহরে ত্রাণ বা উদ্ধারের দল পৌঁছতে পারেনি। হেলিকপ্টার দিয়ে কিছুটা উদ্ধারকার্য চালানো হয়। চুংথাং এবং পেগং শহরের একাধিক বাড়ি জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে। ধংসস্তূপে একাধিক দেহ চাপা পড়ে থাকলেও এ দিন বিকেল পর্যন্ত সর্বত্র উদ্ধারের কাজ চালানো সম্ভব হয়নি। ধস নেমে মঙ্গনও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় সড়কপথে উদ্ধার বা ত্রাণের কাজ কার্যত থমকে যায়। |
সিকিমের বিপর্যয় মোকাবিলা কমিশনার এস বি এস ভাদুরিয়া বলেন, “এ দিন ১০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ১৪। ধসের কারণে রাস্তা বন্ধ থাকায় সমস্যা হচ্ছে। তবে হেলিকপ্টারের সাহায্যে উদ্ধারকার্য চালানো হচ্ছে। পর্যাপ্ত খাবারও মজুত রয়েছে।” উত্তর সিকিমের জেলা শাসক ভীমকুমার তামাং বলেন, “এমনিতেই চুংথাং শনিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। তার মধ্যে রবিবার ধসের জন্য জেলা সদর মঙ্গন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। সকাল থেকে মঙ্গনের রাস্তার ধস সরানোর কাজ চলছে।”
তবে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের তরফে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় সিকিমে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসন। এ দিন চুংথাং, পেগং, মঙ্গনে টানা বৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মঙ্গনে প্রায় ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, চুংথাঙে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় ১৫০ মিলিমিটার। সিকিমের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “মৌসুমী অক্ষরেখার একটি অংশ উত্তর সিকিমের আকাশ থেকে অসম এবং মেঘালয়ে বিস্তৃত রয়েছে। সে কারণে বৃষ্টি বেড়েছে। আগামী দু’দিন এ পরিস্থিতি চলবে।” |