বাজারে টনিকের কাজ করবে আর্থিক সংস্কার
রকার আছে। সংস্কারও আছে। ফলে বেজায় খুশি বাজার।
গরিবদের সমস্যা বাজারের চিন্তার বিষয় নয়। বাজার দেখে সরকারি সিদ্ধান্তে লগ্নি আসার পথ সুগম হচ্ছে কি না। এই কারণে রান্নার গ্যাস-ডিজেলের দাম বাড়লে বাজার খুশি হয় ভর্তুকি কমবে বলে। সরকার অর্থনীতিতে সংস্কার আনতে চাইলে, তা কতটা বাধাহীন ভাবে সম্ভব হচ্ছে, তার উপর নজর রাখে বাজার। তাই কোনও বাধা সরে গেলে বাজার খুশি হয়। খুশি প্রকাশ পায় সূচকের উত্থানে।
যেমন বামেরা ইউপিএ-১ সরকার থেকে সরে যাওয়ার সময়ে সেনসেক্স বেড়েছিল ৬০০ পয়েন্টেরও বেশি। এ বার তৃণমূল সমর্থন তোলার দিনে সেনসেক্স উঠল ৪০৩ পয়েন্ট।
যে-সব সংস্কার নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা বিদেশি লগ্নির পক্ষে সদর্থক। ফলে যে-দিন এই সব সংস্কার ঘোষিত হয়েছে, সে-দিন তো বটেই এবং যে-দিন তৃণমূল সমর্থন তোলে, সে দিনও বাজারে ঢেলে লগ্নি করে বিদেশি লগ্নিকারীরা। ফলে সেনসেক্স পৌঁছে যায় ১৮,৭৫৩ অঙ্কে। আচমকা ডলার প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় অনেকটাই দাম পড়ে যায় এই মার্কিন মুদ্রার। এর প্রভাবে কিছুটা দর নামে সোনারও। কারণ, সোনা আমদানির জন্য ডলার লাগে। চাঙ্গা হয়ে ওঠে এত কাল ঝিমিয়ে থাকা বহু মিউচুয়াল ফান্ডের ন্যাভ-ও। অর্থাৎ রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের বড় রকমের প্রভাব পড়েছে লগ্নির বাজারে।
শেয়ার বাজার একনজরে
সহায়ক শক্তি বিরুদ্ধ শক্তি
• সরকার টিকে যাওয়া • চড়া পণ্যমূল্য
• সংস্কারের পালে হাওয়া লাগা • উঁচু সুদের হার
• কর এবং কোম্পানি আইন স্বচ্ছ করার প্রতিশ্রুতি • অন্যান্য দলের উপর ইউপিএ সরকারের নির্ভরতা
• বিদেশি লগ্নি এবং টাকার দর বৃদ্ধি • এফডিআই-কে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিরোধের সম্ভাবনা
• বিমা শিল্পে এফডিআই বৃদ্ধির সম্ভাবনা • ইউরোপের সমস্যার পাকা সমাধান না-হওয়া
সরকার টিকে যাওয়ায় সংস্কার চালিয়ে যাওয়ার শক্তি পেয়ে গিয়েছেন মনমোহন-চিদম্বরম জুটি। আরও একঝাঁক সংস্কার যে আসতে চলেছে, তা স্পষ্ট করে বলেছেন দু’জনেই। লগ্নির ‘অনুকূল আবহাওয়া’ তৈরি করতে তাঁরা বদ্ধপরিকর। এটাও শুভ বার্তা বয়ে আনবে বিদেশি লগ্নিকারীদের দফতরে। অর্থাৎ এতটা ওঠার পরেও বাজারের বড় রকমের পতনের সম্ভাবনা কম।
তবে বিদেশি লগ্নিকারীদের মন ভরলেও তাতে সাধারণ মানুষের পেট ভরবে না। চাই পণ্যের জোগান বৃদ্ধি। জিনিসপত্রের দাম না-কমলে বহু ব্র্যান্ডের খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি বা এফডিআই নিয়ে তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়তে পারে মনমোহন সরকার। ভোট এগিয়ে আসার মুখে চাপের মুহূর্তে নতুন সমর্থনকারী দলগুলি সরকারকে কী শর্তে কতটা কাঁধ দেয় তার উপর নজর থাকবে বাজারের।
অর্থাৎ সামনের দিনগুলিতে অস্থিরতা থাকবে না, তা কিন্তু এখনই বলা যাচ্ছে না। এ কথা মাথায় রেখে বর্তমান চাঙ্গা বাজারে ভাল দাম পেলে কোনও কোনও শেয়ার এবং মিউচুয়াল ইউনিট বিক্রির কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। যে কোনও বড় উত্থানের পর ছোট থেকে মাঝারি মাপের সংশোধনের সম্ভাবনা থেকেই যায়। অর্থাৎ বিক্রির পর নতুন করে লগ্নির সুযোগ বাজারই করে দেবে।
বাজারের এই উত্থানে বড় ভূমিকা নিয়েছে বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক শেয়ার। যেমন,স্টেট ব্যাঙ্ক, আইসিআইসিআই, অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক ইত্যাদি। খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির দরজা খুলে যাওয়ায় ৮% পর্যন্ত বেড়ে ওঠে প্যান্টালুন, শপার্স স্টপ, ট্রেন্ট ইত্যাদি বিপণির শেয়ার। বিদ্যুৎ, ধাতু, পরিকাঠামো সংস্থার শেয়ার দর বাড়ে বিভিন্ন কোম্পানির বিদেশ থেকে নেওয়া ঋণে কর কমার কারণে।
মঙ্গলবার বাজারের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে সে দিন বিবেচিত হতে পারে বিমা ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি ২৬% থেকে বাড়িয়ে ৪৯% করার প্রস্তাব। এটি অনুমোদিত হলে তা বাজারের ঊর্ধ্বচাপ ধরে রাখতে সাহায্য করবে। পরিস্থিতি যা, তাতে মনে হয় এক একটি আর্থিক সংস্কারের সিদ্ধান্তই এখন বাজারে টনিকের কাজ করে যাবে। তার মধ্যেই বেচাকেনা করে নিজের ঘর গুছিয়ে নিতে হবে লগ্নিকারীদের।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.