|
|
|
|
|
|
ডেডম্যান
স্বপ্নময় চক্রবর্তী |
|
ইস্কুলটার সামনে লেখা থাকত এম.সি.পি.আই। মুর্শিদাবাদের কাশিমবাজারের মহারাজাদের বদান্যতায় তৈরি হয়েছিল বলে স্কুলটার পুরো নাম মহারাজা কাশিমবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। কিন্তু পাড়ার লোকজন বলত মরা কাটা পচা ইঁদুর। এটা আদরের নাম। যেমন অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টারমশাই ললিত বশিষ্ঠ, সংক্ষেপে যিনি এল.বি, ওঁকে আদর করে ডাকা হত লংকাবাবু। লঙ্কেশ্বর নামে একজন নাতিদৈর্ঘ্যের মানুষ টিপিনবেলায় টিনের বাস্কো করে ‘এসো এসো সোনামণিরা, এক আনার ঘুগনিতে দু’আনার নারকোল’ বলে চাপ ঘুগনি বেচত, তার সঙ্গে ললিতবাবুর আকৃতিগত সাদৃশ্য ছিল। সমস্ত স্কুলের হেডস্যারদের আদরের নাম হয় হেডু, এ নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। আমাদের স্যরদের কচুরি, জিলিপি, টিকটিকি, বিকাশ রায় ইত্যাদি নানা নাম ছিল। কিন্তু একজন স্যরের কোনও আদরের নাম ছিল না, তিনি হরিপদ কুশারী।
স্কুলটার অবস্থান বাগবাজার স্ট্রিট এবং নন্দলাল বোস লেনের সংযোগস্থলেই। কাছেই পটলার বিখ্যাত তেলেভাজার দোকান। সেই দোকানের একটি বিখ্যাত আইটেমের নাম লড়াইয়ের চপ। ডাকনাম ছিল লড়াচ্চপ। কুশারী স্যরের প্রিয় খাবার ছিল এটা। উনি ভূগোল পড়াতেন। অসাধারণ পড়াতেন। মাসে একটা করে পরীক্ষা নিতেন। পরীক্ষায় যারা ভাল ফল করত, তাদের লড়াইয়ের চপ খাওয়াতেন। পটলাকে বলতেন একটা কিউবা দাও দেখি, একটা চিলি, একটা ভিয়েতনাম। আসলে তখন ওই দেশগুলো ছিল লড়াইয়ের দেশ। ওই দেশগুলোতে আমেরিকান আর্মির সঙ্গে দেশীয় মানুষদের লড়াই চলছিল। গত দশকের ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়। পশ্চিমবাংলাতেও খাদ্য আন্দোলন চলছে, প্রফুল্ল সেন মুখ্যমন্ত্রী।
কুশারীবাবু ক্লাসে আসতেন ম্যাপ নিয়ে। ম্যাপ ঝুলিয়ে হয়তো জলবায়ু পড়াচ্ছেন, রোদে ধান ছায়ায় পান বলছেন, কোথায় বেশি গম উৎপন্ন হয়, কেন হয়, কোথায় আখ... আখ পড়াতে গিয়ে আখ উৎপাদনকারী দেশ কিউবা, কিউবা থেকে কাস্ত্রো। ধান থেকে ভিয়েতনাম-কম্বোডিয়া। আমরা মুগ্ধ হয়ে শুনতাম। দেখতেও ভারী সুন্দর ছিলেন তিনি।
একবার আমাদের তিন-চারটি ছেলেকে লড়াইয়ের চপ খাওয়াতে খাওয়াতে বললেন, ফিদেল কাস্ত্রোকে কে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন বলতে পারিস? একজন বলল, কেন? চে গেভারা। কুশারী স্যার বললেন, আর গেভারাকে? সবাই চুপ। স্যর বললেন, ‘দ্য ডেড ম্যান’।
ডেড ম্যান আবার কে?
আন্দাজ কর।
সবাই চুপ।
যে লোকটার নাকি তাইহোকুতে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল।
—নেতাজি? আমি বলে উঠলাম।
মুখে আঙুল চাপালেন স্যার। ওই নামটা করবি না। চার দিকে সি.আই.এ ছড়ানো আছে। ডেড ম্যান বললেই বুঝে যাবি কার কথা বলা হচ্ছে। বললেন— উনি রাশিয়া থেকে গেলেন চিন। ওখানে বিপ্লব সফল করে কিউবা, এখন ভিয়েতনামে আছেন। হো চি মিন-কে উনিই পরিচালনা করছেন।
আপনি জানেন স্যর?
মৃদু মাথা নাড়লেন। কাউকে বলবি না।
ডেড ম্যান চিঠি দেয়?
দেয়। সাঙ্কেতিক ভাষায়।
আমি শিহরিত। ২৩ জানুয়ারিতে যাঁর ছবিতে গ্যাঁদার মালা পরিয়ে শাঁখ বাজাই, কালীপুজোর সরিয়ে রাখা কালীপটকাও ফাটাই, তিনি চিঠি দেন স্যরকে?
বলি— একদিন দেখাবেন চিঠি?
বাড়িতে রাখি না। সুন্দরবনে পাঠিয়েছি। ওখানে সেফ।
আমরা বিশ্বাস করতাম। এত ভাল স্যর কী করে গুল মারবেন? কেনই বা? একদিন ফিসফিস করে কানে কানে বললেন— একটা খারাপ খবর। একটা আমেরিকান প্লেনকে গুলি করে নামাতে গিয়ে ডান হাতে চোট পেয়েছেন। অপারেশনটা একটা পাহাড়ি জায়গায় হয়েছিল কিনা...
একটা সময় স্কুল ছাড়ি। বুঝে যাই। বড় হলাম তো। শুনলাম উনি খুব অসুস্থ। বাড়ি গেলাম। অকৃতদার ছিলেন। শুয়ে আছেন। কেউ নেই। বললেন, বাঁচব না রে! তোরা এসেছিস, খুশি হয়েছি। আমার তো কেউ ছিল না, শুধু ডেড ম্যান ছিলেন। আমি মরে গেলে আমার ডেড ম্যানও...
অনেক দিন পর, আকাশবাণীর চাকরিতে মহাশ্বেতা দেবীর সাক্ষাৎকার নিচ্ছি, উনি একটা গান করলেন। গানের গীতিকার হরিপদ কুশারী। গণনাট্যে ছিলেন। কমিউনিস্ট পার্টিতেও। পার্টির সঙ্গে গণ্ডগোল হয়েছিল, ছেড়ে দিয়েছিলেন। মহাশ্বেতা বলেছিলেন।
কেউ ছিল না স্যরের, শুধু ডেড ম্যান ছিল। |
|
শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় |
|
পেল্লায় ইন্টুমিন্টু-ওলা সিনেমা দেখতে গেছেন, ব্ল্যাকে টিকিট কেটে। বুক আনন্দে ধড়াসধড়াস।
এই সময়, সাড়ে ছ’ফুট লম্বা দর্শকটি এসে ঠিইক আপনার সামনের সিট-টায় বসবে। |
|
|
কলেজের সবচেয়ে আনস্মার্ট ছেলেটি প্রেম
করতে শুরু করবে কলেজের সবচেয়ে সেক্সি
মেয়েটির সঙ্গে, কারণ আপনার (বা অন্য কারওর)
তিন বছরে জাস্ট সাহস হয়ে ওঠেনি প্রোপোজ করার। |
সকাল আটটা চল্লিশ থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে
সাড়ে বারোটায় কাউন্টারে পৌঁছে শুনবেন,
এটা ভুল লাইন, আপনার ফমর্র্ দেওয়া হচ্ছে পাশের
কাউন্টারটায়, যেটার সামনে গোড়া থেকেই গড়ের মাঠ। |
|
|
|
বিলিয়ার্ডস-এ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতীয়কেও আমরা চিনি না, কিন্তু মহান ক্রিকেটের টুয়েলফ্থ ম্যান-এর খুশকির ছাঁচ ঠোঁটস্থ। দাঁড়িপাল্লার এই তীব্র একঝোঁকামির জমানায়, সাইনা নেহওয়াল দেখালেন, হালকা ব্যাডমিন্টন-র্যাকেটে উইলো কাঠের তক্তার মহড়া নেওয়া যায়। কিছু দিন আগে অবধি দিন কাটিয়েছেন সানিয়া মির্জা-র প্রিন্টিং মিসটেক হিসেবে, এ বার টিভি-তে অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ-জয় দেখে তবু আম-ভারতীয়’র আবছা আন্দাজ: তিনি সাংঘাতিক কৃতী। কিন্তু এই যুগে সাফল্যের সেরা মাপ-ফিতে সমষ্টিগত হইহই নয়, স্পনসর-ভাগ্য। স্পনসর যাঁকে বড় বলেন বড় সে-ই হয়। টাকা-সম্মোহিত মানুষজাতি বোঝে, ওয়াঃ, এতটা নগদ মূল্য? তাইলে তো ফেলনা নয়! হৃতি স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ-এর সঙ্গে সাইনা সই করলেন চল্লিশ কোটি টাকার চুক্তি। ক্রিকেট-বহির্ভূত কোনও ভারতীয় খেলোয়াড় এই পরিমাণ টাকা আগে পাননি। এ অর্থপ্রাপ্তি অন্য খেলার চেষ্টা-চালানো দরদর-ঘামের কোটি মানুষের কাছে তুঙ্গ-অর্থপূর্ণ, পরিশ্রম ও প্রতিভার মিশেলে প্রবলতম বাজার-জয়ীকেও যে পেল্লায় লড়াই দেওয়া যায়, সে প্রত্যয়ের প্রতীক এই সই। আর মিডিয়া-বিস্ফোরণেরও একটি সুফল: অ-মেনস্ট্রিমের প্রতি সচেতনতা। তবে পার্কে পার্কে ব্যাডমিন্টন কোচিং সেন্টার খোলার হিড়িক পড়বে কি না, দেখার। |
|
ওবামা-র প্রতিদ্বন্দ্বী মিট রমনি-র ভোটযুদ্ধে এমনিতেই খুব ভাল অবস্থা ছিল না, এ বার কোটিপতিদের নৈশভোজে (যাঁরা রমনি-র ভোট-প্রচারে টাকা ঢালতেই জমায়েত হয়েছিলেন) তিনি বলে ফেললেন, গরিব লোকরা সমাজের প্যারাসাইট, ইনকাম ট্যাক্স দেন না, তাঁরা মনে করেন তাঁরা সিস্টেমের শিকার, আর তাই তাঁদের নাকি অধিকার আছে সরকারের কাছ থেকে সব মাগনায় পাওয়ার : চিকিৎসা, আশ্রয়, খাবার। যতই বলো, নিজের জীবনের দায় ও দায়িত্ব নিজে নাও ভায়া, তাঁরা শোনার বান্দা নন। এই বক্তৃতার ভিডিয়ো লিক হয়ে গিয়ে এখন রমনি-র দু’গাল মাছি। তারা ভনভন করে এ-ও জানিয়ে দেয়, জনদরদি নেতা সাজা মার্কিন কোটিপতিরা (রমনি নিজে সাংঘাতিক ধনী) গরিবদের আসলে কী চোখে দেখেন। বা, আর একটু আতস কাচ লাগালে, সারা পৃথিবীতেই তুমুল বড়লোকরা গরিবদের কী ভাবেন। যে, তাঁরা সাধ করে ফুটপাথে পড়ে রয়েছেন, শালপাতা চেটে মহানন্দে খাচ্ছেন, আল্সে কামচোরের দল কোনও কাজ দেখলেই ন্যাজ তুলে পালাতে ব্যস্ত, শুধু নাকে কেঁদে ভিক্ষে আদায় করার ধান্দা। মনে পড়ে ভিখিরি দেখে মধ্যবিত্তের বাঁধা ডায়লগ: গতর খাটিয়ে খেতে পারো না? |
|
|
|
১৮
আমেরিকানরা গড়ে
যত ‘একর’ পিৎজা
দৈনিক সাবাড় করেন। |
৯৫
আইসল্যান্ড-এর শতকরা
যত লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।
পৃথিবীর অন্য কোনও দেশের এত
অংশ আন্তর্জালের বাসিন্দা নন। |
৩৬৫২৪২
তৃতীয় মিলেনিয়ামে
(২০০১-৩০০০) মোট
যতগুলো দিন আছে। |
৩.৩
যত মিলিয়ন ডলার
এখন
সলমন রুশদি-র মাথার দাম,
ইরানের খোরদাদ ফাউন্ডেশন
সদ্য বাড়িয়ে দেওয়ার পর।
১২
হাওয়াই-এর
ভাষায়
যতগুলো বর্ণ। |
৬৬
পিটকেয়ার্ন আইল্যান্ড
(ইংল্যান্ডের অধীনে থাকা
দ্বীপরাষ্ট্র)-এর জনসংখ্যা,
গোটা বিশ্বে সবচেয়ে কম।
|
২৬
গত কুড়ি বছরে
আমেরিকা হরেক
কিসিমে যত
বিলিয়ন
ডলার মুক্তিপণ দিয়েছে।
|
১৭৮
ম্যাকডোনাল্ডস-এর
‘বিগ ম্যাক বান’-এর
ওপর
ছড়িয়ে থাকা
তিলের সংখ্যা।
|
|
|
|
|
অ
সী
ম
রা
য় |
|
|
তোমার পুলিশ ট্রিগার-হ্যাপি আমার পুলিশ মিষ্টি
তোমার ছিল কটমটে চোখ আমার শুভদৃষ্টি
সিংহাসনের দেওয়ালে পিঠ যেমনি গেছে ঠেকতে...
বলছে সবাই, আমায় নাকি তোমার মতোই দেখতে |
মৃত্যুতে খুব কলঙ্ক ভাই। উপায় কী তা মোছার?
খাস প্রাকৃতিক ডেঙ্গি নিয়ে হ্যাভক অপপ্রচার!
মিথ্যেবাদী মিডিয়া সব রটায় নানা ধরন
বাধ্য হয়ে বিবৃতি দেন মহান মহাকরণ
কর্নাটকে মরছে বেশি, বঙ্গে মোটে দো...চার... |
|
|
লেটারিং বেটারিং |
বিপ্লবের রান্নাঘরে নিত্যি-চিৎকার |
|
|
|
|
|
|
|
ডান পাশের ছবির দু’জন কী বলছে?
সাদা
পাতায় লিখে পাঠান।
প্রতি ডায়লগ ২০ শব্দের মধ্যে।
ঠিকানা:
নয়া সংলাপ,
রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১ |
|
|
|
|
|
|
|