লাল-হলুদকে ভাবাচ্ছে মাঠ আর বৃষ্টি
গোল বাড়িয়ে আজ চাপ কাটাতে মরিয়া মর্গ্যান
কাশের দিকে তাকিয়ে উগা ওপারা তাঁর কোচকে বললেন, “আমাদের খেলার দিনই যত বৃষ্টি। আজ দেখো কী রোদ?”
ট্রেভর মর্গ্যান তাঁর সেই বিখ্যাত হাসিটা হাসলেন। তারপর বললেন, “সিচুয়েশন যাই হোক কাল জিততে হবে। প্রচুর গোল করে রাখতে হবে।”
লাল-হলুদের কোচ এবং ডিফেন্ডারের এই কথোপকথনই ‘থিম’ হতে পারে আজ, রবিবারের ম্যাচে।
কিন্তু ‘থিম’ ভেবে নিয়ে মাঠে নামলেই তো হবে না। ‘পুরস্কার’ পাওয়া দরকার। গ্রুপ লিগের দ্বিতীয় ম্যাচের প্রতিদ্বন্দ্বী ওএনজিসি-র ভাঁড়ারে যে ইতিমধ্যেই ‘পাঁচ’ গোল মজুত হয়ে রয়েছে। এই সংখ্যাটা টপকানো কি সম্ভব? ব্রিটিশ কোচ ঠোঁট ওল্টান। “কাউকে ছোট করে দেখছি না। তবে ওরা কাল যাদের পাঁচ গোল দিয়েছে তারা কিন্তু কলকাতা লিগের ক্লাব। আই লিগের নয়।”
স্পোর্টিং ক্লুবের কাছে পয়েন্ট নষ্ট করার দুঃখ কিছুতেই যাচ্ছে না ইস্টবেঙ্গলের। চিডি-বলজিতরা তীব্র চাপে, এটা অবশ্য শনিবার লাল-হলুদের শিবির ঘুরে মনে হয়নি। তা বলে যে আশঙ্কা নেই তা নয়। তবে সেটা জঘন্য মাঠ নিয়ে। বৃষ্টি নিয়ে।
টিম হোটেলের পুলে চিডি। জলে পড়া দলকে কি তিনি টেনে তুলতে পারবেন? ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
ইস্টবেঙ্গল টিমে যে ফুটবলারকে রাজ্য অ্যাথলেটিক্স মিটে নামালে পদক জিততে পারেন, সেই ইসফাক আহমেদের দাবি, তিনি ১০০ মিটার দৌড়তে পারেন ১০.৩ সেকেন্ডে! দাড়ি রেখে মুখের ভূগোল বদলে ফেলা কাশ্মীরী বলছিলেন, “গতকাল যা মাঠের অবস্থা ছিল তাতে আমার ওই দূরত্ব পেরোতে ২০.৫ সময় লাগত। দৌড়োবো কী! পা তো পিছন থেকে টেনে ধরছিল মাঠ!” সিঁড়ি দিয়ে নামছিলেন গুরবিন্দর সিংহ। স্টপারে উগা ওপারার সতীর্থ যোগ করলেন, “বল ট্যাকল করতে যেতেই ভয় লাগছিল। মিস করে পড়ে গেলেই পিছনটা ফাঁকা। এ জন্যই দু’টো সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল স্পোর্টিং।”
ইস্টবেঙ্গল যে পাসিং ফুটবলটা খেলতে অভ্যস্ত, সেটা এখানকার কাঞ্চনজঙ্ঘায় সম্ভব নয়। বৃষ্টি যে ভাবে চোখ রাঙাচ্ছে তাতে মাঠের অবস্থা আরও খারাপ হবে। বিশেষ করে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে। মর্গ্যান পেশাদার। জানেন দল শেষ চারে না যেতে পারলে মাঠের দোহাই দিয়ে পার পাওয়া যাবে না। সে জন্য বলতে শুরু করেছেন, “আমরা পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারিনি বলেই প্রথম ম্যাচে সমস্যা হয়েছে। সেটা কাল হবে বলে মনে করি না।”
চিডি-পেন-সৌমিকরা এ দিন অনুশীলন করেননি। সুইমিং পুল আর জিমে ছিলেন ঘণ্টা খানেক। মেহতাব হোসেন খেলতে পারছেন না লাল কার্ড থাকায়। এমনিতে অযথা কার্ড দেখলে জরিমানার বিধান আছে ইস্টবেঙ্গলে। মর্গ্যান অবশ্য মেহতাবের হয়ে ব্যাটন ধরেছেন। “ওকে লাল কার্ড দেখানোটা বেশি কঠোর হয়েছে। অতটা দোষ ছিল না। ওদের দু’জন ফুটবলারের চাপে এটা হয়েছে।”
মেহতাবের জায়গায় কাকে আজ নামাবেন তা অবশ্য বলেননি ইস্টবেঙ্গল কোচ। বললেন, “গোলের সংখ্যা বাড়াতে যা করতে হয় সেটা করব।” টিম সূত্রের খবর, মেহতাবের সেন্ট্রাল মিডিও পজিশনে খাবরাকে এনে ডান দিকে সঞ্জুকে পাঠানো হবে। বাকি টিম একই। মর্গ্যান যা ইঙ্গিত দিলেন তাতে কার্যত শেষ পর্যন্ত ৪-৩-৩ ফর্মেশনে চলে যেতে পারেন তিনি।
ওএনজিসি এ বারই আই লিগে উঠেছে। তাদের কোচ আবার এক বঙ্গসন্তান, সুব্রত ভট্টাচার্য। বাবলু নয়, এই সুব্রত-র ডাক নাম পটলা। প্রথম ম্যাচে কালীঘাট এম এসকে পাঁচ গোলে হারিয়েও বাস্তবের জমিতে পটলা। বলছিলেন, “ইস্টবেঙ্গলকে মার্কিং করে আটকানো যাবে না। আমার সোজা হিসাব নব্বই মিনিট পর্যন্ত ম্যাচ ধরে রাখা।” মহমেডানে গত বছর খেলে যাওয়া হাসান আছেন তাঁর দলে। তেল কোম্পানির কোচের ইঙ্গিত, চিডির পিছনে হাসানকেই লাগানো হবে। জাপানের কাটসুমি ইউস, নাইজিরিয়ান আনিয়ামা আছেন তাঁর দলে। ওএনজিসি কোচ যা ইঙ্গিত দিলেন তাতে এক পয়েন্টই লক্ষ্য।
মর্গ্যান বুদ্ধিমান। তিনি জানেন, ইতিমধ্যেই তিন পয়েন্ট পকেটে পুরে ফেলা টিম কী করতে পারে। সে জন্যই ফুটবলারদের তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ, পরের দুটো ম্যাচ জিততেই হবে এবং যত বেশি সংখ্যক গোলে। কিন্তু মাঠের হাল খারাপ থাকলে তো একই অবস্থা হবে? আপনার প্ল্যান বি কি তৈরি? ভ্রু কুঁচকে মর্গ্যানের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া, “আমার প্ল্যান বি, সি, ডি সব তৈরি।” বোঝাই যাচ্ছিল বৃষ্টির মাঠে মাটিতে নয়, ডাইরেক্ট ফুটবল খেলতে চান তিনি। দু’টো উইং ধরে উঠে বিপক্ষের বক্সে বল তুলে যাওয়া।
স্পোর্টিং ম্যাচে ‘প্ল্যান বি’ কাজ করেনি। দেখার, আজ সেটা কাজে লাগে কি না?

আজ ফেড কাপে
কালীঘাট এম এস-স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়া (বিকাল ৩টা)
ইস্টবেঙ্গল-ওএনজিসি (সন্ধ্যা ৭টা)
পৈলান অ্যারোজ-শিলং লাজং (বিকাল ৩টা)
মুম্বই এফ সি-ডেম্পো (বিকাল ৩টা)




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.