গির্জার ফরমান
রবিবারের ফুটবলে নিষেধাজ্ঞা মিজোরামে
যে রাজ্যে ছোটদের ফুটবল শেখাতে স্কুল খুলছে ফিফা, যে রাজ্যের ২০০ ফুটবলার ভারতের বিভিন্ন ক্লাবে খেলছে, যেখানে ৮০ শতাংশ শিশুই ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার নয়, ছোট থেকে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখে, সেই রাজ্যেই কি না ফুটবল খেলার উপরে চার্চের হুলিয়া জারি! রাজ্যের সর্বোচ্চ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, প্রেসবিটেরিয়ান গির্জার তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, রবিবার হলেই পায়ে বল নিয়ে মেতে ওঠা চলবে না। পবিত্র দিনটিতে হিংস্রতা, লাথালাথি মোটেই ভাল কথা নয়। কেবল ফুটবলই নয়, গির্জার বক্তব্য, রবিবারে কোনও খেলাই চলবে না। আর এরপরেই গির্জার আদেশের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে উঠছে মিজোরামে।
লালমপুইয়া, জোমিংলিয়ানা রালতে, জেজে লালপেখুয়াদের রাজ্যে আজ অবধি ভাল ফুটবল স্টেডিয়াম গড়ে ওঠেনি। তবু এই পাহাড়ি রাজ্যে ফুটবলই সেরা বিনোদন। সবচেয়ে পছন্দের পেশা। ছুটি পেলেই পায়ে বল নিয়ে পাহাড়ের গায়ে, সমতলে নেমে পড়েন মিজো শিশু, কিশোর, যুবকের দল। কিন্তু ৯০ শতাংশ খ্রীষ্টান অধ্যুষিত এই রাজ্যে রবিবারের প্রার্থনাটাই অনেকসময় বাদ পড়ে যাচ্ছিল যে। তাই প্রেসবেটেরিয়ান গির্জার তরফে, সিনড মডারেটর রেভারেন্ড থাংজুয়া ও সিনডের সম্পাদক উপা ডিপি বাইয়াখুমা বিবৃতি জারি করেছেন, “মিজোরামের সকলকে আবেদন করা হচ্ছে রবিবারে কেউ যেন
খেলাধুলো না করেন। মিজোরাম খ্রিস্টান রাজ্য। রবিবার আমাদের অত্যন্ত পবিত্র দিন। এই দিনের পবিত্রতা বজায় রাখুন।” অবশ্য, বিবৃতিতে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি, ক্রীড়াজগতে সাফল্যের জন্য মিজো যুবকদের অভিনন্দনও জানানো হয়েছে।
কিন্তু রাজ্য জুড়ে প্রশ্ন উঠেছে, খেললেই কী পবিত্রতা নষ্ট হয়? শরীরচর্চা কি ধর্মপালনে ব্যাঘাত ঘটায়? এর আগে গির্জার হুলিয়ায় ১৫ বছর ধরে রাজ্যে মদ্যপান নিষিদ্ধ ছিল। শেষ অবধি স্থানীয় আঙুরের তৈরি জাওলাইদি তথা রেড ওয়াইন উৎপাদনে সম্মতি দেয় গির্জা। তাও আবার রাজ্যের বাইরে তা বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েইছে। কিন্তু এ বার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে খেলাধুলোর উপরেই নিষেধাজ্ঞা জারি মেনে নিতে পারছেন না রাজ্যবাসী। সেভেন্থ ডে অ্যাডভেনটিস্ট চার্চের তরফে জোনাথন এল নামতে বলেন, “প্রেসবিটেরিয়ান চার্চের এ হেন নিষেধাজ্ঞা রাজ্যের জনতার আবেগে আঘাত করছে। আমরা, ক্যাথলিকরা সকলেই রবিবারকে পবিত্র দিন বলে মানি। প্রার্থনা করি। কিন্তু তার সঙ্গে খেলার কী সম্পর্ক?”
১৯৪৫ সালে তৈরি মিজোরাম ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনও গির্জার ঘোষণায় অবাক। তাদের তরফে ভানলালমোইয়া জানান, খেলাধুলোই এই রাজ্যের মানুষের প্রাণ।
রবিবার ছুটির দিনে ছোটরা খেলবে না? ফুটবল অনুশীলন হবে না, তা হয় না কী? গির্জাকে সিদ্ধান্ত ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ করা হবে। মিজোরামের বৃহত্তম ছাত্রসংগঠন ইয়ং মিজো অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি টি সাংকুয়ামার কথায়, “নির্দেশের কথা আমরা শুনেছি। রবিবার খেলা একেবারে বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি বিতর্কিত। ধর্ম ও বিনোদনের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। আমরা আলোচনা করেই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.