কর্মাধ্যক্ষকে ছাতাপেটা করার অভিযোগের এক সপ্তাহের মধ্যেই দলের দখলে থাকা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন তৃণমূল কংগ্রেস সদস্যরা। তুফানগঞ্জ-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীপালি রায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে মহকুমা শাসকের কাছে চিঠি দিয়েছেন দলেরই ১৩ জন পঞ্চায়েত সমিতি সদস্য। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, অনাস্থার চিঠিতে দীপালি দেবীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং ইচ্ছামতো পঞ্চায়েত সমিতির কাজকর্ম চালানোর অভিযোগ আনেন দলের সদস্যরা। ২৮সেপ্টেম্বর দীপালি দেবীর বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটির জন্য তলবি সভার তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে। তৃণমূল তুফানগঞ্জ-১ ব্লক সভাপতি ফজল করিম মিঁয়া বলেন, “দীপালিদেবীর নামে দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ অমান্য করা-সহ নানাবিধ অভিযোগ ছিল। ওঁকে বহু বার সতর্ক করেও লাভ হয়নি। দলের একটি বৈঠকে উনি এক কর্মাধ্যক্ষকে ছাতা নিয়ে হামলা করেন। দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় অনাস্থা আনতে হয়েছে।” গত পঞ্চায়েত ভোটে বামেদের দখলে থাকা এই সমিতি তৃণমূল দখল করে। সভাপতি হন দেওচড়াইয়ের দীপালি রায়। দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক মাস পর থেকেই দলের ব্লক ও জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে দীপালি দেবীর সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়। স্কুলে পঞ্চায়েত সমিতির প্রতিনিধি চূড়ান্ত করা, অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগ থেকে বিভিন্ন প্রকল্প ও উপভোক্তাদের তালিকা চূড়ান্ত করার মতো বিষয়ে নেতৃত্বের সঙ্গে বিরোধ বেড়ে যায়। কিছুদিন আগে মুরগি বিলি প্রকল্প নিয়ে বিরোধীরা অভিযোগ তুললে দলে অস্বস্তি বাড়ে। গত রবিবার তুফানগঞ্জ নিউটাউন এলাকায় কর্মী বৈঠকের ডাক দেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সেখানে দীপালি দেবীর সঙ্গে কর্মাধ্যক্ষ রতন দাসের বাদানুবাদ হয়। রতনবাবুর হাতের ছাতা কেড়ে নিয়ে তাঁর ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে দীপালি দেবীর বিরুদ্ধে। দলের তদন্ত রিপোর্টও দীপালি দেবীর বিরুদ্ধে যায়। পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূল সদস্য আবদুস সাত্তার বলেন, “সভাপতির জন্য দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে এলাকায়।” পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রতনবাবু মন্তব্য করতে রাজি হননি। সভাপতি দীপালি দেবী বলেছেন, “আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। সদস্যদের জোর জবরদস্তি করে অনাস্থার চিঠিতে সই করানো হয়েছে। আমি রতনবাবুর উপর হামলা করিনি। রতনবাবুই ছাতা নিয়ে আমার ওপর চড়াও হন। প্রতিরোধ করে আমিই নিজেকে রক্ষা করি মাত্র।” ওই পঞ্চায়েত সমিতির আসন ৩৫টি। এক জন সদস্য মারা গিয়েছেন। তৃণমূলের ১৯, বিজেপির ৩ ও সিপিএমের ১২ জন। তুফানগঞ্জের মহকুমা শাসক পালদেন শেরপা বলেন, “২৮ সেপ্টেম্বর তলবি সভা ডাকা হয়েছে। ফল দেখেই পরবর্তী পদক্ষেপ হবে।” |