তৃণমূল-কংগ্রেস ‘বিচ্ছেদ’ হতেই শিলিগুড়ি, ইংরেজবাজার-সহ উত্তরবঙ্গের একাধিক পুরবোর্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। বর্তমান পরিস্থিতিতে কী করণীয় তা ঠিক করতে উভয় দলের তরফেই জেলা নেতারা শুক্রবার সন্ধ্যায় তড়িঘড়ি বৈঠকে বসেছেন। দলীয় সূত্রের খবর, রাত পর্যন্ত কোথাও, কোনও দলের তরফে সমর্থন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করা হয়নি। কংগ্রেস, তৃণমূল উভয় দলের একাধিক জেলা স্তরের নেতা জানান, প্রদেশ নেতৃত্বের নির্দেশ পেলেই সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে। এ দিন সন্ধ্যায় শিলিগুড়ি পুরবোর্ডের দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। বৈঠকের পরে তিনি জানান, শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্তের কাজকর্মে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। তিনি বলেন, “আমরা দু-একদিনের মধ্যেই মেয়রকে চিঠি পাঠিয়ে অসন্তোষের কথা জানিয়ে দেব।” ওই চিঠির মাধ্যমে সমর্থন প্রত্যাহার করা হবে কি না সেই প্রশ্নে গৌতমবাবুর মন্তব্য, “আপাতত চিঠি দেব এটুকুই বলছি। আগামী দিনে সবই স্পষ্ট হয়ে যাবে।” শিলিগুড়ি পুরসভার মোট কাউন্সিলর ৪৭ জন। তার মধ্যে কংগ্রেস ও তৃণমূলের দখলে রয়েছে ১৫টি করে। বাকি ১৭টি বামেদের রয়েছে। ভোটের ফল প্রকাশের পরে প্রথমে বামেদের দখলে বোর্ড গঠন করেছিল কংগ্রেস। পরে মেয়র ইস্তফা দিলে তৃণমূল সমর্থন করবে বলে শর্ত দেয়। সেই মতো মেয়র ইস্তফা দিলে তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন করে। দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস (সমতল) সভাপতি শঙ্কর মালাকার বলেন, “মেয়র দক্ষভাবে কাজ করছেন। কোনও প্রশ্ন থাকলে তা নিয়ে তৃণমূল আলোচনা করতে পারে। মতানৈক্য হতে পারে। তবে মানুষকে জোটবদ্ধ ভাবে বোর্ড চালানোর যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তা থেকে তৃণমূল সরবে না বলেই আমরা আশাবাদী।” সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর কার্যকরী সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন, “আমরা সুবিধাবাধী অবস্থানে বিশ্বাস করি না। পুরবোর্ড কোনও কাজ করতে পারছে না। সব দিক দেখে অবস্থান জানাব।” কোচবিহার পুরবোর্ডে কংগ্রেসের দখলে চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের ভাইস চেয়ারম্যান পদ রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “প্রদেশ নেতৃত্ব নির্দেশ দিলেই আমরা সেই মতো কাজ করব।” তবে কোচবিহার জেলা কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল চৌধুরীর দাবি, তৃণমূল সমর্থন প্রত্যাহার করলেও তাঁরা ৫ বছর বোর্ড চালাতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে বামেদের সমর্থন নেওয়া হবে কি না সেই প্রশ্নে শ্যামলবাবু কোনও মন্তব্য করেননি। কোচবিহার পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের মহানন্দ সাহা বলেন, “পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।” এদিকে, মালদহের ইংরেজবাজারে কংগ্রেসের দখলে চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের রয়েছে ভাইস চেয়ারম্যান পদ। তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “দলনেত্রীর নির্দেশ মতো পদক্ষেপ করা হবে।” মালদহের জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, “প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব যেমন বলবেন, সেই মতো কাজ হবে।” সিপিএমের মালদহ জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র জানান, তাঁরা কাউকে সমর্থন করার কথা আপাতত ভাবছেন না। |