রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গি নির্ণয়ে রক্ত পরীক্ষা শুরু হওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই এক মহিলার রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়ল। এই প্রথম জেলা হাসপাতালে কোনও রোগীর শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়ল। হাসপাতাল সূত্রের খবর, মহকুমা হাসপাতাল থেকে জেলা হাসপাতালে উন্নীত হওয়ার ২০ বছর পার হয়ে হাসপাতালে ওই কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছিল না বলে অভিযোগ ওঠে। এতে প্রতিদিনই জ্বরে আক্রান্ত বহু রোগীকে বাইরের বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল সেন্টারগুলি থেকে ডেঙ্গি নির্ণয়ের রক্ত পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিতেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বহু দুঃস্থ রোগী টাকার অভাবে সমস্যা পড়তেন। বিষয়টি নিয়ে আলোড়ন পড়তেই নড়েচড়ে বসে স্বাস্থ্য দফতর। গত বুধবার শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতালে ডেঙ্গি রোগ নির্ণয়ের ১০০ কিট সরবরাহ করে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে ঘোষণা করা হয়। ওই দিন থেকেই হাসপাতালের ডেঙ্গি রোগ নির্ণয়ের রক্ত পরীক্ষার কাজও শুরু হয়ে যায়। গত দুই দিন হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন দুই শিশু, এক মহিলা-সহ ৭ জনের রক্ত পরীক্ষা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে সেই পরীক্ষার ফল বার হওয়ার পর দেখা যায়, জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের বাঘন এলাকার বাসিন্দা ৩৫ বছর বয়সী শিউলি রায় নামের এক মহিলার শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে। তিনি জ্বর নিয়ে গত মঙ্গলবার থেকে হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। এদিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে সরকারিভাবে ওই মহিলা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে ঘোষণা করা হয়। হাসপাতালের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট হিরন্ময় দত্তচৌধুরী বলেন, “এই প্রথম হাসপাতালে রোগীর শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়ল।” হাসপাতাল সুপার অরবিন্দ তান্ত্রি বলেন, “কিট না থাকার কারণেই আমরা ডেঙ্গি রোগ নির্ণয়ের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে পারিনি। ওই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত মহিলা যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন সেই বিষয়ে নজর রাখা হয়েছে।” পেশায় দিনমজুর শিউলিদেবীর স্বামী উত্তমবাবু জানান, হাসপাতালে ডেঙ্গি নির্ণয়ের পরিকাঠামো গড়ে না উঠলে টাকার অভাবে স্ত্রীকে বাইরের বেসরকারি প্যাথলোজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ওই পরীক্ষা করানো সম্ভব হত না। গত দেড়মাসে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১৫০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও প্রত্যেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। এছাড়া ৭০ জন বাইরে পরীক্ষা করালেও তাঁদের ডেঙ্গি ধরা পড়েনি। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, বাইরে ওই পরীক্ষা করাতে ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা লাগে। এতে দুঃস্থরা সমস্যায় পড়েন। |