চেক ক্লিয়ারিংয়ে দেরি, সমস্যায় ব্যবসায়ীরা
প্রায় ১০ লক্ষ টাকা ঋণের অ্যাকাউন্টে ৫০ হাজার টাকার চেক জমা দেন শিলিগুড়ি শহরের এক কাপড়ের ব্যবসায়ী। ব্যাঙ্কের নিয়ম অনুসারে দুই দিনের মধ্যে তা ‘ক্লিয়ারিং হাইসে’র মাধ্যমে ওই ঋণ অ্যাকাউন্টে জমা হওয়ার কথায়। টাকা জমা হল ঠিকই। কিন্তু চারদিন পর। এতে অতিরিক্ত দুই দিনের ঋণের সুদ গুনতে হল ব্যবসায়ীকে। পাশাপাশি, জমা দেওয়া টাকারও তিনি কোনও সুদের সুবিধা পেলেন না। আবার, আরেক ব্যবসায়ী টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে চেকের মাধ্যমে টাকা জমা দিলেও সপ্তাহের শনিবার, রবিবার পড়ে যাওয়ায় টাকা জমা হতে লেগে গেল সপ্তাহের মোট পাঁচদিন। পুজোর মরশুমের মুখে শিলিগুড়িতে চেক, ড্রাফ্ট ক্লিয়ারিং নিয়ে এমন হওয়ায় জেরবার ব্যবসায়ীরা সম্প্রতি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (আরবিআই) দ্বারস্থ হন। উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীদের সর্ববৃহৎ সংগঠন ফোসিনের তরফে আরবিআই-এর ব্যাঙ্কের বিশেষ শাখা ‘ন্যাশনাল ক্লিয়ারিং সেন্টারে’ কলকাতার সেন্টারে লিখিতভাবে অভিযোগ জানানো হয়। ২৮ অগস্ট আরবিআই-র ওই শাখা থেকে শিলিগুড়ি ক্লিয়ারিং হাউস স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াকে (এসবিআই) একদিনের মধ্যে চেক ক্লিয়ারিং এবং রির্টানের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি, শনিবারও ওই কাজ যেন করা হয় তা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে। ন্যাশন্যাল ক্লিয়ারিং সেন্টারের কলকাতার ম্যানেজার গৌতম মণ্ডল ওই নির্দেশ পাঠান। আরবিআই নির্দেশ পেয়ে তা কার্যকর করার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এসবিআই-র শিলিগুড়ি ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, “আরবিআই-র ওই নির্দেশ রয়েছে। আমরা বিষয়টি দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি।” কিন্তু সেই নির্দেশিকা এখনও ঠিকঠাক মানা হচ্ছে না বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। ফোসিনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “আরবিআই-কে আমরা চিঠি লিখে সমস্যার কথা জানাই। সেখান থেকে একই দিনে ক্লিয়ারিং, রিটার্নের নির্দেশ দেওয়া হয়। তার পরেও অনেক সময়ই ক্লিয়ারিং সময় বেশি লাগছে। এতে ব্যবসায়ীদের সমস্যা পড়তে হচ্ছে। ঋণ, আমানত অ্যাকাউন্ট সুদের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের লোকসান হচ্ছে।” ফোসিনের সম্পাদকের কথায়, শিলিগুড়িতে কয়েকশো কোটি টাকার লেনদেন হয় প্রতিদিন। শ’য়ে শ’য়ে চেক, ড্রাফট জমা পড়ে। এতে দিনে দিনে কাজ না হলে আর্থিক লোকসান হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। আরবিআই সূত্রের খবর, গোটা দেশে ৮৬০ টি ক্লিয়ারিং হাউস রয়েছে। এরমধ্যে ৮৪০টি স্টেট ব্যাঙ্ক এবং তার সহযোগী ব্যাঙ্কগুলি নিয়ন্ত্রণ করে। আরবিআই-র নিজস্ব ক্লিয়ারিং হাউস রয়েছে ১৪টি। এ ছাড়াও আরও ৬টি অন্য রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কগুলি দেখভাল করে। ইলেকট্রনিক ক্লিয়ারিং সিস্টেমেরও ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিদিন সকাল-বিকেল মিলিয়ে দু’দফায় ক্লিয়ারিং-র হয়। পরেরদিন বিকেলের মধ্যে তা নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে ডেবিট-ক্রেডিট করার নিয়ম রয়েছে। এই ক্ষেত্রে তা তিন থেকে চারদিন লেগে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। শহরের কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের কয়েকজন অফিসার জানান, একসঙ্গে বহু চেক, আউটস্টেশন চেক এবং নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকলে রিটার্ন চেকের ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াগত কারণে সময় লেগেই যায়। শুধু ব্যবসায়ী নয়, বাসিন্দাদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে যত দ্রুত সম্ভব চেক, ড্রাফ্ট ক্লিয়ারিং করার চেষ্টা করা হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.