জলাধারের জল ঢুকে ভেঙে দিয়েছে রাস্তার কালভার্ট ও বাঁশের অস্থায়ী সাঁকো। ফলে গ্রাম থেকে বাইরে বের হওয়ার দু’টি রাস্তাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে বাসিন্দারা বিপাকে পড়েছেন।
রঘুনাথপুর ২ ব্লকের নতুনডি পঞ্চায়েতের চাঙ্গুড়ি গ্রামের ঘটনা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় তাঁরা রয়েছেন। স্থানীয় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের কাছে সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েও কাজ হয়নি। তাঁরা বিডিওকেও সম্প্রতি বিষয়টি জানিয়েছেন। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, টানা বৃষ্টিতে মৌতোড় জলাধারের জল বেশ বেড়ে গিয়েছিল। চাঙ্গুড়ি ওই জলাধারের নীচের দিকে অবস্থিত। জলাধারের লকগেট না খোলায় জল নীচের দিকে ওই গ্রামে ঢুকে পড়ে। ভেঙে দেয় গ্রামের দুই প্রান্তের দু’টি রাস্তার উপরে নির্মিয়মান কালভার্ট ও অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো। |
হাঁটু জল। চাঙ্গুড়ি গ্রাম থেকে স্কুলের পথে পড়ুয়ারা।—নিজস্ব চিত্র। |
গ্রামবাসী জয়ন্ত মিশ্র, শোভন মিশ্ররা জানান, গ্রাম থেকে বাইরে যাওয়ার দু’টি রাস্তা রয়েছে। একটি সুন্দরাবাঁধ গ্রাম হয়ে রঘুনাথপুর যাওয়ার রাস্তা। অন্যটি মৌতোড় গ্রাম হয়ে ব্লক সদর চেলিয়ামা যাওয়ার রাস্তা। প্রথম রাস্তার উপরে কালভার্ট নির্মাণ করছিল পঞ্চায়েত। নিমাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছিল। কিন্তু জলাধারের জল নেমে এসে ওই কালভার্টটি পুরো ভেঙে দেয়।
অন্য দিকে, মৌতোড় যাওয়ার রাস্তার উপরে অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছিলেন গ্রামবাসীরাই। জলের তোড়ে তাও ভেঙে গিয়েছে। ফলে স্কুল, হাসপাতাল- সহ দৈনন্দিন কাজে বাসিন্দাদের জল পেরিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অনেকের পোশাকও ভিজে যাচ্ছে। বিশেষত বয়স্ক ও শিশু-মহিলারা সমস্যায় পড়েছেন। বাসিন্দারা জানান, জল পার হতে গিয়ে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্র জলে কিছু দূর ভেসে গিয়েছিল। বাসিন্দা শোভন মিশ্র, অমর মুদিরা বলেন, “বড়রা তখন কাছে থাকায় ওই ছাত্রটিকে উদ্ধার করা গিয়েছিল। কিন্তু বড়রা না থাকলে বিপর্যয় ঘটে যেত।” তাঁদের ক্ষোভ, প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাচ্চাগুলিকে স্কুলে পাঠাতে সাহস হচ্ছে না। অথচ পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে জানালেও তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তাঁরা জানান, বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করার জন্য বিডিওকে আবেদন জানানো হয়েছে।
রঘুনাথপুর ২ ব্লকের বিডিও উৎপল ঘোষ বলেন, “চাঙ্গুড়ি গ্রামে দু’টি রাস্তার উপরে দু’টি সেতু জলের তোড়ে ভেঙে যাওয়ায় গ্রামবাসীরা সমস্যায় পড়েছেন বলে শুনেছি। ওই পঞ্চায়েতকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” পঞ্চায়েত সূত্রে জানানো হয়েছে, এখনও রাস্তার উপরে জল থাকায় সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ করতে সমস্যা হচ্ছে। তবে বিকল্প রাস্তা নির্মাণ দ্রুত করা হবে। |