বনধের দিন, বৃহস্পতিবার স্কুল বন্ধ রাখায় শুক্রবার স্কুলে বিক্ষোভ দেখাল তৃণমূল। শিক্ষকদের ঘেরাও করে বিক্ষোভও দেখানো হয়। কাশীপুরের গগনাবাইদ অঞ্চল উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের ঘটনা।
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বনধে গগনাবাইদ স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শিক্ষকরা। আগের দিন, বুধবার ছাত্রছাত্রীদের তা জানিয়েও দেওয়া হয়েছিল। শিক্ষকরা স্কুলে আসেননি। তৃণমূলের দাবি, শিক্ষকরা এ ভাবে বন্ধ সমর্থন করে স্কুল বন্ধ রাখতে পারেন না। স্কুল বন্ধ রাখায় সে দিন ইউনিট টেষ্টও বাতিল করা হয়েছে। এ দিন স্কুল খোলার সময় তৃণমূলের শতাধিক কর্মী-সমর্থক স্কুলে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। ঘেরাও করে রাখা হয় শিক্ষকদের। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা সন্তোষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, বনধের দিন এই পঞ্চায়েত এলাকার অন্যান্য সমস্ত স্কুলই খোলা ছিল। শুধুমাত্র এই স্কুল বন্ধ রাখা ছিল। তাঁর অভিযোগ, “বনধে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি খুলে রাখার জন্য রাজ্য সরকারের নির্দেশ থাকলেও এই স্কুল কর্তৃপক্ষ তা অমান্য করেছে।” তবে স্কুলের টিচার-ইনচার্জ সুধাংশু মণ্ডলের দাবি, “স্কুলের সব শিক্ষকরা মিলে বনধের দিন স্কুল বন্ধ রাখার লিখিত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কারণ, স্কুলের শিক্ষকেরা সকলেই সিপিএম প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠনের সদস্য। তাই বনধের সমর্থনে স্কুলে না আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শিক্ষকদের সিদ্ধান্ত স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদককে জানিয়েও দেওয়া হয়।” তৃণমূল প্রশ্ন তোলে সরকারি নির্দেশ তাঁরা কী ভাবে অমান্য করলেন? শিক্ষকদের একাংশের পাল্টা দাবি, “গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোয় যে কেউ বন্ধ সমর্থন করতেই পারেন। এ বারের বনধের কারণও সাধারণ মানুষের স্বার্থের পরিপন্থী। তাই স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।” তাঁরা জানান, প্রয়োজনে অনুপস্থিত থাকার জন্য প্রাপ্য ছুটি নেবেন।
জেলা শিক্ষা দফতরের আদ্রা চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সুধাংশু শেখর চক্রবর্তী জানান, বৃহস্পতিবার ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ফোন করে স্কুল বন্ধ রয়েছে বলে জানতে পান। সে দিনই বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বনধের দিন সরকারি প্রতিষ্ঠানে সবার হাজির থাকা নিয়ে সরকারি নির্দেশ ছিল। এ বার কিন্তু এই ধরনের নিদের্শ আমি পাইনি। ফলে গগনাবাইদ হাইস্কুলের শিক্ষকরা বনধের দিনে অনুপস্থিত থেকে ছুটি পাবেন কি না বা তাঁদের বেতন কাটা যাবে কি নাসে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। ওই নির্দেশ পেলে কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠাব। তাঁরাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।” গত ফেব্রুয়ারি মাসের বনধে অবশ্য ওই স্কুল খোলা ছিল। অন্য দিকে, রঘুনাথপুরের বাবুগ্রাম হাইস্কুলের এক কর্মী বনধের দিন স্কুল যাতে না খোলা যায়, সে জন্য দরজার তালা পাল্টে দিয়ে গাঢাকা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। বন্ধ উপেক্ষা করে স্কুলে এসেও ঢুকতে পারেননি শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা। এ ব্যাপারে জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) রাধারানি মুখোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগ পেলে গগনাবাইদ স্কুলের শিক্ষকদের ও বাবুগ্রাম হাইস্কুলের ওই কর্মীকে কারণ জানতে চাওয়া হবে।” |