তৃণমূলকর্মী খুন হওয়ার দু’দিনের মধ্যেই মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতার করল পুলিশ। বুধবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ার ঘুসিঘাটা এলাকায় উত্তর কুলটির বাসিন্দা প্রসেনজিৎ মণ্ডল খুন হয়েছিলেন। ঘটনার পরদিন কুলটি লকগেটের কাছে বিদ্যাধরী নদীর চরায় তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তদন্তে নেমে ওই দিনই পুলিশ টগর মণ্ডল নামে এক যুবককে আটক করে। তাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, স্বপন মণ্ডল নামে এক যুবকের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে খুন হয়েছেন প্রসেনজিৎ। শুক্রবার বিকেলে স্বপন মণ্ডলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। স্থানীয় তৃণমূল নেতারা অবশ্য দাবি করেছিলেন, সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই প্রসেনজিৎকে খুন করেছে।
বসিরহাটের এসডিপিও আনন্দ সরকার বলেন, “শনিবার প্রসেনজিৎ খুনে প্রধান অভিযুক্ত টগর মণ্ডল এবং স্বপন মণ্ডলকে বসিরহাটের এসিজেএম আদালতে তোলা হবে।”
পুলিশ জানায়, ঘুসিঘাটা এলাকার একটি ইটভাটায় কাজ করতেন স্বপনের স্ত্রী, প্রসেনজিৎ এবং তাঁর মা। সেখানেই স্বপনের স্ত্রীর সঙ্গে প্রসেনজিতের পরিচয় হয়। তাঁদের মধ্যে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে দাবি এলাকার লোকের। গত কয়েক মাস আগে এই সম্পর্কের কথা জানতে পারে স্বপন। এ নিয়ে স্ত্রী-র সঙ্গে তার গণ্ডগোল হয়। তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, এলাকার একটি মেছোভেড়িতে স্বপনের সঙ্গে কাজ করত প্রসেনজিতের বন্ধু টগর। তাকে সঙ্গে নিয়ে প্রসেনজিৎকে খুনের পরিকল্পনা করে স্বপন। বুধবার রাতে টগরকে দিয়ে যাত্রা দেখার নাম করে প্রসেনজিৎকে ডাকিয়ে আনে স্বপন। ঘুসিঘাটা এলাকার একটি নির্জন জায়গায় তিন জনে বসে মদ খায়। ধৃতদের জেরার পর পুলিশ জানিয়েছে, এরপরেই সুযোগ বুঝে দা দিয়ে প্রসেনজিৎকে কুপিয়ে খুন করা হয়। জোয়ারের জলে দেহটি ভেসে যাবে ভেবে তারা নদীর চরে ফেলে দিয়ে যায়।
এ দিকে, কেউ যাতে সন্দেহ না করে সে জন্য ঘটনার পরদিন মৃতদেহ উদ্ধারের সময় দু’জনেই ঘটনাস্থলে যায়। এমনকী দেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময়ও টগর সেখানে উপস্থিত ছিল। পালিয়ে গেলে পুলিশ সন্দেহ করবে মনে করে স্বপনও গ্রামেই ছিল। টগরকে জেরার পর গোটা ঘটনাটি জানতে পেরে শুক্রবার ঘুসিঘাটা বাজারে হানা দেয় হাড়োয়া থানার পুলিশ। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। |