দু’ পাশে দুই সাংসদ, অধীর চৌধুরী ও মান্নান হোসেন। মধ্যে জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের প্রার্থী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। বহরমপুরে কংগ্রেসের জেলা কার্যালয় থেকে এ ভাবেই মিছিল করে কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে শুক্রবার কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ছেলে অভিজিৎ।
প্রায় একই সময় সি পি এমের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে লোকশিল্পীদের নিয়ে মিছিল করে কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে মনোনয়ন জমা মুজাফ্ফর হোসেন। ওই কেন্দ্রের অন্য প্রার্থী পেশায় আইনজীবী বিজেপি-র সুধাংশু বিশ্বাসও এ দিন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
তবে তৃণমূলও ওই কেন্দ্রে প্রার্থী দেবে নাকি পুরনো সখ্য মেনে নিজেদের সরিয়ে রাখবে তা অবশ্য এ দিন খোলসা করেনি জেলা তৃণমূল। |
দলের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক মহম্মদ আলি বলেন, “ওই কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আমরা প্রস্তুত। তবে ওই বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখনও কোনও নির্দেশ দেয়নি। নির্দেশ পেলে সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।” নলহাটির বিধায়ক অভিজিৎবাবু অবশ্য উপনির্বাচনের যুদ্ধে নিজেকে ‘নিমিত্ত মাত্র’ মনে করছেন। তিনি বলেন, “কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে লড়াই করেছেন শ্রীকৃষ্ণ। অর্জুন নিমিত্ত মাত্র। আমার সেনাপতি অধীর চৌধুরী। আমি নিমিত্ত মাত্র। বাবাকে বলা হত শিকড়হীন। বাবাকে জিতিয়ে সেই বদনাম ঘুচিয়েছেন অধীর। জঙ্গিপুর ছিল সি পি এমের দুর্গ। তাকে কংগ্রসের দুর্গ বানিয়েছেন অধীরবাবু। তাঁর উপর আমার একশো ভাগ ভরসা রয়েছে। তিনি বাবাকে জিতিয়েছেন। তিনি আমাকেও জেতাবেন।” অধীরবাবুর প্রতিক্রিয়া, “প্রণববাবুর নির্বাচনী কেন্দ্র দখলে রাখতে হবে এটাই আমাদের কাছে শেষ কথা। জেলা কংগ্রেসের সব কর্মীর কাছে এটা ইজ্জতের সওয়াল। ফলে কংগ্রেস কর্মীরা এককাট্টা হয়ে লড়াই করবে।” সেই লড়াই-এ দুটি বাধার সামনে পড়তে হবে অভিজিতকে।
অভিজিত নিজেই বলেন, “ওই কেন্দ্রের প্রায় ১৬ লক্ষ ভোটারের মধ্যে প্রায় দেড় লক্ষ ভোটার কাজের প্রয়োজনে জেলার ও রাজ্যের বাইরে রয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশই কংগ্রেসের ভোটার। রোজার ঈদের সময় তারা বাড়িতে এসে আবার কর্মক্ষেত্রে ফিরে গিয়েছেন। তাঁরা আবার বাড়ি ফিরবেন কোরবানির ঈদে ও পুজোয়। কিন্তু তার আগেই উপনির্বাচন। ফলে ওই ভোটারদের অনেকেই উপনির্বাচনে বাড়ি ফিরবেন না। সেটিই এখন বড় সমস্যা।” দ্বিতীয় সনস্যা প্রণববাবু, সিপিএমের নবগ্রাম লোকাল কমিটির সম্পাদক সঞ্জীব পাণ্ডের দাবি, “এ বার উপনির্বাচনে আমরা বকলমে রাষ্ট্রপতিকেই পরাজিত করব।” মুজাফ্ফরের কথায়, “জঙ্গিপুরে প্রণববাবু যা যা ভুল করেছেন, যা যা সর্বনাশ করেছেন সেই গুলিই আমরা প্রচারে তুলে ধরব।” সি পি এমের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যও বলেন, “মূল্যবৃদ্ধি, এফ ডি আই ইস্যু ছাড়াও গত ৮ বছর ধরে জঙ্গিপুরের ক্ষেত্রে যে বঞ্চনা হয়েছে তা প্রচারে আনা হবে।”
যা শুনে অভিজিতের পাল্টা দাবি, “জঙ্গিপুরের উন্নয়নের জন্য বাবা যে কাজ শুরু করেছিলেন অথচ শেষ হয়নি, সেই সব অসমাপ্ত কাজ আমি শেষ করব।” |