...গন্ধ এসেছে রূপসী বাংলা থেকে পালকির গান

সুনীলনগর সর্বজনীন:
‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি...।’ জীবনানন্দ দাশের ‘রূপসী বাংলা’র এই লাইনটিকেই পুজোর থিম হিসেবে বেছে নিয়েছে সুনীলনগর সর্বজনীন। প্লাই, পাট এবং কঞ্চি দিয়ে তৈরি মণ্ডপে এ বার দেখা যাবে ডুমুর, জাম, বট, কাঁঠাল, তমাল, হিজল, শটিবন, সোনালি ধান, ভাঁটফুল, ফণিমনসার ঝোপের দৃশ্য। উদ্যোক্তারা জানালেন, জীবনানন্দের কাব্যে বর্ণিত বাংলার প্রকৃতির বিভিন্ন রূপ তুলে ধরা হবে এ বারের মণ্ডপসজ্জায়।

পিকনিক পার্ক সর্বজনীন:
কোনও থিম নয়, নজরকাড়া মণ্ডপই পঁয়তাল্লিশ বছরের পুরনো এই পুজোর বৈশিষ্ট্য। ইসলামি স্থাপত্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে সেজে উঠছে এই মণ্ডপ। মণ্ডপটি তৈরি হচ্ছে থার্মোকল দিয়ে। প্রতিমা ডাকের সাজের।
বন্ডেল রোড একুশ পল্লি: কুড়ি হাজার ছোট-বড় ফ্রেমে বাঁধানো ছবি দিয়ে সাজানো হবে মণ্ডপ। দশমহাবিদ্যার দশটি রূপ দেখা যাবে বিভিন্ন ফ্রেমে বাঁধানো ছবিতে। উদ্যোক্তারা জানান, এক সময়ে বাঙালির দৈনন্দিন জীবনে ফ্রেমে বাঁধানো ছবির চাহিদা ছিল। তাই হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন ফ্রেমই এ বার মণ্ডপসজ্জার বিষয়।

পন্ডিতিয়া সন্ধ্যা সঙ্ঘ:
বইয়ের পাতায় নয়, জসিমুদ্দিন রচিত নকশিকাঁথার মাঠের বিভিন্ন কাহিনির দৃশ্য এ বার দেখা যাবে নকশি কাঁথাতেই। এই পুজোর বারো চালার মণ্ডপটি সাজানো হবে নকশিকাঁথা দিয়ে। কাঁথা স্টিচের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে ‘রূপাই’ এবং ‘সাজুর’ প্রেমকাহিনি। মণ্ডপের প্রবেশপথে নকশিকাঁথাতেই থাকবে লেখক জসিমুদ্দিনের জীবনের কিছু ছবি। এই মণ্ডপে প্রতিমার রূপও দেখা যাবে নকশিকাঁথাতেই।

শক্তি সঙ্ঘ, কসবা জুহুবাজার:
সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ‘পালকির গান’ই এ বার থিম কসবা জুহুবাজারের শক্তি সঙ্ঘের। এই ভাবনাকে রূপ দিতে ক্লাব প্রাঙ্গণ সাজানো হচ্ছে একটি ছোট গ্রামের অনুকরণে। তৈরি হচ্ছে বড় একটি পালকিও। মণ্ডপে প্রতিমাও থাকবে গ্রাম্য রমণীর রূপে।

সর্বজনীন ধর্মপ্রসারিণী সমিতি, মুখার্জিঘাট, ভবানীপুর:
মণ্ডপ সাজানো হবে মাদুর দিয়ে। মাদুরের উপরে থাকবে বাঁশকাঠি এবং হোগলার কারুকার্য। মণ্ডপ গড়তে কারিগরেরা আসছেন নদিয়া থেকে। প্রতিমা পটুয়াপাড়ার।
রূপচাঁদ মুখার্জি লেন সর্বজনীন দুর্গোৎসব: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের তালিকায় রয়েছে অজস্র লোক উৎসবও। তার মধ্যে চড়ক, টুসু, রথযাত্রা, ভাদু, ময়ূরপঙ্খি এবং নবান্ন উৎসবকে বেছে নেওয়া হয়েছে এই পুজোর মণ্ডপসজ্জার জন্য। ব্যবহার করা হচ্ছে বেত, বেড়া ও কাচের পুতুল। মণ্ডপে প্রতিমার রূপ ‘সংহারিণী’। দেবীর আঠারো হাত।

পদ্মপুকুর বারোয়ারি সমিতি:
ছিয়াত্তর বছরের পুজোর মণ্ডপটি হবে প্যাগোডার অনুকরণে। মণ্ডপ গড়তে কারিগর আসছেন নদিয়া থেকে। প্রতিমা পটুয়াপাড়ার। এই পুজোয় চন্দননগরের আলোকসজ্জা এবং বিসর্জনের শোভাযাত্রা অত্যন্ত আকর্ষণীয়।

প্রতাপাদিত্য রোড, ত্রিকোণ পার্ক:
এ বারের থিম শিবশক্তি পীঠ। ভারতের বারোটি শৈব তীর্থক্ষেত্রের অনুকরণে সেজে উঠছে এই পুজোর মণ্ডপ। বারোটি শৈব মন্দিরের মাঝখানে থাকবে প্রতিমা।
এ ছাড়াও এই এলাকায় উল্লেখযোগ্য পুজোর তালিকায় রয়েছে তিলজলা যুবকবৃন্দের পঞ্চদুর্গা, ভবানীপুর ঋত্বিক ক্লাব, পিকনিক সানরাইজ ক্লাব এবং নাটোর পার্ক গিরীন্দ্রশেখর সর্বজনীন দুর্গোৎসব।

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.