|
|
|
|
|
|
...গন্ধ এসেছে |
শিউলির সৌরভ
থিমের মঞ্চে যামিনী রায়। আবার পা বাড়ালেই বারাণসী।
নানা কর্মকাণ্ড ঘুরে দেখলেন বিতান ভট্টাচার্য ও শান্তনু ঘোষ |
|
|
কালাকার পাড়া: ৬৪তম বর্ষের পুজোর থিম ‘স্বর্গ-মর্ত্য’। বৃক্ষরোপণের সুফল ও কুফলের মাধ্যমে স্বর্গ ও মর্ত্যের চিত্র তুলে ধরা হবে। উদ্যোক্তারা জানান, গাছ লাগানোর ফলে মর্ত্যলোকে স্বর্গের মতো দূষণমুক্ত ও শান্তির পরিবেশ তৈরি করা যায়। কিন্তু কিছু অসাধু মানুষের চক্রান্তে সেই পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সেই ভাবনা বোঝাতে দেখানো হচ্ছে, মর্ত্যে কিছু গাছকে জড়িয়ে আছে কয়েকটি হাত। সেই হাতের আঘাতেই নষ্ট হচ্ছে গাছগাছালি। মর্ত্যে নামছে দূষণ। পাশাপাশি, গাছগাছালিতে ভরা স্বর্গ তৈরি করে দেখানো হচ্ছে সেখানকার শান্তি। যেখানে মেঘ ও পরীর মাঝে নটরাজ ভঙ্গিমায় রয়েছে প্রতিমা।
কর্মী সঙ্ঘ: নেপালের প্রাচীন দেবতা ভৈরবের আটটি রূপ দেখা যাবে নৈনান পাড়া লেনের ৬১তম বর্ষের এই পুজোমণ্ডপে। তাদের পুজোর ভাবনা, ‘শিউলির সৌরভে মেতেছি ভৈরবে’। নেপালের কালভৈরব মন্দিরের আদলে মণ্ডপ। ভৈরবের বিভিন্ন মূর্তির পাশাপাশি থাকবে প্রায় এক হাজার ঘণ্টা। প্রদীপের আলোয় ভৈরবের মন্দিরের ভিতরে আলো-আঁধারি পরিবেশে হবে বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণ।
বেলঘরিয়া মানসবাগ (১১ নম্বর বাস স্ট্যান্ড): বাংলার ব্রতকথা এ বারের থিম। তুলসী মঞ্চ, ব্রত পাঠ-সহ বাঙালির হারিয়ে যাওয়া আচার-অনুষ্ঠানকে তুলে ধরতে প্রতি বছর উদ্যোগী হন উদ্যোক্তারা। লক্ষ্মীর ঝাঁপির আদলে মণ্ডপে ব্যবহার হচ্ছে অগ্নিনিরোধক ও দূষণহীন রং। |
|
|
কর্মী সঙ্ঘ |
বেলঘরিয়া মানসবাগ |
|
নেতাজি কলোনি (লো ল্যান্ড): বিটি রোড থেকে বরাহনগর থানার পাশ দিয়ে কিছুটা এগোলেই পাওয়া যাবে ‘এক টুকরো বেনারস’। সেখানে গঙ্গার ঘাটে প্রতি সন্ধায় মঙ্গলারতি দেখার সুযোগ মিলবে। ঘাটে থাকবে নৌকো, বিশালাকৃতি ছাতা। এ সব দেখে ঘিঞ্জি গলি দিয়ে পৌঁছতে হবে স্থাপত্য ও ভাস্কর্যের মিশেলে তৈরি মন্দিরে। সেখানেই থাকবে শ্বেতপাথরের আদলে তৈরি প্রতিমা। থাকবে ফাইবারের তৈরি বিভিন্ন মূর্তি।
বরাহনগর মিলনগড়: ৫৮তম বর্ষের পুজোর থিম ‘কাগজের সাজে প্রকৃতির মাঝে’। উদ্যোক্তারা জানান, পেপার কুইলিং শিল্পের মাধ্যমে প্লাইবোর্ডের উপর ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে প্রকৃতির বিভিন্ন দিক। সেখানে গাছগাছালি থেকে পশু-পাখি, অধিবাসীদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ছবি ফুটে উঠবে। মণ্ডপে থাকবে সাজি কাজের আলো।
নেতাজি পার্ক সবর্জনীন দুর্গোৎসব কমিটি: হীরকজয়ন্তী বর্ষের এই পুজোর ভাবনায় মিশর। কাঠ খোদাই করে তৈরি হচ্ছে মিশরীয় শিল্পের কারুকার্য। কাঠের তৈরি প্রতিমা।
দেবীগড়: ৬৩তম বর্ষের এই পুজোর থিম, ‘আলোর ভেলায় পুজোর মেলা’। উদ্যোক্তারা জানান, পুরো মণ্ডপ জুড়ে থাকবে মায়াবী আলোর খেলা। কড়াইয়ের আকৃতির মণ্ডপের চারধারে ঝোলানো থাকবে ফানুস।
লেকপল্লি স্পোর্টিং: স্বামী বিবেকানন্দের জন্মের সার্ধ শতবর্ষ উপলক্ষে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে বেলুড় মঠের আদলে।
বরাহনগর ফকির ঘোষ লেন: বাংলার লোকসংস্কৃতি ও শিল্পই এ বার ফুটে উঠবে এই মণ্ডপে। খলপা শিল্পের ধাঁচে তৈরি চারচালা মণ্ডপ সাজানো হচ্ছে পটচিত্র দিয়ে। প্রতিমাও পটচিত্রের আদলে।
লেকভিউ পার্ক সর্বজনীন: বনহুগলির এই পুজোর ভাবনা, ‘গজবংশে যামিনী’। উদ্যোক্তারা জানান, দেবী দুর্গার এ বছর গজে আগমন। তাই মূল মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে বিশালাকার হাতির আদলে। আবার শিল্পী যামিনী রায়ের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী স্মরণে পুজোর গোটা ভাবনা জুড়ে অন্য আঙ্গিকে থাকবে তাঁর শিল্পকর্ম। বাঁশের ছিলা, পাতি ও গোটা বাঁশ ব্যবহার করে দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক আকারে শিল্পীর পেন্টিং ও চিত্রপট এই মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহার হচ্ছে।
|
লেকভিউ সর্বজনীন |
ঘোষপাড়া বন্ধু দল: ৫১তম বর্ষের এই পুজোর মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে ইস্কনের মন্দিরের আদলে। মণ্ডপ জুড়ে থাকবে ইস্কনের পরিবেশ। প্রতিমাও তৈরি হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের আদলে।
বরাহনগর মুন্সির বাগান: শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে মানুষকে আরও সচেতন করে তোলার ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ।
বরাহনগর কামারপাড়া সর্বজনীন: থিমের দৌড়ে সামিল হতে নারাজ এই সাবেক পুজোর উদ্যোক্তারা। তাঁদের কথায়, সারা বছরই সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষকে আলোয় ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়। যেমন, এ বছর পুজোর চার দিন ধরে চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পুজোর আগেই হবে বিনা ব্যয়ে স্বাস্থ্য শিবির।
বেলঘরিয়া পঞ্চাননতলা বাণীমন্দির: এ বার পুজোয় চাইলেই ঘুরে আসতে পারেন মিশরে। উষ্ণ বালুরাশি, খেজুর গাছ দিয়ে মিশরের মরুভূমির পরিবেশ তুলে ধরা হচ্ছে। ক্লিওপেট্রার দেশে মমি-সহ বিভিন্ন স্থাপত্যের আদলে হবে মণ্ডপ। প্রতিমাতেও মিশরীয় শিল্পের ছোঁওয়া। মানানসই আলো।
বেলঘরিয়া বসন্তবিহার: ত্রিপুরার মগ উপজাতিদের জীবনযাত্রা তুলে আনা হচ্ছে মণ্ডপে। প্রতিমাও সেখানকার উপজাতিদের আদলে।
বেলঘরিয়া বিবেকানন্দনগর: মন্দিরের আদলে মণ্ডপে সাবেক প্রতিমা।
বেলঘরিয়া বুড়োশিবতলা দেবায়তন সংরক্ষণ সমিতি: ৮৭বছরের পুজোয় প্রতিমার পরিবর্তন হয়নি কখনও। সাবেক একচালা প্রতিমায় ডাকের সাজ।
|
|
|
জাগরণী সঙ্ঘ |
আড়িয়াদহ প্রগতি সঙ্ঘ |
|
আড়িয়াদহ প্রগতি সঙ্ঘ: বিন্ধ্যবাসিনীতলার এই মণ্ডপের ভাবনায় পৃথিবীর সাত আশ্চর্য। মাধ্যম বালি শিল্প। বালির উপরে কারুকাজ করে পৃথিবীর সাতটি আশ্চর্য জিনিস ফুটিয়ে তুলবেন শিল্পীরা।
নিমতা নদীকূল উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতি: ৬০ বছরের ট্র্যাডিশন, ভক্তিপূর্ণ মাতৃ আরাধনাই এখানকার বৈশিষ্ট্য। মন্দিরের আদলে মণ্ডপে সাবেক প্রতিমা।
নন্দননগর গভঃ হাউজিং: প্রতিমা সাবেক হলেও মণ্ডপের থিম রঙিন পৃথিবী। উষ্ণায়ন-সহ বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সমস্যার মধ্যেও সুন্দর পৃথিবী গড়ার সঙ্কল্পের কথা থাকবে মণ্ডপের থিমে।
আড়িয়াদহ শ্রীকৃষ্ণ নগর জাগরণী সঙ্ঘ: কোনারকের সূর্যমন্দিরের আদলে মণ্ডপ।
আড়িয়াদহ কামারহাটি নৈশপ্রহরী ক্লাব: আধুনিকতার মাঝে সাবেকিয়ানা। কাল্পনিক মন্দিরের আদলে মণ্ডপ।
রামগড় জয়শ্রীনগর অ্যাসোসিয়েশন (আড়িয়াদহ বাসস্ট্যান্ডের কাছে): থিম ‘প্লাস্টিক বর্জন। আলোকসজ্জায় ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁশ। মণ্ডপ সাজছে স্টিলের চামচ, হাতা, খুন্তি, থালা ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে। দুর্গা এখানে ভবানী রূপে।
এ ছাড়াও বরাহনগরের ঘোষপাড়া সম্মিলনী, ফরওয়ার্ড কলোনি, শান্তনীড় হাউজিং এস্টেট, উত্তরায়ণ-সহ বেলঘরিয়া ও আড়িয়াদহের বেশ কয়েকটি সাবেক পুজো উল্লেখযোগ্য। |
|
|
|
|
|