জল সরবরাহ ও রাস্তা সারানোর দাবি জানাতে গিয়ে ইসিএলের এজেন্টকে হেনস্থার অভিযোগ উঠল স্থানীয় কিছু বাসিন্দার বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে রানিগঞ্জের জেকে নগর প্রজেক্টের ঘটনা। বিক্ষোভের নামে খনিমুখ বন্ধ করে দেওয়ায় ভূগর্ভে কিছু কর্মী আটকে পড়েন। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।
প্রজেক্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে তৃণমূলের অঞ্চল যুব সভাপতি সঞ্জিত মুখোপাধ্যায় ও সম্পাদক গিরিজা বর্মনের নেতৃত্বে এক দল বাসিন্দা খনি কার্যালয়ে জড়ো হন। বেলিয়াবাথানে জল সমস্যা ও কোলিয়ারি থেকে জেকে নগর মোড় পর্যন্ত বেহাল রাস্তা সংস্কারের দাবিতে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। রাতের পালিতে কাজে নামা কয়েক জন কর্মী তখনও ভূগর্ভে ছিলেন। বিক্ষোভকারীরা খনিমুখ বন্ধ করে দেওয়ায় তাঁরা আটকে পড়েন। তাঁদের উদ্ধার করার জন্য এজেন্ট এ কে পাণ্ডা নিমচা ফাঁড়িতে গিয়ে লিখিত অভিযোগ জানান।
প্রজেক্টের কর্মীদের দাবি, পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ওই এজেন্ট নিজের কার্যালয়ে ফেরার পরে বিক্ষোভকারীরা সেখানে হাজির হন। পুলিশের কাছে তিনি অভিযোগ করেছেন জেনে ওই এজেন্টকে হেনস্থা ও দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করা হয়। শেষে সাতগ্রাম এরিয়া কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভকারীরা নিরস্ত হয়। কোল ইন্ডিয়ার অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের ইসিএলের সম্পাদক দামোদর বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পুলিশের হস্তক্ষেপে দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ ভূগর্ভে আটকে থাকা কর্মীরা মুক্ত হন। |
তাঁর দাবি, “তৃণমূল কর্মীদের এমন আচরণে যদি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মীদের এই অবস্থা হয় তা হলে তো খনি-শিল্পাঞ্চলে কোনও বড় বেসরকারি সংস্থাও আসতে চাইবে না। আমরা মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি লিখে এ কথা জানিয়েছি। তৃণমূল কর্মীরা এজেন্টকে ভয় দেখিয়ে হেনস্থার অভিযোগও করতে দেননি। এমন চলতে থাকলে ইসিএলের অনেক আধিকারিকই কাজ করতে চাইবেন না।”
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে তৃণমূল নেতা সঞ্জিতবাবু ও গিরিজাবাবু জানান, বেলিয়াবাথানের মহাবীরস্থান এলাকায় জলের সমস্যার প্রতিকার চেয়ে আগেও বহু বার দাবিপত্র দেওয়া হয়েছে। রাস্তা সারানোর দাবিও দীর্ঘদিনের। বসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে এ দিন খনি কার্যালয় ঘেরাও করেন। তবে এই দুই তৃণমূল নেতার দাবি, আধিকারিকদের হেনস্থার অভিযোগ মিথ্যা। তৃণমূলের বর্ধমান জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক (শিল্পাঞ্চল) ভি শিবদাসন বলেন, “বিক্ষোভের নামে যা হয়েছে, তা নিন্দনীয়। তবে আমরা শুনেছি, তৃণমূল কর্মীরা নয়, স্থানীয় কিছু বাসিন্দাই এমন ঘটিয়েছেন।” দামোদরবাবুর অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেও দাবি তাঁর। এজেন্ট এ কে পাণ্ডের বক্তব্য, “আমি বিধ্বস্ত। এর বেশি কিছু বলার নেই।” পুলিশ জানায়, খনিকর্মীদের আটকে রাখার একটি অভিযোগ পেয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। |