বেশ কয়েক মাস ধরে বেতন মিলছে না। চূড়ান্ত আর্থিক অনটনে দিন কাটছে তাঁদের। প্রতিবাদে শুক্রবার দুর্গাপুরের সহকারী শ্রম আধিকারিকের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন বন্ধ হয়ে থাকা চারটি কারখানার প্রায় সাতশো শ্রমিক। তাঁদের দাবি, সামনেই দুর্গাপুজো। অন্তত তার আগে বকেয়া বেতন দেওয়া হোক। মহকুমাশাসক আয়েষা রানি এ জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে শ্রম দফতরের মধ্যস্থতায় দ্রুত সমস্যা মেটানো হবে।
বিক্ষোভ দেখাতে আসা শ্রমিকেরা জানান, লেনিন সরণি শিল্পতালুক এলাকার চারটি কারখানা একই মালিকপক্ষের অধীনে। তাদের মধ্যে একটি স্পঞ্জ আয়রন এবং অন্যগুলি মিশ্র ধাতব কারখানা। শ্রমিকদের অভিযোগ, কারখানাগুলি মাঝে-মধ্যেই বন্ধ থাকে। দু’টি কারখানা মাস ছয়েক ধরে বন্ধ। দু’মাস আগে বাকি দু’টিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গত চার মাস ধরে পাকাপাকি ভাবে বেতন বন্ধ। শুধু ঠিকা শ্রমিকেরা নন, বেতন পাচ্ছেন না স্থায়ী শ্রমিকরাও। কারখানা কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও কোনও ফল হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ। শুক্রবার চারটি কারখানার প্রায় সাতশো শ্রমিক সিটিসেন্টারে সহকারী শ্রম আধিকারিকের অফিসের সামনে জড়ো হয়ে অবিলম্বে বকেয়া বেতনের দাবি জানান। |
মিলন রায়, নিরঞ্জন বসুরা বলেন, “টানা বেতন না মেলায় সংসারে অনটন শুরু হয়েছে। তার উপরে সামনেই পুজো। কী ভাবে পরিস্থিতি সামলাব জানি না। শীঘ্র সমস্যা না মিটলে অনেককে পথে বসতে হবে।”
কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চেষ্টা করেও এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারখানার এক আধিকারিক জানান, কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি এবং উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় লোকসানের কবলে পড়েছে কারখানা। পাশাপাশি, শ্রমিকদেরও অনেকে কাজে অবহেলা করেন বলে তাঁর অভিযোগ। তাঁর দাবি, “বেতন না পেয়ে অনেকে কাজ ছেড়েছেন। চারটি কারখানায় এখনও শ’পাঁচেক শ্রমিক রয়েছেন।”
আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, কারখানা কর্তৃপক্ষের অনড় মনোভাবেই এই সমস্যা। তাঁর বক্তব্য, “প্রতি বছর পুজোর কয়েক মাস আগে থেকে শ্রমিকদের বেতন আটকে যায়। বোনাস দেওয়া নিয়েও টালবাহানা করা হয়।” তিনি জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কিছু দিন আগে বৈঠক করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাতে কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ প্রভাতবাবুর। তিনি বলেন, “এ দিনও বেশ কয়েক বার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। কিন্তু ধরা যায়নি।” মহকুমাশাসক আয়েষা রানির আশ্বাস, দ্রুত সমস্যা মেটানোর উদ্যোগ হবে। |