ছ’বছরে যা মেটেনি, তা মিটে গেল এক বছরেই!
২০০৬ সাল থেকে জমি হস্তান্তরের জটে আটকে গিয়েছিল হাওড়ায় আধুনিক মানের বহুতল আদালত ভবন তৈরির কাজ। রাজ্যে তৃণমূল সরকার আসার এক বছরের মধ্যে সেই জট কেটে গেল। রাজ্যে প্রথম বহুতল আদালত ভবন তৈরির সবুজ সঙ্কেত পেল জেলা প্রশাসন। এ জন্য প্রাথমিক ভাবে সরকারি অর্থ বরাদ্দও হয়ে গিয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, হাওড়া আদালত চত্বরের প্রায় ২৪ কাঠা জায়গায় ১২তলা ওই ভবন তৈরি হবে। এ জন্য জমি হস্তান্তরের কাজ শেষ। গত ১৮ বছর ধরে ভূমি রাজস্ব দফতরের হাত থেকে আইন দফতরের হাতে জমি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া আটকে ছিল। জেলাশাসক শান্তনু বসু বলেন, “জমি হস্তান্তর শেষ। প্রস্তাবিত ভবনটি যেখানে হবে, সেখানে এখন রয়েছে পুরনো পুলিশ সুপারের অফিস, আইনজীবীদের বসার আটচালা ও কিছু দোকান। এ জন্য কিছু দোকান ও আইনজীবীদের বসার জায়গা ভাঙতে হবে। সম্প্রতি ১৫ জন দোকানিকে উচ্ছেদ-নোটিস দেওয়া হয়।”
ওই আদালত চত্বরে অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষ ও আইনজীবীদের ক্ষোভ দীর্ঘ দিনের। এ নিয়ে গত ১৮ বছর ধরে বহু বিক্ষোভ-আন্দোলন হয়েছে। তবু আইনজীবীদের বসার জায়গা ও পরিবেশের উন্নতি হয়নি। পাঁকে ভরা খোলা নর্দমা, দুর্গন্ধ আর মাথায় অস্থায়ী চাল নিয়ে গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীতে কোনও ভাবে কাজ চালিয়ে এসেছেন আইনজীবীরা। এ বার বহুতল আদালত তৈরির ব্যাপারে সরকারের সবুজ সঙ্কেত পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি তাঁরা। ক্রিমিনাল কোর্ট বার লাইব্রেরির সভাপতি সমীর বসুরায়চৌধুরী বলেন, “এত দিনে আমাদের প্রচেষ্টা সার্থক হল। আমরা খুশি। এই ভবন তৈরি করতে গেলে কিছু সমস্যা হবে। কয়েকটি দোকান ও হোটেল উচ্ছেদ করা হবে। আইনজীবীদেরও সমস্যা হবে। তবে আমরা প্রশাসনকে বলব, পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করে উন্নয়নের কাজ হোক।”
একই দাবি ‘সিভিল বার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি গৌতম মুখোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, “উন্নয়ন হোক। কিন্তু যাঁদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে, তাঁদের বিকল্প ব্যবস্থাও প্রশাসনের করে দেওয়া উচিত। পুজোর আগে সেই ব্যবস্থা না হলে দোকানদারেরা খুব সমস্যায় পড়বেন।” মূলত কিছু দোকান ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ঘিরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে আদালত চত্বরে থাকা দোকানদারদের মধ্যে। উচ্ছেদের নোটিসের প্রতিবাদে ‘হাওড়া কোর্ট কম্পাউন্ড ব্যবসায়ী সমিতি’র পক্ষ থেকে ব্যবসা বন্ধের ডাকও দেওয়া হয়। পোস্টার পড়ে। সমিতির সভাপতি সমর মুখোপাধ্যায় বলেন, “মাত্র চার দিন আগে নোটিস দিয়ে ব্যবসায়ীদের উঠে যেতে বলা হয়েছে। এই পদ্ধতি ঠিক নয়। আমরা চাই দোকানদারদের উপযুক্ত পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করা হোক।” |