এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফেভারিট বাছতে বসা খুব কঠিন কাজ। আবেগ এবং যুক্তি ধরলে ভারত কিছুটা এগিয়ে। কিন্তু বাকি সাতটা টিম প্রায় গায়ে গায়ে থাকবে। ডার্ক হর্স হিসাবে অবশ্যই নিউজিল্যান্ড এবং বাংলাদেশের কথা বলতে হবে। এবং ঠিক এই কারণেই পাকিস্তানের পক্ষে সুপার এইটে ওঠার লড়াইটা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
গ্রুপিং যে ভাবে হয়েছে, তাতে বাকি সব ফেভারিট দলের সুপার এইটে ওঠা কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু পাকিস্তান যে পড়ে গিয়েছে গ্রুপ অব ডেথ-এ। আফ্রিদিদের সঙ্গে একই গ্রুপে রয়েছে নিউজিল্যান্ড এবং বাংলাদেশ। গ্রুপ থেকে দুটো দল সুপার এইটে যাবে। দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড (এক বার করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বাদ দিলে) এবং বাংলাদেশ বড় কোনও টুর্নামেন্ট কখনও জেতেনি। ফলে ওদের জেতার খিদেটা এ বার অনেক বেশি থাকবে। বিশ্বকাপ জয়ের গুরুত্বও এদের কাছে অনেক, অনেক বেশি।
এ বার ফেভারিটদের কথায় আসি। ভারতের কথা তো আগেই বলেছি। বাকিদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার কথা বলতেই হবে। ওদের ধারাবাহিকতার কোনও জবাব নেই। তা সে যেখানেই খেলুক না কেন। পাকিস্তানকে ইদানীং বেশ বিপজ্জনক দেখাচ্ছে। ওরা একটা ছন্দ পেয়ে গিয়েছে। বেশ গুছিয়েও নিয়েছে। তবে ইংল্যান্ড একটু সমস্যায় আছে কেভিন পিটারসেনকে নিয়ে। কেপি-কে নিয়ে নাটকটা এমন জায়গায় গিয়েছে যে ইংল্যান্ডের এখন মাঠের থেকে মাঠের বাইরে সমস্যা নিয়ে বেশি মাথা ঘামাতে হচ্ছে। ওরা হয়তো পিটারসেনের রানটা মিস করবে, কিন্তু কেপি-র উপস্থিতি এবং ওর ‘মেসেজ’ সব সময় ইংল্যান্ডের সঙ্গে থাকবে।
বাকি থাকল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওদের দেখে মনে হয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা যেন ওদের জন্যই তৈরি হয়েছিল। নিঃসন্দেহে ট্রফি জয়ের ওরা বড় দাবিদার। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। ওদের সাফল্যটা হয়তো অনেকটাই সুনীল নারিনের রহস্যময় স্পিনের উপর নির্ভর করে থাকবে।
শেষে আবার একবার ভারতের কথায় ফিরে আসি। আমার মনে হয় ধোনিদের চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে কয়েকটা ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করতে হবে।
এক) টুর্নামেন্টে সব চেয়ে বেশি রান করার তালিকায় ভারতের প্রথম দিকের তিন জন ব্যাটসম্যানকে থাকতে হবে।
দুই) উপমহাদেশের বাইরের দলগুলোর বিরুদ্ধে খেলতে নামলে দলে সব সময় দু’জন স্পিনার রাখতে হবে।
তিন) বিপক্ষকে চাপে রাখতে গেলে প্রথম দিকে দু’তিনটে উইকেট তুলে নিতে হবে।
চার) ভারতের পার্ট টাইম স্পিনারদের বোলিং পার্ট টাইম গোছের হলে হবে না।
পাঁচ) এই দলটার জেতার খিদে এবং মানসিকতা গত বছরের বিশ্বজয়ী দলের মতো হতে হবে।
আইপিএলের যুগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের একটা আলাদা মাত্রা থাকছে। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ বাদ দিলে আইসিসি-র অন্য ইভেন্টগুলো প্রায়ই হারিয়ে যায়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে বুঝিয়ে দিতে হবে আইপিএলের গ্ল্যামার বা অর্থ না থাকলেও গুরুত্বের দিক দিয়ে এই টুর্নামেন্ট অনেক এগিয়ে। |