এক দিকে, ডেকান চার্জার্স বনাম বোর্ড যুদ্ধ আদালতের কাঠগড়ায় উঠে পড়া। অন্য দিকে, বোর্ডের সংবিধান পাল্টে প্রাক্তন কর্তাদেরও পদাধিকারী হওয়ার সুযোগ।
শনিবার চেন্নাইয়ে বোর্ডের দফায় দফায় বৈঠকের নির্যাস হিসেবে দু’টো ঘটনাবলিই উঠে আসছে।
এ দিন সকালে নাটকীয় মোড় নেয় ডেকান বনাম বোর্ড ‘ম্যাচ’। বোর্ডের সিদ্ধান্তের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে মুম্বই হাইকোর্টে মামলা ঠুকে দেয় ডেকান কর্তৃপক্ষ। এমন খবরও ছড়িয়ে পড়ে যে, মুম্বই আদালত স্থগিতাদেশ দিয়ে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত রীতিমতো বিবৃতি জারি করে বোর্ডকে বলতে হয়, আদালত ওই রকম কোনও স্থগিতাদেশ জারি করেনি। আদালত দু’পক্ষের কথাই শুনেছে। সোমবার মামলার শুনানি হবে।
চেন্নাইয়ে এ দিন সন্ধেয় বোর্ডের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ডেকানের ভবিষ্যৎ নিয়ে কী করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। ঠিক ছিল, বোর্ড হয় নতুন টেন্ডার ডাকবে, নয়তো পিভিপি ভেঞ্চার্সকেই টিম বিক্রি করে দেবে, যেহেতু তারা ‘বিড’ আগেই জমা দিয়েছিল। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যেহেতু পুরো ব্যাপারটা আদালতের বিচারাধীন, তাই ডেকানের ভবিষ্যৎ-নির্ধারণ নিয়ে এ দিন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে বোর্ড জানিয়ে দিয়েছে, ডেকান শেষ পর্যন্ত খেলুক না খেলুক, আইপিএল সিক্সে নতুন টিমের সংযোজন ঘটবে। অর্থাৎ, ডেকান না খেললেও নয় টিমের আইপিএলই থাকছে। আর ডেকান শেষ পর্যন্ত খেলার ছাড়পত্র পেলে টুর্নামেন্ট হবে দশ টিমের। যদিও এ দিনের বৈঠকে হাজির থাকা বোর্ডের কোনও কোনও সদস্যের মনে হচ্ছে, সেই সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ডেকানের মামলা হারারই সম্ভাবনা বেশি। একই সঙ্গে বোর্ড জানিয়ে দিয়েছে, ডেকান চার্জার্স কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যাবতীয় চুক্তিপত্র বাতিল করার যে সিদ্ধান্ত বোর্ড নিয়েছে, তা একেবারে ন্যায্য।
ডেকান নিয়ে দু’পক্ষের টানাপোড়েন চলার মধ্যে আবার ওয়ার্কিং কমিটির সুপারিশ মেনে বিশেষ সাধারণ সভায় এ দিন গঠনতন্ত্রে দুটো বদল আনল বোর্ড। যার প্রভাব সুদূরপ্রসারী।
এত দিন নিয়ম ছিল, বোর্ডের কোনও পদে কারও মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সেই পদে আর আসতে পারবেন না। অর্থাৎ, কেউ যদি একবার বোর্ড প্রেসিডেন্ট বা সচিব হয়ে থাকেন, তাঁর আর দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট বা সচিব পদে আসার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বোর্ডের প্রাক্তন বা বর্তমান পদাধিকারীরা ফের তিন বছরের জন্য ওই পদে আসতে পারবেন।
দ্বিতীয়ত, বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী এক-এক অঞ্চল থেকে এক-একবার বোর্ড প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়। আগামী ২০১৪-তে যেমন হওয়ার কথা পূর্বাঞ্চল থেকে। কিন্তু নতুন নিয়ম বলছে, ওই নির্দিষ্ট অঞ্চলের কর্তাকেই যে প্রেসিডেন্ট বাছতে হবে এমন কোনও কথা নেই। বরং বাইরের কেউ লড়াইয়ে চলে আসতে পারে, যদি ওই নির্দিষ্ট অঞ্চলের দু’টি সংস্থার অনুমোদন জোগাড় করতে পারে। এর ফলে একাধিক নাম যদি বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদের জন্য উঠে আসে, তা হলে নির্বাচন হবে।
এবং বৈঠক শেষে এটাই জরুরি প্রশ্ন হিসেবে উঠে পড়ছে যে, তা হলে ‘টার্ন’ মেনে পূর্বাঞ্চল থেকে আগামী বোর্ড প্রেসিডেন্ট কে হতে চলেছেন? কারণ, নতুন নিয়ম মানলে সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়ারও সম্ভাবনাও থাকে পুরনো পদে ফিরে আসার। এ দিন বৈঠকে হাজির ছিলেন ডালমিয়া। ছিলেন বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট চিত্রক মিত্রও।
দেশের ক্রিকেট মহলের একাংশ বলছে, আগামী বার বোর্ড প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে এখনও এগিয়ে বিজেপি নেতা অরুণ জেটলি। কিন্তু সিএবি-র বক্তব্য, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের যেহেতু এক বছর বাকি, তাই অনেক কিছু ঘটতে পারে। বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদে ডালমিয়ার প্রত্যাবর্তনও মোটেই অসম্ভব নয় বলে মনে করছে সিএবি। |