শিল্পের জন্য জমির সমস্যা মেটাতে এ বার বন্ধ নুন কারখানার জমি কাজে লাগাতে চায় রাজ্য সরকার।
পূর্ব মেদিনীপুরের দাদনপাত্র এলাকায় বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা বেঙ্গল সল্ট কারখানার জমি এই লক্ষ্যে ব্যবহারের জন্য উদ্যোগী রাজ্যের ক্ষুদ্রশিল্পোন্নয়ন নিগম (ডব্লিউবিএসআইডিসি)। সেখানে ছোট ও মাঝারি শিল্পের জন্য তালুক গড়তে চায় তারা। ইতিমধ্যেই এলাকা পরিদর্শন করেছেন চেয়ারম্যান-সহ নিগমের কর্তারা।
রাজ্যের শিল্প পুনর্গঠন দফতর সূত্রের খবর, দাদনপাত্রে বেঙ্গল সল্টের বন্ধ কারখানায় ৭০০ একরেরও বেশি জমি রয়েছে। শ্রমিকদের বকেয়া প্রাপ্য-সহ কিছু সমস্যা মেটেনি বলে জমিকে বিকল্প কাজে লাগানো যাচ্ছে না। বাম জমানায় সেখানে বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছিল সুজলন গোষ্ঠী। শ্রমিকদের বকেয়া ও অন্যান্য খরচ মিটিয়ে জমিটি হাতে নিতে প্রাথমিক ভাবে সম্মত হয়েছিল বিদ্যুৎ দফতরও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জমি জট না-কাটায় সুজলন গোষ্ঠীর কয়েকশো কোটি টাকার লগ্নি হাতছাড়া হয় রাজ্যের।
ফের জমিটি শিল্পের কাজে লাগাতে তৎপর হয়েছে বর্তমান রাজ্য সরকার। ডব্লিউবিএসআইডিসি-র চেয়ারম্যান সব্যসাচী বাগচী জানান, জমিটি নতুন শিল্পের কাজে ব্যবহারের প্রস্তাব তাঁরা পেয়েছেন। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ বা পিপিপি মডেলে সেখানে ছোট ও মাঝারি শিল্প তালুক গড়তে চান তাঁরা।
কী ধরনের শিল্প হবে সেখানে? যেহেতু এলাকাটি সমুদ্রতীরবর্তী, তাই নিগম জোর দিতে চাইছে পর্যটন ভিত্তিক শিল্পের উপরেই। কিন্তু শিল্প তালুকে উৎপাদন ভিত্তিক শিল্পের পরিবর্তে এ ধরনের উদ্যোগ কতটা যুক্তিযুক্ত? সব্যসাচীবাবুর দাবি, শিলিগুড়িতে নিগমের শিল্প তালুকেও হোটেল তৈরি হয়েছে। দাদনপাত্রেও তাই হোটেল ও পরিষেবা শিল্পে লগ্নিতে অসুবিধা নেই। বরং তাতে স্থানীয় ভাবে অনেক বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলেও দাবি তাঁদের। পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ওই এলাকায় ‘ওয়াটার স্পোর্টস’-এর পরিকাঠামোও গড়তে চান সব্যসাচীবাবু। এ ব্যাপারে তাঁর বিদেশ সফরের অভিজ্ঞতাকেও কাজে লাগাতে চান তিনি। সেখানে নতুন করে একটি নুনের কারখানা তৈরির ভাবনাও রয়েছে তাঁদের। প্রকল্প চূড়ান্ত হলে লগ্নিকারীদের আর্জি জানাবে নিগম।
বর্তমানে চালু শিল্প তালুকগুলিতেই পরিকাঠামোর অভাব প্রসঙ্গে সব্যসাচীবাবুর দাবি, পুরনো পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যবসা সম্প্রসারণও জরুরি। নতুন শিল্পকে জায়গা দিয়ে আয় বৃদ্ধির পথেই হাঁটতে চান তাঁরা। কারণ রাজ্যের পুরনো ঋণ শোধ করা ও সরকারকে ডিভিডেন্ড দেওয়াই নিগমের মূল লক্ষ্য। ১৯৭৫ সালের পরে রাজ্যকে আর ডিভিডেন্ড দেয়নি নিগম। দ্রুত তা চালু করতে এবং রাজ্যের ঋণ (২৯ কোটি টাকা) মেটাতে ব্যবসা সম্প্রসারণের পথে হাঁটতে চাইছেন তাঁরা। |