|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৪... |
|
পরিচিতি পরম রমণীয় |
বইপোকা |
আলংকারিক গদ্যরচনায় অতুলচন্দ্র গুপ্তের অসাধারণ পাণ্ডিত্য ছিল। না, পর্যবেক্ষণটি বইপোকার নহে, সাগরময় ঘোষ সম্পাদিত রম্যরচনা-সংকলন পরমরমণীয় (আনন্দ)-এর লেখক-পরিচিতি লেখকের। সাধারণত, অন্য উল্লেখ না-থাকিলে, ধরিয়া লইতে হয় লেখক-পরিচিতি সম্পাদকেরই লেখা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে নিয়মের ব্যতিক্রম করিতে ইচ্ছা হয়। কারণ অতুলচন্দ্র গুপ্তের গদ্য সম্পর্কে ‘আলংকারিক’ বিশেষণটি তাঁহার পক্ষে বসানো সম্ভবপর নহে। কাব্যজিজ্ঞাসা নামে কাব্যতত্ত্ব আলোচনার একটি গ্রন্থ আছে গুপ্ত মহাশয়ের এবং অদীক্ষিত পাঠক অলংকারশাস্ত্র আর কাব্যতত্ত্বকে গুলাইয়া ফেলেন এই দুইয়ে দুইয়েই বিপত্তিটি ঘটিয়াছে সন্দেহ করি। সাগরময় যে পরিচিতিটি লেখেন নাই সেই সন্দেহ পরিচিতি পড়িতে পড়িতে ক্রমে আরও ঘন হইল। রাজশেখর বসুর সুবিখ্যাত গল্পসংগ্রহ গড্ডলিকা পরিচিতিতে ‘গড্ডালিকা’, লীলা মজুমদারের বদ্যিনাথের বড়ি হইয়াছে ‘বদ্যিনাথের ষাঁড়’, শ্রীপান্থের মোহান্ত এলোকেশী সংবাদ ‘এলোকেশী মহান্ত’ ইত্যাদি ইত্যাদি। পরিচিতিটিতে এমত যাহা আছে তাহা যেমন হাস্যকর, যাহা নাই তাহাও মারাত্মক। যেমন, বহু লেখক সম্পর্কে ‘সবুজ পত্রের লেখক’ বলা হইলেও স্বয়ং প্রমথ চৌধুরী সম্পর্কে ‘সবুজ পত্র’-এর টিকিটি নাই। সুভো ঠাকুরের ‘জন্ম জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে’ বলিলেও সেই কালাপাহাড় ব্যক্তিত্বটির কোনও ইঙ্গিত নাই। এই আকালে সত্যই এই পরিচিতি ‘পরম রমণীয়’। যত হাসি তত লজ্জা। বাংলা রম্যরচনার এমন ধ্রুপদী সংকলনের লেখক-পরিচিতিটি বদলাইয়া অচিরে নব সংস্করণ প্রকাশ করিয়া লজ্জা নিবারণের ব্যবস্থা হউক, ইহাই আশা। |
|
|
|
|
|