|
|
|
|
|
|
|
নাটক সমালোচনা... |
|
জমিয়ে দিয়েছে চলমান অশরীরী |
দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের নাটকটি দেখে এসে লিখছেন মনসিজ মজুমদার |
কল্পায়ুর নাটক চলমান অশরীরী (রচনা: জ্যোতিষ্মান চট্টোপাধ্যায়, পরিচালনা: দেবেশ চট্টোপাধ্যায়) লঘু রঙ্গ ও গুরু ব্যঙ্গে দর্শককে মজিয়ে রাখে। রঙ্গ এক ভূতের ভবিষ্যৎ নিয়ে। ব্যঙ্গের লক্ষ্য মার্কিন পুঁজিবাদ, যা মুক্ত অর্থনীতির দুনিয়া-জোড়া বাজারে মাকড়সার মতো জাল বিছিয়েছে ব্যবসার। আর টাকার লোভে সে জালে ধরা পড়েছে আমাদের দেশের সাধারণ সৎ মানুষ। তাদের মৃত্যুতেও মুক্তি নেই। তাই লাশকাটা ঘরে যে যুবকের শবব্যবচ্ছেদ হয়, সে-ই ফ্যানটম (অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়) হয়ে ফিরে আসে। কারণ, এক মার্কিন কোম্পানির কাজ করতে গিয়ে মাসিক রোজগার যখন সুনিশ্চিত চল্লিশ হাজার তখনই অ্যাক্সিডেন্টে মৃত্যু হল তার। কিন্তু তার লোভের মৃত্যু হল না। সেই লোভে ধরা দিল সৎ কবিতাপ্রেমী লাশকাটা ডাক্তার (শঙ্কর চক্রবর্তী)। চলমান অশরীরীই মার্কিন পুঁজির মায়াজাল। |
|
পরিচালক প্রথমেই ডোমের লাশকাটা দৃশ্যে নাটকের মেজাজ বেঁধে দিয়েছেন। তবে সব চেয়ে সরস দৃশ্যগুলি অশরীরীকে নিয়ে। যে দৃশ্যেই তার জোরালো উপস্থিতি সে দৃশ্যই জমে যায়। বিশেষ করে ভূত ডাক্তারের বন্ধু বনে যাওয়ার আগে। যখন ডাক্তার ভয়ে সংশয়ে বিভ্রান্ত (যেমন বিদেশি পুঁজি সম্বন্ধে আমাদের প্রথম প্রতিক্রিয়া) আর অশরীরী (যেমন মার্কিন পুঁজিবাদ) স্মার্ট, দাপুটে সংলাপে আর আত্মবিশ্বাসে সোচ্চার। প্রেতসখার সাহায্যে ডাক্তারের ক্রমোন্নতির নাটক প্রেমে, বিবাহে, অর্থাগমে কৌতুকের আবহে তর তর করে এগোয়। কিন্তু তড়িঘড়ি শেষ হয় পরিণতি। যখন কবিতা, স্ত্রী বা চিকিৎসা নয়, ডাক্তারের কাছে টাকাই সর্বস্ব। কিন্তু রঙ্গ যে এ নাটকের মূল সুর নয়, তা মনে করিয়ে দেয় হিরণ মিত্রের মঞ্চ। মাকড়সার জালের মাঝ বরাবর একটি অতিকায় সাদা তিরচিহ্ন। মঞ্চের সব প্রহসন, লঘু রস ছাপিয়ে ওঠে ওই ক্ষুরধার তিরের সতর্কবাণী। |
|
|
|
|
|