কেশপুরে জখম ৫
এলেন ৪ নম্বর ব্লক সভাপতি, মারামারি থামছে না তৃণমূলে
ক বছরে চার-চার বার পাল্টানো হল তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। কিন্তু সংঘর্ষের পরিস্থিতি বদলাল না কেশপুরে। শেখ মহিউদ্দিনকে সরিয়ে তপন চক্রবর্তীকে ব্লক সভাপতি করার পরে নতুন করে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ শুরু হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের এই এলাকায়।
বৃহস্পতিবার রাতে ব্লক সভাপতি বদলের সিদ্ধান্ত নেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বদল হয়েছে ব্লক যুব-তৃণমূল সভাপতি পদেও। আলহাজউদ্দিনের পরিবর্তে নতুন যুব-সভাপতি হন শ্যামল আচার্য। শুক্রবার সকালে সে খবর জানাজানি হতেই কেশপুরের দোগাছিয়া গ্রামে শুরু হয় মারামারি। স্থানীয় সূত্রের দাবি, বিদায়ী দুই সভাপতির (মহিউদ্দিন এবং আলহাজউদ্দিন মামা-ভাগ্নে) অনুগামীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন কেশপুরের পুরনো তৃণমূল কর্মী নেপাল ঘোষ, গোলাম মোর্তাজাদের অনুগামীরা। ৫ জন আহত হন। আহতেরা নেপাল-গোষ্ঠীর লোক বলেই খবর।
সংঘর্ষে জখম মদুরুদ্দিন, মঞ্জুর খান, আজনুর মণ্ডল, হায়দার আলি ও দেওয়ান আলিকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় মঞ্জুরকে কলকাতায় সরানো হয়েছে। আজনুর, হায়দারদের অভিযোগ, “দোকানে চা খাচ্ছিলাম। হঠাৎ আলহাজউদ্দিন-মহিউদ্দিনের লোকজন টাঙ্গি, বল্লম নিয়ে আক্রমণ চালায়।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “কেন মারামারি হল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দলের সিদ্ধান্তেই ফের কেশপুরে দুই সভাপতিকে বদলানো হয়েছে।” কেন? জবাব দেননি দীনেনবাবু।
মেদিনীপুর মেডিক্যালে জখম তৃণমূলের মঞ্জুর খান। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ
এক সময়ে সিপিএম-তৃণমূল ‘দ্বৈরথে’ অস্থির থাকত কেশপুর। রাজ্যে ‘পরিবর্তনের’ পরে সেখানে বারবার উত্তেজনা ছড়াচ্ছে তৃণমূলের গোষ্ঠী-কোন্দলে। ‘দলাদলি’র জেরেই সম্প্রতি কেশপুর ছেড়েছিলেন নেপাল ঘোষের অনুগামীরা। মেদিনীপুর শহরে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সম্প্রতি তাঁদের অধিকাংশ এলাকায় ফিরেছেন। নেপাল ঘোষ, গোলাম মোর্তাজাদের অভিযোগ, “এ দিন শেখ মহিউদ্দিন, চিত্ত গরাই ও তপন চক্রবর্তীরা জোট বেঁধে হামলা চালান। আবার আমাদের লোকেদের ঘরছাড়া করার চক্রান্ত হচ্ছে।” আলহাজউদ্দিন যদিও বলেন, “তপনবাবু নতুন সভাপতি হতেই তাঁর অনুগামীরা পটকা ফাটিয়ে মিছিল করে। আমাদের কয়েকজনের গায়ে পটকা লাগে। তা নিয়ে বচসা বাধে।” তপনবাবুর বক্তব্য, “আমার কোনও গোষ্ঠী নেই। আমি দলের ব্লক সভাপতি। কেউ গোষ্ঠী তৈরির চেষ্টা করলে তা মানা হবে না। পুলিশকে সাফ জানিয়েছি, দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে।” প্রাক্তন ব্লক সভাপতি চিত্ত গরাই বলেন, “চা দোকানে বসে ঘনঘন সভাপতি বদল নিয়ে কয়েকজন আলোচনা করছিল। তখনই পরস্পরের সমালোচনা শুরু হয়। তা থেকেই বচসা ও মারামারি।”
চিত্তবাবু দলের পুরনো নেতা। রাজ্যে পালাবাদলের পরে তাঁকেই তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও তোলাবাজির অভিযোগ তোলেন দলের একাংশ। ছ’মাসের মধ্যেই তাঁকে সরিয়ে সভাপতি করা হয় আশিস প্রামাণিককে। তাঁর বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ ওঠে। এ বার মূলত সরব হন নেপাল-অনুগামীরা। মাত্র ২২ দিন আগে আশিসবাবুকে সরিয়ে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল শেখ মহিউদ্দিনকে। তার কিছু দিন আগে যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি করা হয় আলহাজউদ্দিনকে।
এ বার মামা-ভাগ্নের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাস’ চালানোর অভিযোগ ওঠে। ঘর ছাড়েন নেপাল-অনুগামী তৃণমূলের প্রায় পাঁচশো সমর্থক। তাঁদের দাবি, নেপালবাবুকে ব্লক সভাপতি করা হোক। এই দাবিতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের সঙ্গে তাঁরা দেখাও করেন। গোলাম মোর্তাজা বলেন, “মুকুলবাবু শান্তি ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন।” তার আগেই ফের অশান্তি দেখল কেশপুর।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.