ব্যাডমিন্টন থেকে টেনিস, দাপট তারুণ্যের
অলিম্পিক সেরাকে হারালেন সাইনার শহরের মেয়ে
সাইনা নেহওয়ালের উত্তরসূরি বোধহয় পেয়ে গেল ভারতীয় ব্যাডমিন্টন। এবং হায়দরাবাদ থেকেই।
পুসারলা বেঙ্কট সিধু। পি ভি সিধু নামেই যিনি ব্যাডমিন্টন মহলে অনেক বেশি পরিচিত।
আন্তর্জাতিক ভলিবলার বাবা-মায়ের ১৭ বছরের মেয়ে শুক্রবার যা কাণ্ড ঘটিয়েছেন, সেটা করতে পারলে সাইনাও হয়তো গর্বিত হতেন। চিনের মাটিতে চিনের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়নকে হারালেন সিধু। সেটাও যথেষ্ট বড় মঞ্চে। সুপার সিরিজের অন্তর্গত (টেনিসের গ্র্যান্ড স্ল্যামের সমান) চায়না মাস্টার্স কোয়ার্টার ফাইনালে পাঁচ ফুট দশ ইঞ্চির ভারতীয় কিশোরীর কাছে বশ্যতা মানেন লন্ডন অলিম্পিকের সোনাজয়ী তথা এ বারের অল ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন লি জুরুই। ১৯-২১, ২১-৯, ২১-১৬। জুরুই ১-১ গেম করে ফেলার পরে অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন চূড়ান্ত সেটে আর পিছন ফিরে তাকাবেন না সেটাই স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে প্রত্যাশিত। কিন্তু চিনা মহাতারকার টিনএজার ভারতীয় প্রতিপক্ষ নিজের স্নায়ুকে অসাধারণ নিয়ন্ত্রণে রেখে শেষ গেম জিতে নেন। অদম্য মনের জোরে।
পিভি সিধু
ভারতের প্রথম ব্যাডমিন্টন প্লেয়ার হিসেবে এ বছরই এশীয় জুনিয়র (অনূর্ধ্ব উনিশ) চ্যাম্পিয়ন হওয়া সিধুর জীবনের সেরা জয় অবশ্যই শুক্রবারেরটা। যার পরের মুহূর্তেই কোর্টের ধারে থাকা পুল্লেলা গোপীচন্দকে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন সিধু। গড়পরতা ভারতীয় মেয়েদের তুলনায় অনেকটাই লম্বা মেয়েটির ব্যাডমিন্টনের শুরু সাড়ে আট বছর বয়সে। সাইনার মতোই লালবাহাদুর স্টেডিয়ামে। সাইনার ‘গোপীস্যর’-ই এখন সিধুরও কোচ। গত মাসেই তিন জন একসঙ্গে হায়দরাবাদে সাততারা হোটেলে বিদেশি গাড়ি পুরস্কার পেয়েছিলেন। সেই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সচিন তেন্ডুলকরকে দেখা গিয়েছিল, সিধুর সঙ্গে আলাদা করে কথা বলতে। নিজের বক্তব্যেও সচিন বলেছিলেন, “দু’হাজার ষোলোয় রিও অলিম্পিকে ব্যাডমিন্টনে আমাদের দু’জন পদকের দাবিদার থাকবে। সাইনা তো আছেই, চার বছর পরে সিধুও অলিম্পিক থেকে পদক আনবে আশা করি।”
জহুরি ঠিকই জহর চিনেছিলেন। একইসঙ্গে দেশের জাতীয় জুনিয়র এবং সিনিয়র ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন সিধু এ বছর জুনিয়র এশীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি সিনিয়র সার্কিটে নিজের মাত্র দ্বিতীয় বছরেই উল্কার বেগে উত্থান ঘটিয়েছেন। চারটে (মালদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়া, সুইস এবং মুম্বইয়ে টাটা ওপেন) চ্যালেঞ্জ ট্যুর খেতাব। ডাচ ওপেনে রানার্স। বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ১৫১ থেকে এক লাফে ২৪-এ উঠে এসেছেন। লক্ষ্য এ বছরের শেষে প্রথম ১৫-এ ঢোকা। এ দিনের পর স্বভাবতই সেই লক্ষ্যে অনেকটাই এগিয়ে যাবেন সন্দেহ নেই।
বাবা পি ভি রামানা ভলিবলের অর্জুন। মা বিজয়াও ভারতের জাতীয় ভলিবল দলের প্রাক্তন সদস্যা। আক্ষরিক অর্থে খেলাধুলো পরিবারের মেয়ে সিধু বলেছেন, “গোপীস্যরের অ্যাকাডেমিতে সকালে সাইনার সঙ্গেই স্ট্রোক প্র্যাক্টিস করি। দুপুরে আমরা ফিটনেস ট্রেনিংও করি একসঙ্গেই। আমি কোনও টুর্নামেন্ট খেলে ফিরলে সাইনা সরেজমিনে সব খোঁজখবর নেয়।” সাইনা হওয়াই তাঁর লক্ষ্য জানিয়ে সিধুর আত্মবিশ্বাসী মন্তব্য, “আমি পৃথিবীর এক নম্বর ব্যাডমিন্টন প্লেয়ার হতে চাই।” যে কথা সাইনাও নিজের সম্পর্কে বলতে পারেননি।

সিধুর জন্য গর্ব হচ্ছে। বিশ্রাম নিতে চায়না মাস্টার্সে না খেলতে যাওয়ার জন্য এখন আক্ষেপ হচ্ছে। হয়তো ফাইনালটা আমাদের দু’জনের মধ্যেই হত! সিধু বিশ্বমানের প্লেয়ার। স্ম্যাশ, ডিফেন্স, স্পিড, ফিটনেস, সব বিশ্বমানের। বয়সটাও ওর পক্ষে। বড় চোট না পেলে পরের অলিম্পিকে সিধু পদকের দাবিদার।
সাইনা নেহওয়াল




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.