ছেলেকে ‘বড়’ করতেই আশিতে আসা খুনে তিমির
ছেলেকে এ ভাবে ‘জলে’ ফেলে দেওয়া যায় নাকি! দুনিয়ার হালচাল ভাল করে বুঝিয়ে দিতে হবে তো।
এ আর নতুন কথা কী? মনুষ্য সমাজের এটাই তো স্বাভাবিক রীতিনীতি। তবে তফাতটা হল এই যে, এ দুনিয়া মোটেই ইট-কাঠ-পাথরের নয়। একেবারে অগাধ সমুদ্র। আর যার কথা বলা হচ্ছে, সে হল ‘খুনে তিমি’। পুত্রসন্তানের জন্যই যার দীর্ঘ জীবন।
বহু বছরের গবেষণার পরে অন্তত এমনটাই দাবি করছেন ব্রিটেনের একজিটার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। ‘সায়েন্স’ পত্রিকায় তাঁদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে।
এক বারই মা হয় তিমি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এক সন্তানের জননী হলেও, মাঝে মাঝে তার যমজ ছেলেমেয়ের খবরও পাওয়া যায়। তিরিশের কোঠায় পৌঁছে মা হয় সে। কিন্তু সন্তানের জন্মের পরেও আরও ৫০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে ‘খুনে তিমি’। এখানেই খটকা লাগে ব্রিটেনের। মানুষ ছাড়া তো জীবজগতে আর কোনও প্রাণীর জীবনে এমন নজির দেখা যায় না! তা হলে?
মুখ্য গবেষক ড্যারেন ক্রফ্ট বলেন, “মেনোপজের পরে খুনে তিমির এই দীর্ঘ জীবন, প্রকৃতির এক জটিল রহস্য।” সন্তানধারণ ক্ষমতা চলে যাওয়ার পর মানুষ ছাড়া জীবজগতে বেশির ভাগ প্রাণীরই মৃত্যু হয়। সন্তান প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরে একমাত্র শিম্পাঞ্জি ও হাতিদের কিছু প্রজাতির সংসারে মায়েরা সন্তানের দেখাশোনা করে। বাকি সব প্রাণীই প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর নিজের ‘সংসার’ নিজেই সামলায়।
ছেলের প্রতি খুনে তিমি কিন্তু আরও স্নেহশীল। তাদের এই দীর্ঘ জীবন যে শুধুমাত্র ছেলের জন্যই। ক্রফ্ট জানান, ছেলেও কখনও মায়ের কাছছাড়া হয় না। সব সময় সঙ্গে সঙ্গে থাকে। শুধু প্রতিদিনের বেঁচে থাকার লড়াইটাই নয়, বংশ বিস্তারের খুঁটিনাটিও মা-ই হাতে ধরে শিখিয়ে দেয়। সন্তানের সঙ্গে মা তিমির প্রজননের ফলে পরের প্রজন্মে জিন প্রবাহ বেশি পরিমাণে হয়। তুলনায় মেয়েরা নিজেদের পরিবারের কারও সঙ্গে প্রজনন করে অনেক কম। ফলে মেয়েরা যে সন্তানের জন্ম দেয়, তাদের প্রকৃতির সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা অনেক বেশি হয়।
ছেলের প্রতি এই অগাধ অপত্য-স্নেহের খবর কী ভাবে জানলেন বিজ্ঞানীরা? ক্রফ্ট জানান, প্রায় ৩৬ বছর ধরে খুনে তিমির জন্ম-মৃত্যু নিয়ে গবেষণা করেন তাঁরা। দেখেন, প্রজননে সক্ষম কোন খুনে তিমির তিরিশ পেরনোর পরেও যদি তার মায়ের মৃত্যু হয়, দেখা যায় বছর খানেকের মধ্যেই ছেলেরও মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু বেঁচে থাকার জন্য মেয়ে তিমি মায়ের উপর এতটাও নির্ভরশীল নয়।
‘দারুণ খবর’, রীতিমতো উত্তেজিত ড্যারেন ক্রফ্ট। তবে তাঁর কথায়, তিমির জীবন-রহস্যের এখনও অনেকটাই জানা বাকি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.