আপনার সাহায্যে...
ফেসবুক সম্পর্ক ভাঙছে বেশি

বন্ধুত্বের সংজ্ঞা পাল্টে দিয়েছে ফেসবুক। কত মানুষের সঙ্গে আলাপ পরিচয় হচ্ছে।
ডিভোর্সও হচ্ছে। এই তো সে দিন আমার এক রোগী তার ফেসবুক বন্ধুর সঙ্গে পালিয়ে গেল ইলাহাবাদ। স্বামী জানে সব।

জেনে কি ডিভোর্স করে দিল?
এখনও করেনি। আমাকে ফোন করে বলল, ও যাচ্ছে যাক। কিন্তু ওষুধগুলো যেন ঠিক করে খায়।

কীসের ওষুধ?
ওই একটু ডিপ্রেশন আছে।

তাহলে কি ডিপ্রেশনের জন্য পালিয়ে গেল?
আরে না। ডিপ্রেশন তো সারার মুখে।

তবে?
আসল সম্পর্কের থেকে সাজানো সম্পর্ককে বেশি গুরুত্ব দিল আর কী।

তা কেন? হয়তো সে জীবনের নতুন মানে খুঁজে পেয়েছে!
দু’ একটা ক্ষেত্রে হয়তো হয়। তবে অধিকাংশ সময়ই ফেসবুক গড়ার চেয়ে ভাঙছে বেশি।

কী রকম?
আমার এক রোগী যেমন ফেসবুকে জীবনের প্রথম প্রেমিককে খুঁজে পায়। তাদের মধ্যে সম্পর্ক এতটাই গভীর হয় যে দু’ বাড়িতে জানাজানি হয়। ডিভোর্স হয়। ওরা বিয়েও করে। কিন্তু বিয়ে ছ’ মাসের বেশি টেকে না।

সে তো নাই টিকতে পারে।
তা ঠিক। তবে এ ক্ষেত্রে গোলমালটা বেশি পেকেছে সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের জন্য।
কী রকম?
স্বামীর সঙ্গে খিটিরমিটির হলেই মেয়েটি ওই ছেলেটিকে খুঁজতে বসত। খুঁজে পেয়ে আনন্দে মাতোয়ারা। দিন-রাত ওর সঙ্গে চ্যাট করত। তারপর দেখা করল। সম্পর্ক গভীর হল।

তার জন্য ফেসবুক দায়ী কেন?
দায়ী এ জন্যই যে ফেসবুক অনেকটা সব পেয়েছির দেশের মতো হয়ে গেছে। এখানে পুরোনো প্রেমিককে খুঁজে পাওয়া যায়। উঠতে বসতে খেতে শুতে প্রশংসার বন্যা বয়। দেখতে শুনতে ভাল হলে ‘আমি ভাত খেয়েছি’ স্ট্যাটাসেও ১০০ টা লাইক পড়ে।

তাতে ক্ষতি কী?
ক্ষতি আছে। দৃঢ়তা না থাকলে মানুষ এতে ভেসে যায়। এই সব স্তুতিকে সত্যি বলে ভাবতে শুরু করে।

কিন্তু তার সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে ভাঙার কী সম্পর্ক?
সম্পর্কটা তো তৈরিই হয়েছিল অবাস্তব চাহিদার উপর ভিত্তি করে। ছেলেবেলার প্রেম নিয়ে অনেকেরই নস্ট্যালজিয়া থাকে। ২০ বছর বাদে সেই সম্পর্ক যখন ফেসবুকের মাধ্যমে নতুন করে গড়ে উঠল, দুটো মানুষই যে পুরো পাল্টে গেছে সেই বাস্তববোধটা তো ছিল না তাদের।

আপনি এই যে স্তুতির কথা বলছেন, সবাই কী আর সেটা পায়?
পায় না তো। আপনার ছবিতে ২০০ জন লাইক দিল। আর আমাকে দিল দু’ জন। অনেকেই ভেঙে পড়ে। কত বন্ধুত্বের যে বিচ্ছেদ হয় ঠিক নেই।

কী মুশকিল!
আমার এক রোগী তার স্ত্রীর পাসওয়ার্ড হ্যাক করে ফেসবুকে ঢুকে দেখে সে অনেক ছেলের সঙ্গেই ফ্লার্ট করে। তারপর তো খুনোখুনি, মারামারি অবস্থা।

একাকিত্বও কি একটা কারণ?
নানা কারণ আছে। তার মধ্যে একাকিত্বও অবশ্যই একটা কারণ।
উল্লাস
আনন্দে থাকুন সুস্থ থাকুন
নানা কারণ বলতে?
কেউ হয়তো একে ফ্লার্ট করার জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছে। কেউ হতাশা ভুলতে ফেসবুক করছে। কারও নিজেকে জাহির করার মাধ্যম সোস্যাল সাইট। বিবাহিত জীবনের টানাপোড়েনে ব্যতিব্যস্ত মানুষেরও আশ্রয়। তবে কারণ যাই হোক, সব ভুলে এতে মেতে গেলে সমস্যা আরও বাড়ে।

দিন-রাত এ সব করলে কাজকর্মেরও তো ক্ষতি।
বিরাট ক্ষতি।

বহু অফিসে তো সোস্যাল সাইট সব ব্লক করে রাখে।
তা ছাড়া আর কী রাস্তা?

রাস্তা নেই বলছেন?
আছে। নিজে বুঝে দেখা। এর জন্য কাজকর্মের ক্ষতি হচ্ছে, সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে, অথচ তার বিনিময়ে অন্তঃসারশূন্য একটা বিষয়ে ডুবে সময় নষ্ট করা ছাড়া আর কোনও লাভ হচ্ছে না। কাজেই তাকে ভাবতে হবে কোন সমস্যা ভুলতে সে এতে আশ্রয় নিয়েছে। প্রয়োজনে মনোবিদের সাহায্যও নিতে হবে।

যোগাযোগ- ৯০৫১৩৫৬৮৫৪

সাক্ষাৎকার: সুজাতা মুখোপাধ্যায়


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.