দেশের চার মহানগর থেকে জালনোট পাচারকারীরা তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাত। সেই টাকা এটিএমের মাধ্যমে তুলে ২০ শতাংশ কমিশনের বিনিময়ে জালনোট পাচারকারীদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দিতেন। এমনই একজন জালনোট কারবারীদের ‘এজেন্ট’, পেশায় পার্শ্বশিক্ষককে বুধবার রাতে দিল্লি পুলিশ মালদহের ইংরেজবাজার থানার মহদিপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম আলামত মোল্লা। তিনি মহদিপুরের একটি মাদ্রাসার পার্শ্বশিক্ষক। বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশ ধৃতকে মালদহের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে পেশ করে তিনদিনের ট্রানজিট রিমান্ডে দিল্লি নিয়ে গিয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “জালনোটের কারবারীদের ওই এজেন্টকে ধরার জন্য দিল্লি পুলিশ আমাদের সাহায্য চেয়েছিল। তার পরেই দিল্লি পুলিশ আলামত মোল্লাকে গ্রেফতার করেছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৬ সেপ্টেম্বর দিল্লির এক বাজারে হানা দিয়ে দিল্লির ক্রাইম ব্রাঞ্চের পুলিশ ৪ মহিলা-সহ ৬ জনকে আটক করে। তাঁদের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৯২ হাজার ৫০০ টাকার জালনোট উদ্ধার করে। দিল্লি ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসার সুরেন্দ্রর সিংহ দালাল জানান, দিল্লিতে ধৃত ছয়জনকে জেরা করে জানা যায়, দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই ও কলকাতায় তাদের কিছু লোক রয়েছে। ১০০ টাকার বাজার করে ছেলেমেয়েরা দোকানিকে ৫০০ বা হাজার টাকার জাল নোট দেয়। জালনোটের বিনিময়ে আসল টাকা ফেরত নিয়ে সেই টাকা জালনোটের দালালদের ফেরৎ দেয়। এর পর দালালেরা দেশের চারটি মহানগরের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে মালদহের আলামত মোল্লার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিচ্ছে। তার পরে ধৃত অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে ২০ শতাংশ কমিশনে টাকা কারবারীদের বাড়িতে পৌঁছে দিত। পুলিশ সূত্রের খবর, দিল্লি পুলিশের দলটি মালদহের ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ধৃতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেছে। গত ছয় মাসে ১০০ বার এটিএম ব্যবহার করে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৯ লক্ষ টাকা তোলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন শহর থেকে ওই অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়ত। ধৃত আলামত মোল্লার দাদা ভাদু মোল্লা, ইফরাজুল মোল্লারা বলেন, “ভাই নির্দোষ। গ্রামের যাঁরা দিল্লি, মুম্বইয়ে কাজ করেন তাঁরাই ভাইয়ের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাত। ভাই পাঠানো টাকা তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দিত। ও জালনোটের ব্যবসায় জড়িত নয়।” |