হেপাটাইটিস-সি পরীক্ষার ‘কিট’ নেই। ফলে, রক্ত পরীক্ষা বন্ধ। এই কারণ দেখিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক বন্ধ করে দেওয়া হল। এ দিন ব্লাড ব্যাঙ্কে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিও ঝুলিয়ে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে, সমস্যায় পড়েন বহু রোগী ও তাঁদের আত্মীয়। রক্ত নিতে এসে অনেককে ফিরে যেতে হয়। অনেককে তা জোগাড় করতে যেতে হয় বর্ধমান মেডিক্যালে।
অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্লাড ব্যাঙ্ক বন্ধের বিজ্ঞপ্তি ঝোলানো হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শুক্রবারই সমস্যা মিটে যেতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। হাসপাতালের সুপার নির্মাল্য রায় বলেন, “ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত মজুত রয়েছে। কিন্তু হেপাটাইটিস-সি পরীক্ষার এলাইজা কিট না থাকায় রক্ত পরীক্ষা করা যাচ্ছে না। সমস্যার কথা জেলা স্বাস্থ্য দফতরে জানিয়েছি। স্বাস্থ্য দফতর জরুরি ভিত্তিতে বাজার থেকে ওই কিট কিনতে বলেছে। সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। আশা করছি, শুক্রবার সমস্যা মিটে যাবে।”
হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তণিমা মণ্ডল বলেন, “আরামবাগ হাসপাতালের সুপারকে বলেছি, বাইরে থেকে ওই কিট কিনে আপাতত কাজ চালাতে। সমস্যার কথা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়েছে।”
হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবারই ওই কিট শেষ হয়ে যায়। সে দিনই শেষ বার রক্ত পরীক্ষা হয়। সমস্যা শুরু হয় বুধবার থেকেই। বর্তমানে ওই ব্লাড ব্যাঙ্কে পরীক্ষা ছাড়াই ২৬৫ ইউনিট রক্ত পড়ে রয়েছে। শনিবারের মধ্যে আরও তিনটি রক্তদান শিবির থেকে ২৭০ ইউনিট রক্ত আসার কথা। রোগীদের দেওয়ার আগে সংগৃহীত রক্তের পাঁচটি পরীক্ষা আবশ্যিক হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, ভিডিআরএল (যৌন রোগ), ম্যালেরিয়া এবং এইচআইভি। হেপাটাইটিস-সি ছাড়া বাকি পরীক্ষার ‘কিট’ অবশ্য মজুত রয়েছে। কিন্তু পাঁচটি পরীক্ষাই এক সঙ্গে করার নিয়ম। কিন্তু ‘হেপাটাইটিস-সি এলাইজা কিট’ না থাকায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
হাসপাতালের প্রয়োজন ছাড়াও ওই ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে প্রতিদিন গড়ে ৫০ ইউনিট রক্ত লাগে। তার মধ্যে ১৫-২০ জন থ্যালাসেমিয়া রোগী। এই ব্লাড ব্যাঙ্কের উপরে স্থানীয় কিছু নার্সিংহোম ছাড়াও তারকেশ্বর, হাওড়া, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কিছু নার্সিংহোম নির্ভরশীল। |