|
|
|
|
মাসভর হদিস নেই দুই বন্ধুর |
কৌশিক চৌধুরী • শিলিগুড়ি |
৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই বন্ধুর বাইক নিয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ফুলবাড়িতে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। এদের একজন মোবাইলের দোকান মালিক এবং অপরজন বাড়ি রং, কাঠের পালিসের কাজ করেন। এক মাস ধরে নিখোঁজ ওই দুই যুবকের খোঁজে পুলিশের পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দারাও ভিন রাজ্য-সহ বিভিন্ন এলাকায় খোঁজখবর শুরু করেছেন। কিন্তু মেলেনি দুই বন্ধুর খোঁজ। কোনও এলাকা থেকে মেলেনি বাইকটির হদিসও। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ৩১-ডি জাতীয় সড়কের ধারে ফুলবাড়ি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের এনজেপি ফাঁড়ির ‘মার্ডার’ মোড় এলাকায় মাস খানেক আগের ঘটনা। পুলিশ সূত্রের খবর, ৩ অগস্ট সন্ধ্যায় মোবাইলে ফোন পেয়ে বাইক নিয়ে শিলিগুড়ির দুমাইল এলাকার একটি পানশালায় যাওয়ার কথা বলে নিখোঁজ হয় মোবাইলের দোকানের মালিক সমীর মল্লিক। পরের দু’দিন বাড়ি না ফিরলেও মোবাইলে সমীরের সঙ্গে বাড়ির লোকজনের যোগাযোগ ছিল। ‘বড় ঝামেলায়’ পড়ে যাওয়ায় বাড়ি ফিরতে পারছে না বলেও জানান সমীর। তার দু’দিন পরে শান্তনু ব্রহ্ম নামের যুবক কাজে যাওয়ার কথা বলে ৫ অগস্ট বাড়ি থেকে বার হন। তাঁরও আর খোঁজ মেলেনি। কংগ্রেসের ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি সাংগঠনিক ব্লকের সভাপতি দেবাশিস প্রামাণিক বলেন, “এলাকার অনেক যুবক ভিনরাজ্যে কাজের জন্য যাতায়াত করে। দুই জনের ঘটনাটি ‘অন্যরকম’ বলেই মনে হচ্ছে। পুলিশ বিষয়টি দেখছে। আমরা খোঁজ করছি।” পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজদের মোবাইল বন্ধ রয়েছে। শিলিগুড়ির ডিসি (সদর) ওজি পাল বলেন, “বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত চলছে।” ফুলবাড়ির পূর্ব ধনতলার মার্ডার মোড় এলাকার বাসিন্দা সমীরের বাবা নরেশবাবু কয়েক বছর আগে মারা যান। তার পর আর পড়াশুনো এগোয়নি। বাবা’র ব্যাটারির দোকানের কিছু অংশ ভাড়া দিয়ে অন্য অংশে মোবাইলের দোকান খোলে সমীর। দোকানের পিছনেই নিজেদের বাড়ি। দিদি পায়েলের বিয়ে হয়েছে। বাড়িতে লোক বলতে মা রিঙ্কুদেবী। নিত্যনতুন বাইকের নেশা ছাড়াও বেশ কিছু বন্ধুবান্ধব ছিল সমীরের। ঘটনার দিন বাইকটি ‘সার্ভিসিং’ করে বিকালে আরেক বন্ধু গোবিন্দ দত্তকে নিয়ে বাড়ি ফেরে। গোবিন্দ বলেন, “আমার সামনেই ওই দিন বিকালে শিলিগুড়ি একটি পানশালায় যাবে বলে টেলিফোন কারও সঙ্গে কথা বলেছিল। তার পর আর খোঁজ নেই।” রিঙ্কুদেবী বলেন, “একমাত্র ছেলের কী হল ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছি না।” আর সমীরের খুড়তুতো দাদা সঞ্জয় বলেন, “বাইক-সহ দুই যুবককে ঠাকুরগঞ্জ পুলিশ ধরেছে খবর পেয়ে বিহারেও যাই। কিন্তু ওঁরা ছিল না। এখন পুলিশই ভরসা।” সমীরের বন্ধু নিখোঁজ শান্তনু’রও বাড়ি এলাকার পশ্চিম ধনতলায়। বাবা দেবু ব্রহ্ম বাড়ির সামনে ছোট মুদির দোকান করে সংসার চালান। শান্তনু বাড়ি থেকে যাওয়ার আগে ১০০ টাকাও নিয়ে যান। বিবাহিত শান্তনুর স্ত্রী পৌলমী ন’মাসের গর্ভবতী। মা শিখাদেবী রাতদিন চোখের পাতা এক করতে পারছেন না। দেবুবাবু বলেন, “কাজে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরোল। আর ফিরে এল না। কী করব কিছুই বুঝতে পারছি না।” |
|
|
|
|
|