ওসি’কে অপসারণে বিতর্ক পুলিশমহলে
র্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে এনজেপি ফাঁড়ির ওসি বাসুদেব সরকারকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে পুলিশ মহলেই বিতর্ক। বুধবার প্রায় মাঝরাতে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার ওই সিদ্ধান্ত জানিয়ে বাসুদেববাবুকে পুলিশ লাইনে সরিয়ে দেন। কিন্তু, কেএলও জঙ্গি দমনে সাহসিকতার জন্য রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত ওসি বাসুদেববাবুকে এভাবে সরানোর সিদ্ধান্ত ঠিক কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অফিসারদের একাংশ। পক্ষান্তরে, পুলিশ কমিশনারের যুক্তি, “এনজেপি এলাকায় চোরাই তেলের কারবারের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে বলা হলেও তা সঠিক ভাবে ওসি পালন করেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। তেলের চোরাকারবারের জন্য ওই এলাকায় বড় আগুন লাগার আশঙ্কা ছিল। তাই বাসুদেববাবুকে সরানো হয়েছে।” পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত বুধবার রাত ৮টা নাগাদ। ওই সময়ে এনজেপি ফাঁড়ির অদূরে ইন্ডিয়ান অয়েলেরে ডিপোর সামনে চোরাই তেল উদ্ধার অভিযান শুরু করে দুর্নীতিদমন শাখা। ডিএসপি, ভক্তিনগরের ওসি-সহ কয়েকজন পদস্থ অফিসারের নেতৃত্বে একটি ট্যাঙ্কার বাজেয়াপ্ত হয়। ওই সময় বাসুদেববাবু ফাঁড়িতে ছিলেন। পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, ট্যাঙ্কারটি বাজেয়াপ্ত করার পরে সেটিতে দাহ্য তরল থাকায় তা থানায় নিয়ে যাওয়া হবে না বলে প্রথমে ঠিক হয়। ট্যাঙ্কারটি কারও জিম্মায় রাখা হবে বলেও অফিসাররা সিদ্ধান্ত নেন। এর পরে সেটি জিম্মা নেওয়ার জন্য তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের দার্জিলিং জেলার কোর কমিটির সদস্য উত্তরবঙ্গ ট্যাঙ্কারস অ্যাসোসিয়শনের সম্পাদক বিজন নন্দীর সাহায্য চাওয়া হয়। বিজনবাবুর ভাই জয়দীপ ওই এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর। ঘটনার ঘণ্টাখানেক পরেই বাসুদেববাবুকে পুলিশ লাইনে সরানোর নির্দেশ দেন কমিশনার। পুলিশ অফিসারদের একাংশের সন্দেহ, বিজনবাবুকে ট্যাঙ্কারের জিম্মা দেওয়ার জেরেই বাসুদেববাবুকে সরানো হয়। সে ক্ষেত্রে, উপস্থিত অন্য অফিসারদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না সেই প্রশ্নে পুলিশের ওই মহলে জল্পনা চলছে। বিজনবাবু জানান, বুধবার রাতে একজন ডিএসপি, ভক্তিনগর থানার ওসি-সহ পুলিশের অন্তত ২০ জন অফিসার-কর্মীর সামনে তাঁকে জিম্মা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। বিজনবাবুর দাবি, “আমি ওই ট্যাঙ্কারের মালিক নই। তবু অনেক পুলিশ অফিসার বার বার অনুরোধ করায় আমি ইন্ডিয়ান অয়েলের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিই। পরে এনজেপি ফাঁড়ির ওসিকে সরানোর কথা শুনেছি। কেন তা হল পুলিশ কর্তারাই বলতে পারবেন।” বিজনবাবুর ভাই জয়দীপবাবু বলেছেন, “চোরাই তেলের কারবারের অভিযোগ নতুন নয়। পুলিশ মাঝেমধ্যে অভিযানে নামে। ফের অজ্ঞাত কারণে বন্ধ করে দেয়। দেখা যাক এবার কী হয়!” পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, ‘সাহসী ও দৃঢ়চেতা অফিসার’ হিসেবে বাসুদেববাবু পরিচিত। কেএলও-র আন্দোলনের সময় বাসুদেববাবুর লড়াকু মনোভাবের জন্য ২০০৫ সালের ২৬ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পান। ২০০৩-এ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ‘শৌর্যপদক’ ও পান। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি শিলিগুড়ি থানা এলাকায় লাগাতার চুরি-ছিনতাইয় হলেও এনজেপি এলাকায় তেমন বড় মাপের ঘটনা ঘটেনি। বরং হোটেলে দেহব্যবসা, বেআইনি ভাবে অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে লাগাতার তল্লাশিতে হোটেল ব্যবসায়ীদের তরফে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। একটি হোটেলে খুনের ঘটনা ঘটার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সিকিমে গিয়ে অপরাধীকে ধরেছেন বাসুদেববাবু। তাই তাঁকে সরানোর প্রকৃত প্রেক্ষাপট কী এবং অন্য যে সব থানায় পরপর অপরাধ হলেও কিনারা হচ্ছে না সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এই প্রশ্নেই পুলিশ মহলে চলছে নানা আলোচনা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.