|
|
|
|
আইনজীবীকে থানায় ডেকে বিপাকে পুলিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার ও শিলিগুড়ি |
প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার একটি ছিনতাইয়ের মামলায় কোচবিহারের যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিককে চিঠি দিয়ে থানায় ডেকে পাঠিয়েছিল ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিশ। অভিজিৎবাবু পেশায় আইনজীবী। ওই ছিনতাইয়ের ঘটনায় ধৃত দুই ব্যক্তি তাঁর মক্কেল। সেই সূত্রেই তাঁকে চিঠি দিয়ে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল। আদালত সূত্রের খবর, এই ঘটনার পরে সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারকে ভর্ৎসনা করেছে আদালত। দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার কুনাল অগ্রবাল বলেন, “বিষয়টি বিচারাধীন। এই মুহূর্তে মন্তব্য করব না। বিশদে খোঁজ নিয়ে যা বলার বলব।” ফাঁসিদেওয়া থানার ওসি কিংবা তদন্তকারী অফিসারও কোনও মন্তব্য করতে চাননি। দু’জনেই জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ মেনে চলবেন। অভিজিৎবাবু বলেন, “এ ভাবে কোনও আইনজীবীকে চিঠি দিয়ে ডেকে পাঠানো আইন বিরুদ্ধ। আদালত পুলিশকে ভর্ৎসনা করেছে।”
পুলিশের দাবি, মামলায় যে ক’জন ধরা পড়েছেন, তাঁদের এক জন জেরার সময়ে অভিজিৎবাবুর নাম উল্লেখ করেন। সেই সুবাদেই প্রথমে অভিজিৎবাবুর বাড়িতে গিয়ে ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিশ তাঁকে মামলায় সাহায্য করতে আর্জি জানায়। কিন্তু, ধৃতদের মধ্যে দু’জন তাঁর মক্কেল বলে অভিজিৎবাবু দাবি করায় পুলিশ ফিরে যায়। পরে ফাঁসিদেওয়া থানা থেকে চিঠি পাঠিয়ে অভিজিৎবাবুকে মামলায় সাহায্য করতে থানায় উপস্থিত হওয়ার কথা বলা হয়। তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে অভিজিৎবাবু শিলিগুড়ি যে আদালতে ওই ছিনতাইয়ের মামলাটি বিচারাধীন, সেখানকার বিচারককে সব জানান।
শুক্রবার অভিজিৎবাবুর তরফে শিলিগুড়ির প্রবীণ আইনজীবী অরুণ সরকার বলেন, “গোটা ঘটনা শোনার পরে শিলিগুড়ি আদালতের বিচারক পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওসি এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করায় তাঁকে ভর্ৎসনা করেছে আদালত। পুলিশ সুপারকেও আদালত সতর্ক করেছে।” পুলিশের একাংশের তরফে সন্দেহ করা হয়েছে যে, ছিনতাই করা টাকা থেকেই অভিজিৎবাবুকে তাঁর ‘ফি’ দেওয়া হয়েছে। এমন সন্দেহে অভিজিৎবাবু ও অরুণবাবু দু’জনেই ক্ষুব্ধ। অরুণবাবুর বক্তব্য, “পেশার কারণে মক্কেলদের থেকে ফি নিতেই হয়। সেই টাকার উৎস নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে নাকি? কোন আইনে এমন লেখা রয়েছে? এটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অধিকার পুলিশের নেই। এতে আইনজীবীদের অধিকার খর্ব হয়। আমরা গোটা ঘটনায় উদ্বিগ্ন ও বিরক্ত। সে কথা আদালতকে জানিয়েছি।”
পুলিশ সূত্রের খবর, ২ সেপ্টেম্বর কোচবিহার থেকে বর্ধমানের যাওয়ার পথে বিধাননগর থেকে একটি অর্থ লগ্নিকারী সংস্থার কর্মীদের কাছ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। কয়েক দিন আগে ওই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে সংস্থার কোচবিহার শাখার ম্যানেজার-সহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ৩ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা উদ্ধার হয়। চারটি গাড়িও আটক করে পুলিশ। |
|
|
|
|
|