সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নতুন ‘বর্ডার আউটপোস্ট’ বা চৌকির জন্য অনুদান দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই চৌকি গড়ে তুলতে তারা জমি চায় রাজ্যের কাছে। বৃহস্পতিবার মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে এই নিয়ে আলোচনা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ। পরে তিনি বলেন, “নতুন চৌকির জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জমি চেয়েছি।”
সীমান্ত চৌকির জন্য জমি জোগাড় করা যে বেশ কঠিন, তা মেনে নিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের এক মুখপাত্র। তিনি বলেন, “উত্তর ২৪ পরগনা, মালদহ, দুই দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদে জমির সমস্যা আছে। অধিগ্রহণের কাজ ত্বরান্বিত করতে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” বিএসএফের সঙ্গে সঙ্গে সীমান্তে নজরদারির কাজে রাজ্য পুলিশও যাতে সহযোগিতা করতে পারে, সেই জন্য কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী ৪১টি থানাকে অর্থসাহায্য করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান জিতেন্দ্র। |
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে আধা-সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে আরও বেশি সাহায্য করতে কেন্দ্র বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। তবে এই কাজে সব রকম সাহায্য করতে কেন্দ্র যে প্রস্তুত, মুখ্যমন্ত্রীকে তা জানিয়েছি।” সামগ্রিক ভাবে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলেই মনে করেন তিনি। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্য, রাজ্যে গোয়েন্দাবাহিনীর তথ্য সংগ্রহের কাজে কিছুটা ঘাটতি আছে। সেটা আরও মজবুত করা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি। জিতেন্দ্র মনে করেন, অনগ্রসর ও গ্রামীণ এলাকাগুলিতে আধা-সামরিক বাহিনীর আরও বেশি শিবির থাকলে নাগরিকেরা উপকৃত হবেন।
এ রাজ্যে দু’দিনের সফরে তিনি প্রধানত সীমান্ত সংক্রান্ত সমস্যা সরেজমিনে বুঝতে এসেছিলেন বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সুন্দরবনে নদীতে ভাসমান সীমান্ত চৌকিতে রাত্রিবাসও করেন তিনি। জিতেন্দ্র বলেন, “সুন্দরবনের কাছে সীমান্ত প্রহরা খুবই জটিল। চোরাচালান, অনুপ্রবেশের সমস্যা রয়েছে। সীমান্তে বেড়া তৈরি থেকে শুরু করে নতুন চৌকি গড়ে তোলা পর্যন্ত সব কিছুতেই জটিলতা আছে।” কেন্দ্র বিভিন্ন সীমান্ত চৌকিতে নৈশ আলোর ব্যবস্থাও দ্রুত সম্পূর্ণ করতে চায় বলে জানান জিতেন্দ্র।
রাজ্যের কাছে এ দিন আরও একটি আর্জি জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য রাজ্যের যে-সব ক্যান্টিন রয়েছে, তাতে জিনিসপত্র কেনাকাটার খরচ থেকে ‘ভ্যাট’ বা যুক্তমূল্য কর তুলে নিলে ভাল হয়। এতে হয়তো দু’তিন কোটি টাকা রাজস্বের ক্ষতি হবে। কিন্তু আধা-সামরিক বাহিনীর জওয়ানদের জন্য এটুকু করা উচিত।” ২০টি রাজ্য ইতিমধ্যেই ওই ক্যান্টিন থেকে ভ্যাট তুলে নিয়েছে বলে জানান তিনি। |