বাঁকুড়ায় থমকে থাকা দ্বারকেশ্বর-গন্ধেশ্বরী প্রকল্প দ্রুত রূপায়ণের নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে তৈরি করা হল সরকারি কমিটি। প্রকল্প রূপায়ণে কোন এলাকায় কতটা জমি প্রয়োজন তা খতিয়ে দেখে কমিটিকে ১২ অক্টোবরের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দিলেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার মহাকরণে বৈঠক করার পরে মানসবাবু এ কথা জানান। তিনি বলেন, “বাঁকুড়ার দ্বারকেশ্বর-গন্ধেশ্বরী-সহ জঙ্গলমহলের অনগ্রসর তিন জেলার তিনটি প্রকল্প দ্রুত রূপায়িত করা গেলে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় সহযোগিতা মিলবে।”
মহাকরণ সূত্রের খবর, বাঁকুড়ার প্রস্তাবিত প্রকল্পটির জন্য ২০৬ হেক্টর জমির প্রয়োজন। এর একটা বড় অংশ বন দফতরের। বন দফতরের জমি নিতে গেলে নিয়ম অনুযায়ী সম-পরিমাণ জমি বন দফতরকে হস্তান্তর করতে হয়। |
দ্বারকেশ্বর-গন্ধেশ্বরী প্রকল্প |
• কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র: ২০০৬-এর ১৪ সেপ্টেম্বর।
• জনশুনানি: ২০০৭-এর ২৬ জুন।
• টেন্ডারের শেষ দিন: ২০১২-র ৭ সেপ্টেম্বর।
• প্রকল্প ব্যয়: ২০০৯-এর ১৫৪৭.৫৭৬ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৮০০ কোটি টাকা।
• উপকৃত অঞ্চল: বাঁকুড়া ১ ও ২, ছাতনা, ওন্দা, পাত্রসায়র, বিষ্ণুপুর, গঙ্গাজলঘাটি এই সাত ব্লক। |
|
মানসবাবু বলেন, “এ ব্যাপারে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন দ্রুত সব রকম ব্যবস্থা নেওয়ার কথা দিয়েছে। ওই জেলায় সব জমি না পেলে পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পুরুলিয়া জেলাতেও জমি খোঁজা হবে।” তিনি জানান, প্রকল্পটি শেষ হলে ৩৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি খরিফ এবং ১৪ হাজার ২০০ হেক্টর জমি রবিচাষ করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, “যাঁরা উপকৃত হবেন, তাঁদের ৪২ শতাংশ তফসিলি জাতিভুক্ত।”
প্রকল্পে জমি বরাদ্দের জন্য সেচ-দফতরের ডিজি-র নেতৃত্বে যে কমিটি তৈরি হয়েছে, তার সদস্য সচিব হচ্ছেন বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক। সেচমন্ত্রী বলেন, “প্রকল্পটি হলে একদিকে বর্ষায় প্লাবনের হাত থেকে বিস্তীর্ণ অঞ্চল রক্ষা পাবে। অন্য দিকে, ৬ লক্ষ লোক পানীয় জলের সঙ্কট থেকে মুক্তি পাবেন।” প্রকল্পটি নিয়ে তিনি নিজে তিন বার দিল্লিতে গিয়ে কথা বলেছেন বলে জানান সেচমন্ত্রী। তিনি বলেন, “সম্প্রতি এ রাজ্যের সেচ দফতরের পদস্থ আধিকারিকেরাও দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় সেচ দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে এসেছেন।”
প্রশাসন সূত্রে খবর, সুবর্ণরেখা ব্যারাজের জন্য ৬.৩৯ হেক্টর জমির প্রয়োজন। ২,০১২ কোটি টাকার এই প্রকল্পের প্রাথমিক সমীক্ষার কাজ অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে সেচমন্ত্রী বলেন, “প্রকল্পটি দ্রুত শেষ করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এবং প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেছি। এই প্রকল্পের জন্য পশ্চিম মেদিনীপুরের কয়েক হাজার জমিতে চাষের জল মিলবে।” তিনি আরও জানান, ২,০০০ কোটি টাকার ‘ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান’-এর জন্য খড়্গপুর আইআইটি-র ইঞ্জিনিয়ারদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। তাঁরা ওই এলাকার জলপ্রবাহ খতিয়ে দেখবেন। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা ওই প্রকল্পের সমীক্ষা করে গিয়েছেন। |